পাহাড়ে অবিশ্বাস্য গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে করোনার সংক্রমণ
জেলা প্রতিনিধি
অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হচ্ছে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় আরো নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৮৭ জন। এনিয়ে জেলা মোট কোভিড সংক্রমন দাঁড়ালো ২৫০৪ জনে।
একদিনে ৮৭জন আক্রান্তের খবর স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রকাশ করার কয়েক ঘন্টার মধ্যে জেলাবাসীর প্রতি করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বিভিন্ন বিধি নিষেধ প্রতিপালনের বিষয়ে আহবান জানিয়েছেন ডিসি রাঙামাটি ফেসবুক আইডি থেকে।
আহবানটি জানানোর সাথে সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা কপি পেষ্ট ও প্রচুর শেয়ার হতে শুরু করেছে এবং অনেককে উদ্বেক প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
গত ২৪ ঘন্টায় সংক্রমিত ৮৭ জনের মধ্যে রাঙামাটি পিসিআর ল্যাবে সনাক্ত হয়েছেন ৫৪ জন,যার মধ্যে সদরেই ২৮ জন , কাপ্তাই উপজেলায় ২১ জন, কাউখালীতে ৪ জন,বরকলে ১ জন রোগি আছেন।
অন্যদিকে এন্টিজেন টেস্টে পজিটিভ হওয়া ৩৩ জনের মধ্যে রাঙামাটি শহরে ১৪ জন, বিলাইছড়িতে ৪ জন, বাঘাইছড়িতে ২ জন, লংগদুতে ২ জন, কাউখালীতে ৪ জন, কাপ্তাইয়ে ২ জন,বরকলে ৪ জন এবং নানিয়ারচরে ১ জন রয়েছেন।
অর্থাৎ সর্বোচ্চ ৪২ জন রাঙামাটি সদরে এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩ জন কাপ্তাইতে সনাক্ত হয়েছেন।
‘পুরো বিষয়টি বেশ উদ্বেগজনক’ বলছে স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্টরা।
জেলা প্রশাসকের রাঙামাটি বাসীর প্রতি করোনা মহামারির সংকট উত্তোরণে বিধি নিষেধ প্রতিপালনের আহবান জানিয়ে বলেন।
প্রিয় রাংগামাটি বাসী,
আসসালামু আলাইকুম।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনাদের সাথে কিছু বিষয় শেয়ার করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছি। সেগুলো হচ্ছে, আজ রাংগামাটি পার্বত্য জেলায় কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৮৭ জন!! রাংগামাটি পৌরসভা, কাপ্তাই এবং কাউখালি উপজেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যান্য উপজেলাগুলোতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গত ১৪ দিনে রাংগামাটি পার্বত্য জেলায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৪৮!! সংক্রমণের হার ৩১.৩১%!!
আমরা সবাই জানি এই পরিস্থিতিতে আমাদের কি করা উচিত কি করা উচিত নয়! আপনারা ঘরে অবস্থান করুন।
তরুণ প্রজন্মের প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা নিজে সচেতন হোন এবং অন্যকে সচেতন করুন। আপনারা ঘরে অবস্থান করুন। স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে লাল পতাকা উত্তোলন করে চিহ্নিত করে দেয়া হচ্ছে। আক্রান্ত ব্যক্তি এবং আইসোলেশনে থাকা পরিবারের সদস্যগণ দয়া করে আইসোলেশন নিশ্চিত করবেন। বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে যে, কোভিড পজিটিভ ব্যক্তি আইসোলেশন মেনে চলছেন না অর্থাৎ বাসা থেকে বের হচ্ছেন!! বিষয়টি অত্যন্ত আতংকের কারণ আমরা সবাই জানি বর্তমান কোভিড-১৯ ভ্যারিয়েন্টটি অতি সংক্রামক।
আইসোলেশন কেউ নিশ্চিত না করলে আমাদেরকে সংবাদ দিন। সকলের দায়িত্বশীলতা আন্তরিক ভাবে প্রত্যাশা করছি।
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে যত দ্রুত আমরা সংক্রমণের হার কমাতে সক্ষম হবো তত দ্রুত আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব।
কোভিড-১৯ এর টীকা কার্যক্রম বর্তমানে পুরোদমে চালু রয়েছে। রেজিষ্ট্রেশন করে টীকা গ্রহণ করুন।
খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন হলে ৩৩৩ নাম্বারে কল করুন। আপনার বাসায় খাদ্য পৌঁছে যাবে। আবারও বলছি খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন হলে ৩৩৩ নাম্বারে কল করুন।
আমাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কি বিনা কারণে ঘর হতে বের হয়ে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে নিজেকে সমর্পণ করবো নাকি ঘরে অবস্থান করে নিজে এবং পরিবারের সকলকে নিরাপদে রাখব?
রাংগামাটি পার্বত্য জেলাবাসী-আপনাদের ভালো রাখতে প্রশাসন, পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার এবং জনপ্রতিনিধিবৃন্দ মাঠে রয়েছে। আপনারা দেশের আইনের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। আপনাদের সহযোগিতা ব্যতীত এই পরিস্থিতি হতে উত্তরণ অত্যন্ত দুরূহ। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।