দেশজুড়ে উগ্রবাদের উত্থানে ইসলামী ফ্রন্টের উদ্বেগ
সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক
দেশজুড়ে নতুনভাবে উগ্রবাদী সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব হচ্ছে দাবি করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাতে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের দপ্তর সচিব মুহাম্মদ আবদুল হাকিম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।
বিবৃতিতে ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মতিন ও মহাসচিব অধ্যক্ষ স.উ.ম আবদুস সামাদ বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফায়দা নিয়ে একদল উগ্রবাদি সন্ত্রাসী গোষ্ঠি আল্লাহর অলিদের মাজারে হামলা-ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালাচ্ছে। অনেক মসজিদের ইমাম-খতিব-মাদ্রাসা ও স্কুল কলেজের শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করেছে ও বিতাড়িত করেছে। হেনস্তার শিকার হয়ে অসংখ্য শিক্ষক স্ট্রোক করে মারা গেছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ২৮ নভেম্বর উগ্রবাদি মুসলিম ধর্মীয় লেবাসধারী সন্ত্রাসীরা ময়মনসিংহের শেরপুর মুর্শিদপুর দরবারে শরীফে হামলা করে মসজিদ অগ্নিসংযোগ করে পবিত্র কুরআন পুড়িয়ে দেয়ার মত জঘন্য কাজে বাধা দিতে গেলে সুন্নীকর্মী হাফেজ উদ্দিনকে হত্যা করে, অসংখ্য সুন্নী জনতাকে আহত করে দরবার গরু-ছাগলসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, অন্যদিকে ২৬ নভেম্বর আরেক ধর্মীয় উগ্রবাদি গোষ্ঠি চট্টগ্রাম কোর্ট হিল মসজিদে ভাঙচুর করে ও অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে নির্মমভাবে হত্যা করে। উগ্রবাদিরা মিডিয়া অফিসে হামলা-অগ্নিসংযোগ করে মিডিয়া কর্মীদেরকে ভীতি প্রদর্শনের মত ন্যাক্কারজনক কাজও করে যাচ্ছে। এভাবে ধর্মের নামে নাশকতা ও তাণ্ডব চালিয়ে মানুষ হত্যা করে,ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের মাধ্যমে উগ্রবাদী গোষ্ঠিগুলো দেশে দাঙ্গা বাঁধাতে চায়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, উগ্রবাদি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ যথাযথ নয় দাবি করে বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে অসংখ্য মাজার-মসজিদে হামলা ও শিক্ষকদের অপদস্তকারীদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে না পারায় সন্ত্রাসীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। অবিলম্বে মুর্শিদপুর দরবার মসজিদে হামলা-লুটপাট ও হাফেজ উদ্দীন হত্যাকারী এবং কোর্ট হিল মসজিদ হামলা ও অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় আনতে হবে। উগ্রবাদীদের শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে। অন্যথায়, ধর্মীয় দাঙ্গায় গণঅভ্যুত্থানের সুফল অঙ্কুরে বিনষ্ট হবে।
নেতৃবৃন্দ ‘ভারতে একেরপর এক মসজিদের নীচে মন্দির’ দাবি করে সংখ্যালঘু মুসলমানদের ধর্মীয় কাজে বাধা দেওয়ারও তীব্র নিন্দা জানান।
নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেন, ভারতের আজমীর শরীফ মুসলমানদের প্রাণের ঠিকানা। কথিত হিন্দুসেনারা আজমীর শরীফে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করলে এর ফল ভালো হবে না। অন্যদিকে ফিলিস্তিনে দখলদার জায়নবাদী ঈসরাইলী ইহুদিদের কর্তৃক মুসলিম গণহত্যার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক শক্তিধর রাষ্ট্র ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ভূমিকা যথাযথ নয়। সারা বিশ্বের মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নাই।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ অন্তবর্তীকালীন সরকারকে দেশ-বিদেশে চলমান উগ্রবাদি তাণ্ডবের বিরুদ্ধে শক্ত ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণকে শান্ত থাকার আহবান জানান।