Cvoice24.com

লকডাউনের চারদিনে রেলের ক্ষতি কোটি টাকা

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৩০, ৮ এপ্রিল ২০২১
লকডাউনের চারদিনে রেলের ক্ষতি কোটি টাকা

স্বাভাবিক সময়ে ইঞ্জিন ও লোকবল সংকটের কারণে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পরিবহন করতে পারতো না চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া পূর্বাঞ্চলের পণ্যবাহী ট্রেনগুলো। কিন্তু লকডাউনের জেরে গত সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো বন্ধ রয়েছে। সেই সুযোগে বেড়েছে পণ্যবাহী ট্রেনের চলাচল। অন্যদিকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত গত চারদিনে প্রায় এক কোটি টাকার আয় বঞ্চিত হয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে ছুটে যাওয়া প্রায় ১৭টি যাত্রীবাহী ট্রেনের কমপক্ষে ৮ হাজার যাত্রী হয়। বৃহস্পতি-শুক্র-শনিবারের মতো এই টানা বন্ধের ফাঁদে তার সংখ্যা ছুঁয়ে যায় সাড়ে ১৫ হাজারের বেশি। যেখানে গড়পড়তা হারে পূর্বাঞ্চলের এই স্টেশন থেকে যাত্রীসেবার বিপরীতে দৈনিক ২৫ থেকে ২৬ লাখ টাকা। সেই হিসেবে গত চারদিনে প্রায় এক কোটি টাকা আয় বঞ্চিত হয়েছে রেলওয়ে। 

এদিকে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সবগুলো যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের ফলে পণ্য পরিবহনে পুরোপুরি ‘মনযোগ’ দিতে পারতো না রেলওয়ে। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের চাপে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় বেড়েছে পণ্যবাহী ট্রেনের চলাচল। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যেখানে ৪ থেকে ৫টি পণ্যবাহী ট্রেন ছুটে যেতো সেখানে লকডাউনের সময়ে প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাচ্ছে ৬ থেকে ৭টি পণ্যবাহী ট্রেন।

তবে এই ৪দিনে পণ্যবাহী ট্রেন থেকে বাড়তি কত টাকা আয় হয়েছে তার সূক্ষ হিসাব জানা যায়নি রেলওয়ের দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী সিভয়েসকে বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট দিনের হিসেবটা মাসিক কাগজপত্র আসলে বলা যাবে। কিন্তু পণ্য পরিবহণের বিপরীতে গড়পড়তা হারে মাসিক ৬ থেকে ৭ কোটি টাকা আয় হয়।’

অন্যদিকে রেলওয়ের পরিবহণ বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, লকডাউনের প্রথম দিন (৫ এপ্রিল) চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে গেছে ৭টি পণ্যবাহী ট্রেন, দ্বিতীয় দিন (৬ এপ্রিল) ছেড়ে গেছে ৭টি, তৃতীয় দিন (৭ এপ্রিল) ছেড়ে গেছে ৬টি পণ্যবাহী ট্রেন।  একই ধারাবহিকতায় লকডাউনের চতুর্থ দিন (৮ এপ্রিল) ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে ৬ কিংবা ৭টি পণ্যবাহী ট্রেন। অর্থাৎ লকডাউনের ৪দিনে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলেও চট্টগ্রাম থেকে দৈনিক ছেড়ে যাচ্ছে ৭টি পণ্যবাহী ট্রেন। অন্যদিকে স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করতো ৪ থেকে ৫টি।

পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা স্নেহাশীষ গুপ্ত সিভয়েসকে বলেন, ‘লকডাউনে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল বেড়েছে। আজকে (৮ এপ্রিল) ৬টি বা ৭টি ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা। যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ থাকার ফলে পণ্যবাহী ট্রেন পুরোপুরিভাবে চলাচল করাতে পারছি। কাজেই এখন যদি আরও লোড থাকে তাহলে আরও বেশি পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করতে পারবো।’

রেলওয়ে সূত্র জানায়, পণ্যবাহী ট্রেনগুলো চলাচল করছে ৩টি ক্যাটগরিতে। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কন্টেইনার নিয়ে ঢাকায় ছুটে যাচ্ছে একটি ট্রেন। দ্ধিতীয় ক্যাটাগরিতে তেল নিয়ে পার্বতীপুর (রংপুর) সিলেট, শ্রীমঙ্গল, জামালপুর, ঢাকা ও দোহাজারী যাচ্ছে কিছু ট্রেন। তৃতীয় ক্যাটাগরিতে শাক, সবজিসহ এ জাতীয় পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে রওনা দিচ্ছে পণ্যবাহী ট্রেনগুলো।

কর্মকর্তারা বলছেন, লকডাউনে একে তো বন্ধ আছে যাত্রীবাহী ট্রেনগুলো। সেই সাথে তুলনামূলক ফাঁকা হয়ে গেছে গোটা শহর। রেল ক্রসিংয়ে অতিক্রম করার সময়ে স্বাভাবিক গতি ধরে রাখতে পারছে ট্রেন। তাই চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন ট্রেন গুলো দ্রুত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে। সবমিলিয়ে লকডাউনে বেড়েছে পণ্য পরিবহনের রেলের গতি।

অন্যদিকে পণ্যবাহী ট্রেনগুলোর নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)। অবশ্য তেলবাহী ট্রেনগুলোতে আরএনবির সাধারণ সদস্যসহ গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা নিয়োজিত আছেন। আরএনবির চিফ ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ সালামত উল্লাহ সিভয়েসকে বলেন, ‘পণ্যবাহী যে ট্রেনগুলো চলাচল করছে সেগুলোতে আরএনবির সদস্যরা নিয়োজিত আছে। এর বাইরে স্টেশনে রাখা রেকগুলোতেও পাহারায় নিয়োজিত আছে আরএনবির সদস্যরা।

-সিভয়েস/এপি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়