মশা মারতে মেয়র সময় দিলেন ২০ দিন
সিভয়েস প্রতিবেদক
শনিবার চান্দগাঁও ওয়ার্ডের নতুন থানা চত্বরে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করেন মেয়র রেজাউল।
মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ চট্টগ্রাম নগরীর বাসিন্দারা। প্রকোপ এতোই বেড়েছে —ওষুধ ছিটিয়েও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ছিটানো ওষুধের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমন ত্রাহি অবস্থার মধ্যে নগরে মশক নিধনের আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করেছেন নতুন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। নিজের ‘গরজে’ মশা মারার আহ্বানের পাশাপাশি চসিকের কর্মকর্তাদের ২০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন মেয়র।
প্রতিশ্রুতির প্রথম ১০০ দিনের জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে চসিকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে। যার ধারাবাহিকতায় শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) চান্দগাঁও ওয়ার্ডের নতুন থানা চত্বরে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করেন মেয়র রেজাউল।
এই কার্যক্রমে মশকনিধন ও পরিচ্ছন্নতাকে প্রথম অগ্রাধিকার দিয়ে উদ্যোগ গ্রহণের ঘোষণা দিয়ে মেয়র রেজাউল বলেন, ‘মশার বিস্তার নাগরিক দুর্ভোগ ও অস্বস্থির বড় অসহনীয় উপসর্গ। তাই তা নিরসনে প্রথম ২০ দিনের মধ্যে সময় বেঁধে দিয়ে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডকে কয়েকটি জোনে ভাগ করে মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালিত হবে।’
এদিকে চসিক সূত্র জানায়, প্রতি ৪টি ওয়ার্ডে টানা দু’দিন করে মশার ওষুধ ছিটানো হবে নগরজুড়ে। এভাবে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে মশার ওষুধ ছিটানো হবে ২০ দিনের মধ্যে। ১০০ দিনের পরিকল্পনার প্রথম দফায় এ পরিকল্পনা বলে জানিয়েছেন চসিকের কর্মকর্তারা।
এই অভিযানে স্বপ্রণোদিত হয়ে নগরবাসীদের সম্পৃক্ত হবার আহ্বান জানিয়ে মেয়র রেজাউল বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন মশক নিধনের ওষুধ ছিটাবে এবং প্রকাশ্য স্থান ও নালা-নর্দমার স্তুপকৃত আবর্জনা, বর্জ্য পরিস্কার করবে। কিন্তু শুধু এভাবেই মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা রক্ষা সম্ভব নয়। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতা। নিজ ‘গরজেই’বাসা- বাড়িতে মশক প্রজনন ও উৎপত্তিস্থল বিনাশ এবং বর্জ্য-আবর্জনা সরিয়ে ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেরতে হবে।’
বাসিন্দাদের সর্তক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘কেউ নালা নর্দমায় বা খালে ও পানি চলাচলের পথে পলিথিন ও প্লাস্টিক,বর্জ্য-আবর্জনা ফেলতে পারবেন না। ফেললে এটা হবে দণ্ডনীয় অপরাধ। মনে রাখতে হবে সিটি কর্পোরেশন শুধু মেয়রের একার নয়, প্রত্যেক নগরবাসীর।’
তাছাড়া তিনি বলেন, ‘মশক নিধনে সিটি কর্পোরেশনগুলো যে ওষুধ ছিটায়, সেগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মশার এই ওষুধের মান নির্ণয়ে তা ঢাকায় ল্যাবে পাঠিয়ে যাচাই-বাছাই করা হবে।’
এদিনে নগরের সড়কজুড়ে রয়েছে খানা-খন্দক। যার কারণে নগরবাসীর দৈনন্দিন চলাফেরায় স্বস্তি নেই। আবার অনেক সড়ক যান ও জনচলাচল অনুপযোগী। এসব সড়ক এক সাথে সাথে সংস্কার বা মেরামত করা সম্ভব নয় জানিয়ে সবাইকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানান রেজাউল করিম চৌধুরী।
তবে তিনি জানান, নগরের যেসব সড়কের অবস্থা খুব বেহাল সেগুলো আগে-ভাগে মেরামত ও খানা-খন্দক ভরাট করা হবে। তিনি নগরবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘কোন সমস্যার সমাধান রাতারাতি হবে না। তবে সমস্যা সমাধানে আমি উদ্যোগী এবং সচেষ্ট হবো। যে কোন নাগরিক সমস্যা বা দুর্ভোগ থাকলে তা আমাকে অবগত করা হলে তা নিরসন ও লাঘবে তাৎক্ষণিক কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর এসারুল হক, মোহাম্মদ শহিদুল আলম, এম আশরাফুল আলম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম, চসিক আঞ্চলিক অফিস জোন-৬ এর নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া আকতার, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, রাজস্ব কর্মকর্তা শাহেদা ফাতেমা, যুগ্ম জেলা জজ জাহানারা ফেরদৌস, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা আকতার নেলী, উপ-সচিব আশেক রসুল চৌধুরী টিপু, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু ছালেহ, সুদীপ বসাক, নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সিদ্দিক, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা সাইফুদ্দীন আহমদ ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরী।
সিভয়েস/এপি