Cvoice24.com

বিএনপিকর্মীদের ধরছে পুলিশ, নেতারা উধাও!

মিনহাজ মুহী, সিভয়েস২৪

প্রকাশিত: ২০:১৮, ৩১ জুলাই ২০২৪
বিএনপিকর্মীদের ধরছে পুলিশ, নেতারা উধাও!

ঢাকায় সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তারের পর থেকে চট্টগ্রাম বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা চলে গেছেন ‘আত্মগোপনে’। চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সম্প্রতি দায়িত্ব পাওয়া সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানসহ সব জ্যেষ্ঠ নেতা উধাও। 

সবশেষ মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) গণগ্রেপ্তার বন্ধের দাবি জানিয়ে গণমাধ্যমে ‘প্রেস বিজ্ঞপ্তি’ পাঠিয়ে ‘দায়িত্ব সেরেছেন’ নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও নাজিমুর রহমান। তবে বন্ধ রয়েছে সবার মোবাইল ফোন। এর আগে ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছিল নগর বিএনপি।

এদিকে সম্প্রতি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর বর্তমান পরিস্থিতিটাই প্রথম ‘প্রতিকূল’ সময় হয়ে এসেছে। এমন দুরাবস্থায় সাধারণ কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে নতুন নেতাদের। এমনকি ‘নিজের মতো’ নগর কমিটি করেও ‘উধাও’ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের নতুন দায়িত্ব পাওয়া ব্যারিস্টার মীর হেলাল। বন্ধ রেখেছেন নিজের মোবাইল ফোনও। হোয়াটসঅ্যাপে অ্যাক্টিভ থেকেও ধরছেন না কর্মীদের ফোন, দিচ্ছেন না মেসেজের কোনো জবাব।

নাম গোপন রাখার শর্তে নগর বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী সিভয়েস২৪’কে বলেন, সাধারণ নেতাকর্মীদের দিনেরাতে ধরে পুলিশ থানায় নিচ্ছে। কিন্তু জ্যেষ্ঠ নেতাদের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। নিজের মতো কমিটি করেও উধাও ব্যারিস্টার মীর হেলাল। এরশাদ উল্লাহ-নাজিমুর রহমানের সঙ্গেও নেতাকর্মীদের কোনো যোগাযোগ নেই।

এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা বলতে সম্প্রতি দায়িত্ব পাওয়া বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর মোবাইল ফোনে বুধবার একাধিকবার কল করা হয়। কিন্তু প্রতিবারই দুজনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে মীর হেলালের হোয়াটসঅ্যাপ মাঝেমধ্যে অ্যাকটিভ পাওয়া গেলেও তিনি সাড়া দেননি।

নগর বিএনপির অভিযোগ, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার সঙ্গে নেতাকর্মীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবু পুলিশ এখন পর্যন্ত ২০ মামলায় ৩৯০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সাধারণ নেতাকর্মীদের বাসায় গিয়ে তল্লাশি করে স্বজনদের হয়রানি করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাসা থেকে ধরে নিয়ে সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখাচ্ছেন। যার কারণে বাসা-বাড়ি ছেড়ে নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

কিন্তু পুলিশ বলছে, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে; তাদের অধিকাংশই নাশকতাকারী আর জামায়াত-বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে প্রবেশ করে বিভিন্ন নাশকতা করেছে। 

নগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. ইদ্রিস আলী সিভয়েস২৪’কে বলেন, ‘বিএনপির কোনো নেতাকর্মী বাসায় থাকতে পারছেন না। সবাই নিজ বাসা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সব নেতাকর্মীর ঘরে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ১৬ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত ১৪ দিনে বিভিন্ন মামলায় বিএনপির প্রায় ৩৯০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে নগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ সিভয়েস২৪’কে বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ, সিসিটিভি ফুটেজ ও ছবি অ্যানালাইসিস করে নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের ধরা হয়েছে। এদের মধ্যে জামায়াত-শিবির ও বিএনপি নেতাকর্মীরাও আছেন। মূলত যারাই নাশকতার সঙ্গে জড়িত; তাদেরকেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিএনপির অনেক নেতা আছেন, যাদের আমরা আন্দোলনে দেখিনি; তাদের তো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।’

সিভয়েস/আশা

আরও পড়ুন:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়

: