অবশেষে রাউজানে বিএনপির অ্যাকশন শুরু
‘বাপ-বেটা’ দুজনই দলীয় কাঠগড়ায়
সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক
উত্তর চট্টগ্রামজুড়ে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ নানাকাণ্ডে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর পাশাপাশি তাঁরই ছেলে সামির কাদের চৌধুরীর সম্পৃক্ততা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ফলে নয়াপল্টনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে ‘বাপ-বেটা’ দুজনকেই।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) পৃথক আরেকটি কারণ দর্শানো নোটিশে সামিরকেও আগামী তিনদিনের ভেতরে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া একই অভিযোগে রাউজান উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হুদা চেয়ারম্যান এবং ফিরোজ আহমেদ মেম্বারকে ‘অভিযুক্ত’ করে পৃথক নোটিশে তাঁদেরকেও কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সূত্র জানিয়েছে, রাউজনাকাণ্ডে দলীয় আরো বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি হচ্ছে।
দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এসব নোটিশ জারি করেন।
কেন সাংগঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না জানতে চেয়ে নোটিশে বলা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে এলাকায় দুষ্কর্মে সহযোগিতা, দেশি ও প্রবাসী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, চাঁদা না পেয়ে কাউকে কাউকে হুমকি প্রদর্শনসহ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অনৈতিক নানা অভিযোগ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আহমদ আযম খানের নেতৃত্বে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এর যথাযথ কারণ দর্শিয়ে আগামী ০৩ (তিন) দিনের মধ্যে একটি লিখিত জবাব দলের নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে একই দিনে নিজ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, প্রবাসীর বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, কমিটি গঠনে বাধা, সন্ত্রাসী ভাড়া করে সীতাকুণ্ড রাউজানসহ অন্যান্য নির্বাচনী আসনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগ এনে তিন দিনের ভেতরে কেন গিয়াস কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানাতে বলা হয়েছে তাকে।
জানা গেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের কয়েকদিন পর হঠাৎ দেশে ফিরেন গিয়াস কাদের চৌধুরী। এরপর থেকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা গোলাম আকবর খোন্দকারের অনুসারীদের সঙ্গে গিয়াস কাদেরের অনুসারীর মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। বিশেষ করে গোলাম আকবর খোন্দকার অনুসারী দুই ছাত্রদল নেতাকে দিনদুপুরে তুলে নিয়ে হত্যাচেষ্টাসহ নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে গিয়াসের অনুসারীদের বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে গিয়াস বরাবরের মতো চুপ ছিলেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সরকার পতনের পর এস আলমের গাড়িকাণ্ডসহ চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া বিএনপি নেতাদের সব অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলো রাউজানকাণ্ড।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সুসময়ে দেশে ফিরে গিয়াস কাদের চৌধুরীর এসবকাণ্ড চোখ এড়ায়নি দলের চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। দলের হাইকমান্ডের নেতৃত্বে এসব তদন্ত চলছিল। প্রমাণ হাতে নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ‘অনড়’ দলের শীর্ষ নেতা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার সিভয়েস২৪’কে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’
গিয়াস কাদের চৌধুরীর মুঠোফোনে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে একাধিকবার ফোন দিলেও সাড়া মেলেনি।
সিভয়েস২৪/মিমু