Cvoice24.com

পলোগ্রাউন্ডে আ. লীগের সমাবেশে ১০ লাখ লোক সমাগমের ঘোষণা দিলেন সেতুমন্ত্রী 

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৫৪, ২৯ অক্টোবর ২০২২
পলোগ্রাউন্ডে আ. লীগের সমাবেশে ১০ লাখ লোক সমাগমের ঘোষণা দিলেন সেতুমন্ত্রী 

জনসভায় বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি।

আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ১০ লাখ জনসমাগম হবে ; আর সেই সমাবেশ দেখার জন্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে অপেক্ষা করতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। 

শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে (পুরোনো বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ) ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রংপুরে একটি সমাবেশ হচ্ছে। আপনারা কেউ জানেন? কত রঙ্গ দেখাইলারে জাদু, কত রঙ্গ দেখাইলা! রংপুরে রঙ্গ নাটক। তিনদিন আগে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে রংপুরে এনে সব শোয়াইয়া রাখছে। মঞ্চের সামনে শুয়ে আছে। মঞ্চের ওপর শুয়ে আছে। বাড়ির ছাদের ওপর, গুদামঘরে শুয়ে আছে। রংপুরের ছবিও দেখুন। আমাদেরটাও দেখুন। এখানে তো শেখ হাসিনা নেই। দেখাবো, পলোগ্রাউন্ডে দেখাবো। সেখানে ১০ লাখ লোকের সমাগম হবে। শেখ হাসিনা যাবে। আপনারা ১০ লাখ মুখে বলবেন, আমরা বাস্তবে দেখাবো। আপনাদেরটা বাস্তবে সত্য নয়।’

এরআগে গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিভাগীয় সমাবেশ করেছিল বিএনপি। সেই সমাবেশে দশ লাখ লোক সমাগমের টার্গেটের কথা বলেছিল বিএনপি। তবে সমাবেশের অনেকটা অংশ খালি ছিল বলে দাবি করে তখন আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছিলেন— সমাবেশ করার আগে বিএনপি হাঁকডাক দিয়েছিল যে, লাখ লাখ মানুষ হবে এবং চট্টগ্রাম শহরে জনজোয়ার তৈরি হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে পলোগ্রাউন্ডের এক তৃতীয়াংশও পূর্ণ হয়নি।

১৩ অক্টোবর সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, ‘আমাদের ছেলেবেলায় পলোগ্রাউন্ডে মাঝে মধ্যে ভ্যারাইটি শো হতো। ভ্যারাইটির শো’র সময় যতো লোক হতো, গতকাল তাদের সমাবেশে তার চেয়ে একটু বেশি হয়েছে। জনগণ যে তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি সেটির প্রমাণ হচ্ছে সেখানে এমনকি তাদের কর্মীরাও আসেনি। গতকাল তাদের সমাবেশে কেউ বাধা সৃষ্টি করেনি। নির্বিঘ্নে তারা নোয়াখালী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রামগড়, কক্সবাজার একশ’-দেড়শ’ কিলোমিটার দূর থেকে সবাই এসেছে। এরপরও পলোগ্রাউন্ড মাঠের এক তৃতীয়াংশও পূর্ণ হয়নি।’

এরপরের দিন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির সমাবেশে লাখের কাছাকাছি লোক হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ চাইলে দশ লাখ লোকের সমাগম করতে পারে। 

বিএনপির এ সমাবেশের পর আওয়ামী লীগও যে সমাবেশ শুরু করতে যাচ্ছে তা চট্টগ্রাম থেকেই। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘একটা বিষয় আমি জানাচ্ছি, আগামী ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম পলো গ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন।’

শনিবার ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘ফখরুল এখন চাঙা হয়ে গেছেন। টাকা পাচ্ছেন তো। টাকারে টাকা! আরব আমিরাতের টাকা, দুবাইয়ের টাকা। এই তো এলো টাকা। ফখরুল মহাখুশি। টাকা পাইলেই তার দল খুশি। টাকা ওড়ে আকাশে, বাতাসে; টাকা ওড়ে পাড়ায়-মহল্লায়। আমরা খবর নিচ্ছি। কারা টাকা পাঠায়। খোঁজ পেয়েছি, ব্যবস্থা হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে, কেউ হারাতে পারবে না। বিএনপি এত তাফালিং করছে কেন জানেন? ভোট হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হেরে যাবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রেগে গেলে আরও হেরে যাবেন, আর রাগ কইরেন না। যত নাচানাচি লাফালাফি করুক, তাদের সঙ্গে জনগণ নেই। তারা কর্মীদের বোঝাচ্ছেন- ক্ষমতায় আসি আসি। এত আহ্লাদ! এত সুখ।’ 

বিএনপিকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়কের ভূত মাথা থেকে নামিয়ে ফেলুন। সেটা আর হবে না। আদালত মিউজিয়ামে পাঠিয়েছে। আমাদের দোষ নেই। আমরা তো নিষিদ্ধ করিনি। বিএনপি নির্বাচনে যাবে। গাধা পানি ঘোলা করে খায়। সময় আসলে দেখা যাবে।’

ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, সদস্য জিয়াউল কবির কাউসার, সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রমুখ।

এর আগে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল। ওই সম্মেলনে বেনজির আহমেদ সভাপতি এবং মাহবুবুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তাদের নেতৃত্বে ৭১ সদস্যের ঢাকা জেলা কমিটি গঠিত হয়।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়