Cvoice24.com

নগর আ’লীগের ১৫ নেতার নেতৃত্বে থানাভিত্তিক সাংগঠনিক টিম, আছেন রেজাউল-বাবুলও

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:৫০, ১২ এপ্রিল ২০২২
নগর আ’লীগের ১৫ নেতার নেতৃত্বে থানাভিত্তিক সাংগঠনিক টিম, আছেন রেজাউল-বাবুলও

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড ও থানা কমিটি নিয়ে অভিযোগ-আপত্তির কথা শুনে বিরোধ মেটাতে নতুন করে গত ২২ মার্চ গঠন করা হয় চার সদস্যের সুপারভিশন কমিটি। সেই সুপারভিশন কমিটির দুই সদস্যসহ নগর আওয়ামী লীগের ১৫ সিনিয়র নেতার কাঁধে দায়িত্ব দিয়ে গঠন করা হয়েছে থানাভিত্তিক পাঁচ সদস্যের ১৫টি সাংগঠনিক টিম। একজন আহ্বায়ক ও চারজনকে সদস্য করে এ ১৫ থানার তদারক কমিটি গঠন করে দেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। চার সদস্যের সুপারভিশন কমিটিতে সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন বাবুল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী থাকলেও তাদেরকেও দুই থানার তদারক টিমের আহ্বায়ক করা হয়েছে। গত ৯ এপ্রিল থেকে থানা ভিত্তিক টিমের আহ্বায়ক ও সদস্যরা নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সেক্রেটারির স্বাক্ষরিত চিঠি পান।

নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সিভয়েসকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক টিমের নির্দেশনা মেনে নগর আওয়ামী লীগের ৭৫ নেতা থেকে পাঁচজন করে ১৫টি দলে ভাগ করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজন সদস্য ও একজন আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করবেন। এরমধ্যে আমাদের সঙ্গে সুপারভিশন কমিটিতে থাকা রেজাউল ভাই ও বাবুল ভাইকেও দুটি থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

নতুন বন্টন করা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা হলেন— কোতোয়ালী থানায় সিডিএ চেয়ারম্যান ও সহ-সভাপতি জহিরুল আলম দোভাষ, বাকলিয়া থানায় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, পাঁচলাইশ থানায় কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, চান্দগাঁও থানায় মেয়র ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী, চকবাজার থানায় সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, বাকলিয়া থানায় সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, ডবলমুরিং থানায় সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন বাচ্চু, হালিশহর থানায় সহ-সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, খুলশী থানায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, সদরঘাট থানায় বন ও পরিবেশ সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, ইপিজেড থানায় কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, আকবর শাহ থানায় সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, পাহাড়তলী থানায় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, বন্দর থানায় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাজী জহুর আহমেদ ও পতেঙ্গা থানায় সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী।

চকবাজার থানার সাংগঠনিক টিমের আহ্বায়ক নোমান আল মাহমুদ বলেন, ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত পাঁচ থানার নেতাদের সঙ্গে প্রথমে বৈঠক করব। তারপর থানা কমিটির সঙ্গে বসব। পর্যায়ক্রমে ওয়ার্ড ও ইউনিট কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে বসব। তাদের কোন অভিযোগ-আপত্তির বিষয়গুলো শুনে তা সমাধানের সুপারিশ করব।’ 

চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের ঢাকা ডেকে নিয়ে বিরোধ মিটিয়ে বির্তকমুক্ত তৃণমূলের কমিটি গড়তে ৬ নেতার একটি সুপারভিশন কমিটি গড়ে দেয় দলের সাংগঠনিক নেতারা। তারা দফায় দফায় বৈঠক করলেও এই হচ্ছে; এই হচ্ছে না— পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা গত ২২ মার্চ কেন্দ্রীয় টিম বর্ধিত সভায় বসেন নগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে। সেই ছয়জন থেকে তিন জনকে বাদ দিয়ে ইব্রাহিম হোসেন বাবুলকে যুক্ত করে নতুন করে অনিময়–অভিযোগ তদারকি করতে চার সদস্যের একটি সুপারভিশন কমিটিকে ১৫টি থানাভিত্তিক সাংগঠনিক গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আগের সুপারভিশন কমিটিতে জাতীয় পরিষদের সদস্য নইম উদ্দীন চৌধুরী, সিডিএ চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জহিরুল আলম দোভাষ ও নগর আওয়ামী লীগের সদস্য শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি থাকলেও এবার তাদের তিনজনকে বাদ রেখে বাকি চারজনকে ওই ১৫টি সাংগঠনিক টিম গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এসব সাংগঠনিক টিম পূর্ণাঙ্গ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল— নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন বাবুল ও সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীকে। তারা নগরের নেতাদের দায়িত্ব বন্টন করে দিয়ে এসব সাংগঠনিক টিম করে দেন। 

টিম গঠন বিষয়ে ওই সময়ে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছিলেন, ‘মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন বাবুল ও সিটি মেয়র রেজাউল করিম বসে সাংগঠনিক দলগুলো পূর্ণাঙ্গ করবেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া কমিটিতে থাকা বাকি ৬০ সদস্যকে চারজন করে ১৫টি দলে ভাগ করে দেওয়া হবে।’

সাংগঠনিক দলের কাজ সম্পর্কেও ধারণা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘এই সাংগঠনিক দল সংশ্লিষ্ট থানা, ওয়ার্ডের সভাপতি–সাধারণ সম্পাদক কিংবা আহ্বায়ক–যুগ্ম আহ্বায়কদের নিয়ে ইউনিট সম্মেলনে যেসব অভিযোগ এসেছে সেগুলো পর্যালোচনা করবে। তাঁরা কোনো অনিময় হলে সেগুলো আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবেন। যদি তাঁরা না পারেন তাহলে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি–সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে আমাদের কাছে পাঠাবেন। পরে আমরা আলোচনা করে সেগুলো সমাধান করব। সাংগঠনিক দলকে এক মাস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।’

এই সাংগঠনিক দলকে আরও একটি দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানিয়ে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘আমরা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ভালো মানুষদের আওয়ামী লীগে সম্পৃক্ত করতে চাই। নতুন প্রজন্মকে যুক্ত করতে চাই। যাদের বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই, যারা নাশকতা করেনি– তাদের আওয়ামী লীগে আনতে চাই। তবে কোনো আবর্জনা যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেটি সাংগঠনিক দল দেখবে।’

ঈদের পর চট্টগ্রাম মহানগরের ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন শেষে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতিক্রমে জুনেই প্রতীক্ষিত নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার কথাও জানিয়েছেন দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত এ নেতা।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়