হ্রদের পানিতে ডুবে আছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
রাঙামাটি প্রতিনিধি

পানিতে সয়লাব রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
‘টেলিভিশনে দেখে ঝুলন্ত সেতু দেখতে এসেছি। এখন এসে দেখি সেটি পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। তাই ভয়ে সেতুতে উঠছি না। দূর থেকে দেখতে হচ্ছে। খুবই হতাশ হলাম।’— ডুবে যাওয়া ঝুলন্ত ব্রিজ নিয়ে হতাশ কণ্ঠে বলছিলেন খুলনা থেকে আসা পর্যটক রাজেশ।
টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু। শনিবার রাতে রাঙামাটিতে প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে গিয়ে সেতুটি ডুবতে শুরু করেছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সেতুতে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পাটাতনের ওপর পানি উঠেছে প্রায় ৫-৬ ইঞ্চি। পানির চাপে অনেক স্থানেই খুলে গেছে পাটাতনের কাঠ। তা মেরামত করতে কাজ করছেন কর্তৃপক্ষ।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদের পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল, কিন্তু ১০৫ এমএসএল হলেই ডুবে যায় এই সেতু। আর কাপ্তাই হ্রদে রবিবার সকাল পর্যন্ত ১০৫.৬ এমএসএল পানি রয়েছে বলে জানা যায়।
এদিকে পর্যটন কর্তৃপক্ষ পানিতে ডুবে থাকার কারণে ঝুলন্ত সেতুতে পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে । সেতুর কাছে ঝোলানো হয়েছে নিষেধাজ্ঞার নোটিশ ও লাল পতাকা। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আবার অনেকেই এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন ডুবন্ত সেতুতে।
আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় হোটেল মোটেল ও ট্যুরিস্ট বোট মালিকরা ঝুলন্ত সেতু ডুবে যাওয়া সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান। রাঙামাটি ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, ‘কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধির কারণে ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে গেছে। এতে আমরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হব। আমরা দাবি জানাচ্ছি যাতে ঝুলন্ত সেতুটি ৩-৫ফিট উপরে তোলা হয়।’
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন রাঙামাটি শাখার ব্যবস্থাপক আলক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘নিরাপত্তার বিবেচনা করে সেতুতে পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে নোটিশ এবং লাল পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, রাঙামাটি সদর উপজেলার তবলছড়ি এলাকায় নয়নাভিরাম ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ ঝুলন্ত সেতুটির অবস্থান। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ১৯৮৬ সালে এই সেতুটি নির্মাণ করে। দুই পাহাড়ের মাঝখানে দুটি পিলারের ভর করে দাঁড়িয়ে থাকা দৃষ্টিনন্দন এ সেতুটি দেখতে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক রাঙামাটি আসেন। বর্তমানে সেতুটি রাঙামাটির প্রতীক হিসেবে দেশ-বিদেশে পরিচিতি পেয়েছে।