হ্রদে ঘেরা কাপ্তাইয়ে নেই সাঁতার শেখার সুযোগ
অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই (রাঙামাটি)
২৫৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার বেশিরভাগ এলাকাজুড়ে রয়েছে হ্রদ ও কর্ণফুলী নদী। অথচ অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, এই হ্রদ ও নদীবেষ্টিত উপজেলাটিতে নেই কোন সাঁতার শেখানোর প্রতিষ্ঠান। নেই আয়োজনও। এমন কি কোন প্রতিষ্ঠানকে এই নিয়ে উদ্যোগও গ্রহণ করতে দেখাই যায়নি। যার ফলে প্রায় প্রতিবছরই কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদী অথবা হ্রদে ডুবে মারা যাচ্ছে সাঁতার না জানা শিশু-কিশোররা। বাদ যাচ্ছেন না বয়ষ্করাও।
সম্প্রতি, কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদীতে গোসল করতে নেমে ডুবে মারা যায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী প্রিয়ন্ত দাশ ও শাওন দত্ত। বিগত ৫ বছরে একইভাবে স্থানীয় বাসিন্দা ও বাইরে থেকে আসা পর্যটক মিলে অন্তত ১১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তাদের মধ্যে শিশু, কিশোর ও যুবকের সংখ্যাই বেশি। তাই কাপ্তাইয়ে এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা কমাতে সাঁতার শেখানোর কোন বিকল্প কিছু নেই বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
কাপ্তাই উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দীন আজাদ জানান, কাপ্তাই উপজেলায় সাঁতার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করা খুবই জরুরি। এক সময় কাপ্তাইয়ে শিক্ষার্থীদের সাঁতার শিখতে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিবছর সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতো। এখনো স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের এ ব্যাপারে উৎসাহী করতে হবে। এছাড়া কাপ্তাইয়ে একটি সুইমিং পুল নির্মাণ করা হলে এখানকার শিশু-কিশোর থেকে সবাই উপকৃত হবেন।
কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ওমর ফারুক রনি বলেন, ‘যেহেতু এই কাপ্তাই উপজেলা ঘিরে বিশাল জলরাশি, তাই এখানকার বাসিন্দাদের অবশ্যই সাঁতার জানাটা ভীষণ জরুরি। কিন্তু আমরা দেখি এই ব্যাপারে কোন আয়োজন বা উদ্যোগ নেই। খুব দ্রুতই কিছু একটা করা দরকার। যেন নদীতে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা আর দেখতে না হয়।’
কাপ্তাই উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার মোহাম্মদ হোসেন জানান, সাঁতার শেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যেহেতু আমরা কাপ্তাই উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার নতুন এডহক কমিটি হয়েছে। তাই সামনের সভায় সাঁতার প্রশিক্ষণের বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেওয়া যায় কিনা এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে।