Cvoice24.com

গণভবনে একসঙ্গে রওশন এরশাদ ও জিএম কাদের

সিভয়েস ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:৫৯, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২
গণভবনে একসঙ্গে রওশন এরশাদ ও জিএম কাদের

নিজেদের দ্বন্দ্ব ভুলে একসঙ্গে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবং বিরোধী দলীয় উপনেতা জি এম কাদের।  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের রাজনৈতিক মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশিদ।

মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তারা।  এ সময় রওশন এরশাদের সঙ্গে ছিলেন পুত্র রাহগীর আল মাহী সাদ।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘আজ দুপুরে গণভবনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। এ সময় জাতীয় পার্টির পক্ষে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, এমপি; বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এমপি এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের পুত্র রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদ, এমপি উপস্থিত ছিলেন।’

প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বিরোধী দলীয় নেতার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং কুশল বিনিময় করেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদীয় গণতন্ত্রে গঠনমূলক ও ইতিবাচক ভূমিকা পালনের জন্য জাতীয় পার্টিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর যে কোনো দেশে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে বিরোধী দলসমূহের দায়িত্বশীল ভূমিকার বিষয়ে আলোচনা করেন।’

২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির কর্তৃত্ব নিয়ে রওশনের সঙ্গে দেবর কাদেরের দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠেছিল, পরে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যস্থতায় সমঝোতা হয় দুজনের।

তারপর কাদের দলের চেয়ারম্যান হন, আর রওশন হন সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা। তিন বছর পর থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন রওশন এরশাদের নামে গত ৩০ অগাস্ট আকস্মিকভাবে দলের কাউন্সিল ডাকা হয়। এর পাল্টায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরাও রওশনকে বাদ দিয়ে কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা করতে সেপ্টেম্বরের শুরুতে চিঠি দেন স্পিকারকে।

দলে বিবাদের মধ্যে গত ১৪ সেপ্টেম্বর কোনো কারণ উল্লেখ না করে মসিউর রহমান রাঙ্গাঁকে দলের সভাপতিমণ্ডলীসহ সব পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জাতীয় পার্টি।

প্রায় দুই মাস পার হলেও জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা করার প্রশ্নে স্পিকারের কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় ৩০ অক্টোবর দলটি সংসদ বর্জনের সিদ্ধান্ত জানায়।

বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে গেজেট প্রকাশ না করা পর্যন্ত তারা সংসদে যোগ দেবেন বললেও অবশ্য পরদিনই সংসদ অধিবেশনে তাদের দেখা যায়।

দীর্ঘ পাঁচ মাস চিকিৎসা শেষে নভেম্বরের শেষে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফেরেন রওশান এরশাদ। সেদিন তিনি জানিয়েছিলেন, দ্বন্দ্ব দূর করতে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।

এরপর ২৯ নভেম্বর জি এম কাদের ওয়েস্টিনে গেলে লম্বা সময় বৈঠক হয় দেবর-ভাবির।

ভুল বোঝাবুঝির ‘অবসানের’ ইংগিত দিয়ে পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু সেদিন বলেছিলেন, “তারা এক টেবিলে নাস্তা করেছেন।… অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। এরপর আশা করা যায়, দলের মধ্যে সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়ে যাবে।”

মাঝে কোনো অনুষ্ঠানে তাদের একসেঙ্গে দেখা না গেলেও মঙ্গলবার তারা আবার একসঙ্গে গণভবনে গেলেন।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়