Cvoice24.com

নৌকা ছাড়া গতি নেই—বললেন প্রধানমন্ত্রী

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮:১৪, ২৩ জুন ২০২২
নৌকা ছাড়া গতি নেই—বললেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের সেবা করে, জনগণের পাশে থাকে। আওয়ামী লীগ জনগণের পাশেই থাকবে। সেই আদর্শ আমাদের জাতির পিতা শিখিয়েছেন। সেই আদর্শ নিয়েই আওয়ামী লীগ চলবে। বাংলাদেশের মানুষ জানে— আওয়ামী লীগের মার্কা নৌকা। নৌকা ছাড়া গতি নাই বাংলাদেশে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সকালে আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রান্তে যুক্ত ছিলেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা। গণভবন প্রান্তে সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।

বিএনপির মনোনয়ন বাণিজ্যের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ইলেকশনে যখন তারা বাণিজ্য শুরু করে দিয়েছে, সেই ইলেকশনে ভোটই বা তারা পাবে কী? আর ইলেকশনে করবে কী, নেতৃত্বশূন্য দল ইলেকশন করলে জনগণ ভোট দেবে কী দেখে? ওই চোর, ঠগবাজ, এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী, খুনি, অস্ত্র চোরাকারবারি সাজাপ্রাপ্ত আসামি— তাদের এ দেশের জনগণ ভোট দেবে? তা তো এ দেশের জনগণ দেবে না। বাংলাদেশের মানুষ এব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন।

তিনি বলেন, তারা জানে আওয়ামী লীগ মানে নৌকা মার্কা। আর নৌকার যে প্রয়োজন, এবার বন্যাতেও নৌকার জন্য হাহাকার। নৌকা ছাড়া তো গতি নাই বাংলাদেশে, এটাও মনে রাখতে হবে।

আওয়ামী লীগ তার জন্মলগ্ম থেকে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে; আওয়ামী লীগ শুধু স্বাধীনতা এনে দেয়নি, স্বাধীনতার সুফল এখন মানুষের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে— এ কথাও বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছি এবং আমাদের লক্ষ্য জাতির পিতা বঙ্গন্ধু শেখ মুজিবের এই বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। সবার জন্য আমরা ভূমি দিয়েছি এবং ঘর তৈরি করে দিচ্ছি।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে গোটা বিশ্বের অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। এখন আবার করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেখা দিচ্ছে বলে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের আহ্বান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ভয়াবহতার কারণে যে ক্ষতি হচ্ছে তা শুধু আমাদের না, বিশ্বব্যাপী হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। তারপরও আমরা কিন্তু আমাদের অর্থনৈতিক গতি সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। বাজেটও আমরা দিয়েছি।

চলমান পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ফের সবার প্রতি কৃষিতে জোর দেওয়ার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি। বলেন, আমাদের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। প্রত্যেকের যেখানে যতটুকু জায়গা, সেখানে কিছু না কিছু উৎপাদন করতেই হবে।

দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান বন্যা পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে সবাইকে আগাম প্রস্তুতি রাখার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বন্যা কিন্তু এখানেই থামবে না। এই পানি আস্তে আস্তে যত নিচে নামতে থাকবে, ধীরে ধীরে একেকটি এলাকা প্লাবিত হবে। কাজেই আমাদের সেই প্রস্তুতিও রাখতে হবে। এটি প্রকৃতির সঙ্গে যুক্ত। এই পানি আস্তে আস্তে নেমে আসবে। এটা কিন্তু একেবারে ভাদ্র মাস পর্যন্ত চলবে। অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত চলতে পারে এই বন্যা। সেটি মাথায় রেখে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।

বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের সেবা করে, জনগণের সেবক। আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে থাকে এবং জনগণের পাশেই থাকবে। সেই আদর্শ আমাদের জাতির পিতা শিখিয়েছেন। সেই আদর্শ নিয়েই আওয়ামী লীগ চলবে।

সরকারে না থাকলেও আওয়ামী লীগই সবার আগে দুর্যোগে মানুষের পাশে ছুটে গেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সরকারে থাকি আর বিরোধী দলে থাকি— সবসময় দুর্যোগ-দুর্বিপাকে মানুষের পাশে আওয়ামী লীগই সবার আগে ছুটে গেছে। আওয়ামী লীগই সবাইকে সবসময় সহযোগিতা করে থাকে। যখন খালেদা জিয়া সরকার ছিল বা এরশাদ সরকার ছিল, তখনো আওয়ামী লীগ সবার আগে দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। মানুষকে সাহায্য করেছে। তাই আওয়ামী লীগ এখনো মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছে এবং মানুষের বিশ্বাসটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জয় বাংলা ফিরে এসেছে। ৭ মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনার প্রতিটি দিক, যা ওই জিয়া ক্ষমতা দখল করে নিষিদ্ধ করেছিল, একে একে আমরা সব ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমাদের এই দেশেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ইনশাল্লাহ এই দেশ উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে। সেখানে আওয়ামী লীগকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সেভাবেই সংগঠনকে গড়ে তোলার আহ্বান জানান দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, অর্থ-সম্পদ চিরদিন থাকে না। আর অনেক অর্থ-সম্পদ থাকলেও কিছু আসে যায় না। এবার করোনার সময় অনেক বিত্তশালীরা সেটা টের পেয়েছে। সেটা মাথায় রেখেই জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করবে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে চলবে।

উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা পদ্মা সেতু নিয়ে আশাবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২৫ তারিখ (২৫ জুন) পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দুঃখ দূর হবে। আমাদের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে, আরও মজবুত হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম ও এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফসহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও আবু আহমেদ মান্নাফী।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়