Cvoice24.com

তিন স্থাপনায় আটকে আছে রেলওয়ে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ  

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:২৮, ৩০ জুন ২০২১
তিন স্থাপনায় আটকে আছে রেলওয়ে হাসপাতালের নির্মাণ কাজ  

চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় রেলের পরিত্যক্ত জমিতে রেল হাসপাতাল নির্মাণ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে ছিল রেলওয়ে শ্রমিকলীগ, সিবিএসহ বিভিন্ন সংগঠন। বেশ কয়েক দফা আলোচনার পর সেই ঝামেলা কেটে গেলেও এখন হাসপাতাল নির্মাণ আটকে আছে সেখানে অবস্থিত ৩টি স্থাপনায়।  

কেননা সেখানে অবস্থিত বৈধ-অবৈধ স্থাপনাগুলো এরই মধ্যে উচ্ছেদ করা গেলেও হাসপাতালের জন্য নির্ধারিত জায়গায় থাকা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি আশ্রম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এবং তাসপিয়া গার্ডেন নামের একটি প্রতিষ্ঠান স্থানান্তর নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি রেলওয়ে। 

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেখানে বাসাবাড়িতে যাদের নামে বরাদ্দ ছিল তাদের অন্য জায়গায় বাসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও তাসপিয়া গার্ডেন নামের একটি প্রতিষ্ঠান হস্তান্তরের জন্য উপযুক্ত জায়গা খোঁজা হচ্ছে। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পেছনে অবস্থিত 'শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ নিতাই গৌর বন্ধুকুঞ্জ' আশ্রমটি হস্তান্তরের ব্যাপারে ধর্মীয় অনূভুতির বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে, হাসপাতাল বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রথম ধাপে ২ দশমিক ৪২ একর জমি বুঝিয়ে দেওয়া  হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে বুঝিয়ে দেওয়া হবে ৩ দশমিক ৫৮ একর। তার জন্য ওই ৩টি স্থাপনার জন্য উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণ করা জরুরি। অথচ এর আগে রেলওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে রেলের জমিতে নতুন হাসপাতালের কাজ শুরু হবে। বলা চলে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত হাসপাতাল নির্মাণে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।

এর আগে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ রেলের জমিতে হাসপাতাল বানাতে ইউনাইটেড চট্টগ্রাম হাসপাতাল লিমিটেডের সাথে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়। যার কার্যনির্বাহী সংস্থার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং বাস্তবায়ন করবে ইউনাইটেড চট্টগ্রাম হাসপাতাল লিমিটেড। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) গড়ে তোলা হবে ৫০০ শয্যার অত্যাধুনিক এই হাসপাতাল ও ১০০ আসনের মেডিকেল কলেজ। 

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কথা চালাচালি চলছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জন্য নতুন জায়গা বরাদ্দ নিয়ে। এরই মধ্যে সিআরবি এলাকায় নতুন করে জায়গা বরাদ্দ পেতে প্রস্তাব পাঠিয়েছে রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কার্যকারী সভাপতি শেখ লোকমান হোসেন। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চাইছে সিআরবি এলাকার বাইরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদটি স্থানন্তরের জন্য। কিন্তু তা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের শেখ লোকমান হোসেন। 

শেখ লোকমান হোসেন সিভয়েকে বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যেদিকে মেলা হয় (সিআরবি শিরিষতলা) সেখানে কিংবা ওই এলাকায়  হস্তান্তরের জন্য। এখনও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এখনও কিছু জানায় নি। দেখি কর্তৃপক্ষ যেদিকে ভাল মনে করে সেদিকেই দিবে।’

প্রকল্প পরিচালক ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান ইঞ্জিনিয়ার (সেতু) আহসান জাবির সিভয়েসকে বলেন, 'এই ৩টি স্থাপনার জন্য আমরা উপযুক্ত জায়গা খুঁজছি। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উনারা চাচ্ছেন সিআরবির ভেতরেই স্থানান্তরের জন্য।’

সম্প্রতি প্রকল্প এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বরাদ্দ বাতিলের পর খালি হওয়া সেমিপাকা বাসাগুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। বিপদজনকভাবে ফেলে রাখা হয়েছে গ্যাসলাইন ও গ্যাসের মিটার। সেখানে থাকা কয়েকটি গ্যাস রাইজার ও মিটারও চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রেলওয়ে হাসপাতাল শাখা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল সিভয়েসকে বলেন, ‘চুরি হয়েছে কি’না সেটা তো আমরা জানি না। সেখানে হাসপাতালের নামে বরাদ্দ থাকা বাসাগুলো খালি করে দিতে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। আমরা তখনই সেগুলো কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছি।’ 

প্রকল্প পরিচালক ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান ইঞ্জিনিয়ার (সেতু) আহসান জাবির সিভয়েসকে বলেন, ‘সেখানে থাকা গ্যাস লাইনগুলো সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রকল্প এলাকা ঘেরাও করে রাখা হবে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়