খেই হারিয়ে বিএনপি উল্টাপাল্টা বক্তব্য দিচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
সিভয়েস প্রতিবেদক
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন,পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ায় সারাদেশের মানুষ যখন উল্লসিত তখন বিএনপি খেই হারিয়ে ফেলেছে কি বলবে। বিএনপি এবং পদ্মা সেতু নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছে তাদের যখন মানুষ ধিক্কার দিচ্ছে তখন তারা খেই হারিয়ে নানা ধরনের উল্টাপাল্টা বক্তব্য দিচ্ছে।
শনিবার (২ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের বাসায় প্রেস ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এরআগে তথ্যমন্ত্রী রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসি আয়োজিত তৃতীয় সম্প্রচার সম্মেলনে চট্টগ্রাম থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। ঢাকা প্রান্তে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন।
সরকার পদ্মা সেতু নিয়ে সংসদে গান করছে এটার পরিবর্তে বন্যায় দুর্গত মানুষের সহায়তায় যেন আওয়ামী লীগ ঝাঁপিয়ে পড়ে— বিএনপি নেতা রিজভী আহমেদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবার পর রিজভী সাহেব কয়েকদিন নিখোঁজ ছিলেন, হঠাৎ বের হয়ে তিনি এখন নানা ধরনের কথা বলছেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বন্যা হবার পর সেখানে বিএনপির কেউ যায়নি এবং বিএনপি বলেছে, ত্রাণ দেয়া তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য নয় । আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, তখন বন্যা, জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন দুর্যোগ দুর্বিপাকে আওয়ামী লীগ সবসময় দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের নেত্রী ছুঁটে গেছেন দুর্গতদের পাশে। এবার তারা কিন্তু যায়নি।
তিনি বলেন, সংসদে এমপি মমতাজ বেগম যখন বক্তব্য শেষ করতে যাচ্ছিলেন তখন বিএনপির সংসদীয় দলের নেতা হারুনুর রশীদ আরেকটি গান গাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন মমতাজ বেগমকে। তাঁর অনুরোধে মমতাজ বেগম আরেকটি গান গেয়েছিলেন। সেটি মনে হয় রিজভী সাহেব জানেন না।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পদ্মা সেতু হবার কারণে সারাদেশের মানুষ উল্লসিত, বিএনপি এবং পদ্মা সেতু নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছে তাদের যখন দেশের মানুষ ধিক্কার দিচ্ছে তখন তারা খেই হারিয়ে নানা ধরনের উল্টাপাল্টা বক্তব্য দিচ্ছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, সারা পৃথিবীতে তাহলে কি জন্য বাড়ছে করোনা? ভারতে কি জন্য বাড়ছে ? ভারতে বিজেপি’র কারণে বাড়ছে কিনা বিএনপির কাছে এমন প্রশ্ন রেখে সেটার ব্যাখ্যা দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিএনপি বন্যা হবার পর বলেছে সরকারের কারণে বন্যা হয়েছে। আসাম এবং মেঘালয়ে দুই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি কি আমাদের সরকারের কারণে হয়েছে ? নাকি আওয়ামী লীগের কারণে হয়েছে ? সিলেটে একদিনে প্রায় এক হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সেটি কি কারণে হয়েছে। একশ বাইশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেজন্যই বন্যা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বন্যা হবার পর আমাদের সরকার এবং দল সর্বাগ্রে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। দল এবং সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যার পানিতে ডুবে এবং সাপের কামড়ে কয়েকজন মারা গেছে সেটা সত্য। কিন্তু অনাহারে কোন মানুষ মৃত্যুবরণ করে নাই।
তিনি বলেন, নিজেরা বন্যার্ত হবার পরও সেখানে আমাদের দলের নেতারা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের নিজেদের বাড়ির নিচের তলা পানিতে ডুবে গেছে। দ্বিতীয় তলায় নিজেরা আশ্রয় নিয়েছেন। তৃতীয় তলায় বন্যার্ত মানুষদের আশ্রয় দিয়ে খাবার দিয়েছেন। এধরনের বহু ঘটনা সিলেট অঞ্চলে হয়েছে।
পদ্মা সেতুর ব্যাপারে যারা বাংলাদেশে থেকে বিরোধিতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা নিবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, হাইকোর্টের একটি রায় আছে। পদ্মা সেতুর বিরুদ্বে যারা ষড়যন্ত্র করেছে তাদের খুঁজে বের করার জন্য কমিশন গঠন করতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টের রায়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কি করা যায় সরকার বিবেচনা করবে।