‘শেখ মুজিবের মাথার টুপি মুসলমানের নয়, মহাত্মা গান্ধীর’
সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক
‘শেখ মুজিবের মাথার টুপি মুসলমানের টুপি নয়। এটা হলো মহাত্মা গান্ধীর মাথার টুপি।’-এমন মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘৭ নভেম্বর হলো সিপাহি জনতার বিপ্লব। আওয়ামী লীগ মুনাফেক, গাদ্দার, বাকশালি ও ইসলাম বিদ্বেষী দল। ১৯৭২-৭৫ সাল ছিল আইয়ামে জাহেলিয়ার যুগ। এই শাসনামল সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে ইসলাম এবং মুসলিম জনতার। ৭ নভেম্বর হল এদেশের তৌহিদি জনতার সম্পদ।’
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের সাফা আর্কেডে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নগর জামায়াতের আমীর শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘দেশের মানুষ গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচারকে সমূলে উৎখাত করেছে। এখন দেশে গণতন্ত্র ও দেশের মানুষকে পূর্ণভাবে মুক্ত করতে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে প্রয়োজন আরেকটি বিপ্লব, যা এই জাতির ভবিষ্যৎ রচনা করবে। ৭ নভেম্বর একনায়কতন্ত্র, শোষণ ও জুলুমের বিরুদ্ধে যেভাবে দেশের মানুষ সম্মিলিতভাবে গর্জে উঠেছিল, একইভাবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা সব আধিপত্যবাদী শক্তির মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করেছে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহজাহান চৌধুরী আরো বলেন, ‘৭ নভেম্বরের সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে শৃঙ্খলমুক্ত করা হয়েছিল। মূলত বিপ্লব ও সংহতি দিবসের চেতনা আধিপত্যবাদী ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ববিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের চেতনা। তাই ৭ নভেম্বরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও জুলুমতন্ত্র মোকাবিলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মহানগর নায়েবে আমীর ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ বলেন, ‘যারা ঘোষণা করেছিল পালায় না তাদের এখন চেরাগ দিয়েও খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশের জনগণ মিলে এক ঐতিহাসিক বিপ্লব সংঘটিত করে, যে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার স্বাদ উপভোগ করতে শুরু করে। এই সিপাহী-জনতার বিপ্লবের ৫০ বছর পর বাংলাদেশে একই ধরনের আরেকটি বিপ্লব সংঘটিত হয়। এটিও সিপাহী-জনতার বিপ্লব, সৈনিক-ছাত্র-জনতার বিপ্লব। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এই বিপ্লব সংঘটিত হয়। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে শয়তানি ষড়যন্ত্র কোনদিনও বাস্তবায়ন হবে না, ইনশাআল্লাহ।’
নায়েবে আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জোর করে থাকার জন্য একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। ৫ আগস্টের পর ও কিছু ফ্যাসিস্টের দোসর প্রতিবিপ্লবের স্বপ্ন দেখে। যার প্রমাণ চট্টগ্রামের হাজারি গলির ঘটনা। এরকম বহু ঘটনা বাংলাদেশে করে যাচ্ছে স্বৈরাচারীর দোসররা। বাংলাদেশের ২য় স্বাধীনতা কখনো বিফলে যেতে দেয়া যাবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।’
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগর নায়েবে আমীর ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ ও মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মহানগর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খায়রুল বাশার, মুহাম্মদ উল্লাহ ও মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান প্রমুখ।
এতে উপস্থিত ছিলেন মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা. ছিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, কোতোয়ালী থানা আমীর আমির হোসাইন, হালিশহর থানা আমীর ফখরে জাহান সিরাজী, নগর ওলামা বিভাগের সেক্রেটারি মমতাজুর রহমান, চকবাজার থানা আমীর আহমেদ খালেদুল আনোয়ার, সদরঘাট থানা আমীর এম এ গফুর প্রমুখ।