Cvoice24.com

বিএনপি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় : ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:২১, ১৪ আগস্ট ২০২২
বিএনপি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় :  ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে বিএনপি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। তিনি বলেন, বিএনপির ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে মাঠে নামবে আওয়ামী লীগ।

রবিবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে নগরের কাজীর দেউরি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। 

এছাড়া সভায় বক্তারা ৭৫ এর ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডে মেজর জিয়ার সম্পৃক্ততা ও এরপর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

আলোচনা সভায় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, বৈশ্বিক বাস্তবতার আলোকে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে যে দৃশ্যমান সংকট চলমান রয়েছে তা সাময়িক হলেও বিএনপি পরিকল্পিতভাবে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে বৈধ ও সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সব ধরনের নৈতিক শক্তি ও সাহসকে ধারণ করে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলে বিএনপির অশুভ অসাংবিধানিক কর্মপন্থা প্রতিহত করতে হবে। এজন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে দেশপ্রেমী জনতাকে মাঠে নামতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট দেশিয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের নীল নকশা অনুযায়ী ’৭১ এর পরাজিত শক্তির প্রত্যক্ষ ইন্ধনে কিছু বিপথগামী সেনা সদস্য বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে বিশ্ববাসীর কাছে বাঙালিকে কলঙ্কিত করেছে। সেদিনের এই মর্মান্তিক ঘটনাটির পর অনেক বিশ্ব নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেছিলেন, যে জাতিকে যিনি স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন তাকে নির্মমভাবে হত্যার মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হয়েছে এই জাতিটি বেঈমান হিসেবে পরিচিতি পায়। আমাদের জন্য এর চেয়ে বড় কোনো লজ্জা আর হতে পারে না। 

এই হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমানের ভূমিকার সমালোচনা করে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, সেদিন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পেছনে জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ ইন্ধন ছিল কি না? অবশ্যই ছিল। কারণ তিনি একজন সামরিক কর্মকর্তা হয়েও ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত করার কথা জানালেও তাদের কোর্ট মার্শাল করাননি। বরং বলেছেন যে, তোমরা যদি সাকসেসফুল হতে পারো তাহলে আছি। এর অর্থটি কি দাঁড়ায়? জিয়াউর রহমান প্রস্তুত ছিলেন তিনি একটা কিছু ঘটিয়ে ফেলবেন এবং পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তিনি এই দেশকে আবার পাকিস্তান বানাবেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়া ঠিক তা-ই করেছেন এবং তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া একই কাজটি করতে চেয়েছেন। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলে আজ যে উচ্চতার আসনে বসিয়েছেন তা অনেকের সহ্য হচ্ছে না। এরা জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা ধরনের মিথ্যাচার করছে। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শের উত্তরসূরী এবং এই চট্টগ্রামের মাটিতে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার স্বপ্নজাল বুনেছেন এম.এ আজিজ ও জহুর আহমদ চৌধুরীকে ঘিরে। এই চট্টগ্রাম থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার বার্তাটি বিশ্ববাসীর কাছে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। চট্টগ্রামের মাটিতেই বঙ্গবন্ধু অনেক স্বপ্ন বুনন করেছিলেন। সেসকল স্বপ্ন বাস্তবায়নে চট্টগ্রামবাসীকেই সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। 

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেছেন, আগস্ট মাসে আমরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হারাইনি, এ মাসেই আমরা হারিয়েছি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, সুভাষ চন্দ্র বসু, জীবননান্দ দাশসহ অনেক বাঙালি মনিষীকে। আবার রাজনৈতিক ইতিহাসেও এই মাসটি ষড়যন্ত্রের কূটজালে ভরা। এ মাসেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়, ৬১ জেলায় একযোগে বোমা হামলা সংগঠিত হয়। তাই শোকের এই মাসটি আমাদের শক্তি ও সাহস যুগিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের তাগিদ দেয়। 

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশকে ভালোবেসে সর্বোচ্চ ত্যাগের দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী তাকে নানা ধরনের টোপ দিলেও তিনি তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছিলেন এবং ধাপে ধাপে স্বাধীনতা অর্জনের পথে এগিয়ে ৭ মার্চে তিনি নির্ধারিত করে দিয়ে গেছেন, ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এই সত্যটি বিএনপি কিছুতেই স্বীকার করতে চায় না। কেননা বিএনপির জন্ম হয়েছে ষড়যন্ত্রের মধ্যদিয়ে, তাদের ক্ষমতার উৎস বন্দুকের নল। এদের কোনো আদর্শ রাজনীতি ও নীতিবোধ নেই। এদের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো প্রতারণা এবং বার বার প্রতারণা করে মানুষকে জিম্মি করে রেখে অসৎ ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করা। 

তিনি আরও বলেন, আমরা এও স্পষ্ট বুঝতে পারছি বিএনপি পেছন দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চায়, তারা মিথ্যাচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করে নাশকতা ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে বাঙালির সার্বিক মুক্তিকে ঝুলিয়ে রাখার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। তারা যদি ভেবে থাকে তারা বারবার ষড়যন্ত্র করে পার পেয়ে যাবে তাহলে তারা ভুল করছে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, এম. জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য জালাল উদ্দীন ইকবাল, দিদারুল আলম চৌধুরী, জোবাইরা নার্গিস খান, ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, এড. কামাল উদ্দীন আহমদ, ইঞ্জিনিয়ার বিজয় কৃষাণ চৌধুরী, আব্দুল লতিফ টিপু, রোটারিয়ান মো. ইলিয়াছ, মো. জাবেদ, হাজী বেলাল আহমদ ও মোর্শেদ আক্তার চৌধুরী প্রমুখ।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়