Cvoice24.com

তারা ঘেউ ঘেউ করুক, আমরা সামনে এগিয়ে যাব: আমীর খসরু

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৩৪, ২৪ নভেম্বর ২০২২
তারা ঘেউ ঘেউ করুক, আমরা সামনে এগিয়ে যাব: আমীর খসরু

চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের প্রতিনিধি সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বিএনপিকে নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীদের বক্তব্যের উত্তর দেওয়ার সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, অনেকে প্রশ্ন করেন, সরকারের এই মন্ত্রী এই বলছেন, সরকার এই বলছে- আপনার প্রতিক্রিয়া কী? আমি বলি, কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। কারণ উত্তর দেওয়ার সময় নেই। উত্তর দিতে গেলেও অনেক নিম্নপর্যায়ে যেতে হবে। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো।
কুকুরতো ঘেউ ঘেউ করতে থাকবে। তাই বলে কি, গাড়ি থেমে যায়। তারা ঘেউ ঘেউ করুক। আমরা সামনে এগিয়ে যাব।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) চট্টগ্রামের হালিশহরের একটি কনভেনশন হলে আয়োজিত শ্রমিকদলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকার সমাবেশ ১০ তারিখ নয়াপল্টনেই হবে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, এখানে বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই। প্রশাসনকে বলবো- জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না।

এসময় পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষরা চিকিৎসা সেবায় সবচেয়ে বেশি টাকা ব্যয় করে। আফগানিস্তানের চেয়ে বেশি টাকা চিকিৎসায় খরচ করে। তাহলে এইসব মানুষ বাঁচবে কিভাবে। আমরা যদি, একটা মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে ২৫ শতাংশ টাকা সাশ্রয় হবে। আগামীতে বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় সরকার হলে সকলের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। শ্রমিকদের জন্য নূন্যতম মজুরি ছাড়াও যারা বেকার থাকবে তাদের জন্য বেকার ভাতাও দেওয়া হবে।

আমীর খসরু বলেন, শ্রমিকদের দুবেলা খাওয়ার সুযোগ নেই। আজকের শ্রমিকদের কর্মসংস্থান নেই। বাসস্থান নেই। শ্রমিকদের বিষয়ে সরকারের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। অথচ শ্রমিকদের কারণে বাংলাদেশ ঠিক আছে। লুটপাট করছে কিন্তু সবাই না। মাত্র এক শতাংশ লোক লুটপাট করছে। যারা সবাই আওয়ামী লীগের লোক। এই সম্পদ তারা বিদেশে পাচার করেছে। এই সম্পদ যদি দেশে থাকতো তাহলে দেশের মানুষ কিছুটা হলেও সুযোগ পেতো। ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। 


বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় সরকার কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, বিএনপি সরকার হবে শ্রমিক নির্ভর-সব পেশার মানুষের। ২০৩০ সালের মধ্যে কল্যাণকর রাষ্ট্র করার জন্য যা যা করা দরকার সব পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার  (২৪ নভেম্বর) দুপুরে হালিশহর নয়াবাজারস্থ গ্রান্ড তাসপিয়া কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন,বর্তমানে এক শতাংশ লোক দেশকে নিয়ন্ত্রণ করছে। রাজনীতিতে রাজনীতিবিদদের কোনো ভূমিকা নেই। ভূমিকা আছে লুটেরাদের। কিছু উচ্ছিষ্টভোজী বুদ্ধীজীবী তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার  ফিরিয়ে আনতে হলে, এই ফ্যাসিষ্ট সরকারতে উৎখাত করতে হবে। এছাড়া আর কোনো পথ নাই। আগামীতে বিএনপির নেতৃত্বে জাতীয় সরকার কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে।

এতে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী ও শ্রমিক নেতা এড. শামসুর রহমান শীমুল বিশ্বাস বলেন, সভ্যতা বিনির্মাণের কারিগর হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণির মানুষেরা। বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে অবহেলিত শ্রমিক সমাজ। এই শ্রমজীবী মানুষদের অমর্যাদা অবমূল্যায়ন করে কোন দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। ৯০ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শ্রমিক সমাজের ভূমিকা আন্দোলনকে সফল করেছিল। বর্তমান ফ্যাসিষ্ট সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিকদেরকে কঠিন আন্দোলনে শরিফ হতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করছে না। শ্রমজীবি মানুষ আজ পরিবার পরিজন নিয়ে দিশেহারা। জনগণের কোন মূল্য আওয়ামী লীগের কাছে নেই, কারণ তারা ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে। জনগণের স্বার্থ রক্ষায় এই সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন,  আওয়ামী লীগ সরকারের পায়ের নীচে মাটি নেই। তারা এখন আবোল-তাবোল বকছে। সারাদেশের মানুষ আজকে এই সরকারের পতনের আওয়াজ শোনার জন্য প্রস্তুত হয়েছে। তালবাহানা বন্ধ করে অনতিলম্বে আগামী নির্বাচনের আগে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার দাবি মেনে নিতে হবে। সরকারের সাথে বিএনপির আর কোনো আলোচনা হবে না, আলোচনা হবে নিরপেক্ষ সরকার নিয়ে। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডের সমাবেশ থেকে যে লড়াই শুরু হয়েছে সেটা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এ লড়াইয়ে বিজয় আমাদের হবেই। যদি আবারো ২০১৪-১৮ সালের মতো পাতানো নির্বাচনের নীলনকশা করা হয় তাহলে তার দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য জনগণ প্রস্তুত হয়েছে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেন,  স্বৈরাচার এরশাদের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছি, ওয়ান ইলেভেনের সরকারের সাথে আপোষ না করে আমরা বার বার গণতন্ত্র রক্ষা করেছি। এই নব্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে আবারো আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো। তাই শ্রমিকদলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও রেলওয়ে শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক এম আর মন্জুরের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক শফিকুর রহমান স্বপন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল উদ্দিন, বিভাগীয় শ্রমিক দলের সি. সহ-সভাপতি ইদ্রিস মিয়া, সহ সভাপতি শামসুল আলম (ডক), সি. যুগ্ম সম্পাদক আবদুল বাতেন, দক্ষিণ জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. মহসিন খান তরুণ, রাঙামাটি জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন, কক্সবাজার জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, ফেনী জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি হুমায়ুন কবির চৌধুরী, লক্ষ্মীপুর জেলা শ্রমিক দলের সহ সভাপতি আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া, নোয়াখালী জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা শ্রমিকদলের সভাপতি শাহেনেওয়াজ চৌধুরী মিনু,  শ্রমিকদল নেতা মো. হারুণ, গাজী আইয়ুব আলী, মোতালেব চৌধুরী, মো. আলী, ইব্রাহিম ফরাজী, সফিকুর রহমান মজুমদার, আবু বক্কর সিদ্দিক ও হাসান মাহমুদ প্রমূখ।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়