Cvoice24.com

পার্সেল নিয়ে ট্রেন যাবে—চট্টগ্রাম থেকে জামালপুর

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৫৯, ১৩ এপ্রিল ২০২১
পার্সেল নিয়ে ট্রেন যাবে—চট্টগ্রাম থেকে জামালপুর

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ‘পার্সেল-১ ও ‘২’ নামে একটি মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করবে। চট্টগ্রাম থেকে প্রতিদিন শুধুমাত্র খাদ্যপণ্য নিয়ে ট্রেনটি ছুটবে জামালপুরের পথে। বুধবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় প্রথম ট্রেন জামালপুরের উদ্দেশ্য চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে কর্মকর্তারা। 

কর্মকর্তারা জানান, ‘পার্সেল-১’ নামের প্রথম ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ছাড়বে বিকেল ৩টায়। যা সন্ধ্যা ৭ টা ৫০ মিনিটে আখাউড়া পৌঁছাবে। আখাউড়া থেকে ৮টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি রওনা দিবে সরিষাবাড়ীর (জামালপুর) উদ্দেশ্যে। যা সরিষাবাড়ী পৌঁছানোর কথা রয়েছে ভোর সাড়ে ৪টায়।

ফিরতি যাত্রায় ‘পার্সেল-২’ হয়ে ট্রেনটি সরিষাবাড়ী থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে ভোর ৫টায়। আখাউড়া পৌঁছানোর কথা রয়েছে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে। আখাউড়া স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের দিকে ট্রেনটি রওনা দিবে দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে এবং চট্টগ্রামে পৌঁছানোর কথা রয়েছে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, লকডাউনে প্রান্তিক কৃষকের উৎপাদিত সবজি, কৃষি মালামাল ও অন্যান্য জরুরি পার্সেল পরিবহনের জন্য চালু করা হয়েছে চট্টগ্রাম-আখাউড়া-ভৈরববাজার-সরিষাবাড়ী রুটের পার্শ্বেল ট্রেনটি। যা চট্টগ্রাম থেকে ছুঁটবে ইঞ্জিনসহ মোট ৬টি গাড়ি নিয়ে। এদের মধ্যে ৫টি (বগি/লাগেজ ভ্যান) মালগাড়ি ব্যবহার হবে পণ্য পরিবহনের কাজে। অন্য একটি গার্ডব্রেক।

রেলওয়য়ে বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী সিভয়েসকে বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয়ের ঘোষণার প্রেক্ষিতে পার্শ্বেল ট্রেনে পণ্য পরিবহনের প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। এর আগের লকডাউনে পার্সেল ট্রেন পরিচালনা করে ভালো সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। ’

ট্রেনটির বিরতি স্টেশন

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রেলওয়ে পরিবহন (পূর্ব) বিভাগের একটি ইস্যু হওয়া চিঠিতে দেখা গেছে চট্টগ্রাম টু জামাল রুটের ট্রেনটি বিরতি নিবে অন্তত ২২টি স্টেশনে। এর মধ্যে রয়েছে সীতাকুণ্ড, চিনকি আস্তানা, ফেনী, নাঙ্গলকোট, লাকসাম, কুমিল্লা, আখাউড়া , ভৈরব বাজার কালিয়ারচর, বাজিতপুর, সরারচর, মানিকখালী, গচিহাটা, কিশোরগঞ্জ,  নান্দাইল, আঠারবাড়, সোহগী, ইশ্বরগঞ্জ, গৌরীপুর ময়মনসিংহ জংশন, ময়মনসিংহ নুরুন্দি, নন্দিনা ও জামালপুর স্টেশন।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ‘পার্শ্বেল ১ ও ২’ ছাড়াও ঢাকা- ভৈরববাজার- আখাউড়া- সিলেট রুটে চলাচল করবে পার্শ্বেল ৩ ও ৪। ইঞ্জিনসহ মোট ৫টি গাড়ি থাকবে ‘পার্শ্বেল ৩ ও ৪’ ট্রেনটিতে। এতে মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হবে ৪টি মালগাড়ি (বগি/ লাগেজভ্যান) ও একটি গার্ডব্রেক থাকবে। 

আখাউড়া হবে  ট্রানজিট পয়েন্ট

রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা এবং সিলেটের মালামাল নিয়ে জামালপুরের উদ্দেশ্যে ছুঁটবে ‘পার্শ্বেল-১ ও ২’। যাওয়ার-আসার পথে সিলেট ও ঢাকার মালগাড়িগুলো আখাউড়ায় ট্রানজিট করা হবে। সেখানে ‘পার্শ্বেল ৩ ও ৪’ ট্রেনের সাথে সংযোজন বিয়োজন হবে ‘পার্শ্বেল ১ ও ২’ এর বহন করা লাগেজ ভ্যান। রেলওয়ে পরিবহন বিভাগের প্রকাশিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে- ‘ঢাকা- ময়মনসিংহ-সরিষাবাড়ী-ঢাকা, চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম, ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে পরিবাহিত লাগেজ ভ্যান ভৈরববাজার ও আখাউড়া স্টেশনে সংযোজন বিয়োজন করে গন্তব্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।’

কেমন খরচ পড়বে

রেলওয়ের পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন পথের ভাড়ার তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামের দূরত্ব ৩৪৬ কিলোমিটার। এইপথে প্রতি কেজির ভাড়া পড়বে ১ টাকা ১৭ পয়সা। চট্টগ্রাম থেকে সরিষাবাড়ীর দূরত্ব ৪৬৯ কিলোমিটার। প্রতি কেজি মালামালের ভাড়া হবে ১ টাকা ৩৫ পয়সা। চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের দূরত্ব ৩৯০ কিলোমিটার। প্রতি কেজি মাল পরিবহন করতে লাগবে ১ টাকা ৩০ পয়সা। তাছাড়া ঢাকা থেকে রেলপথে সিলেটের দূরত্ব ৩১৯ কিলোমিটার। এই পথে প্রতি কেজি মালামাল পরিবহনে ভাড়া গুনতে হবে ১ টাকা ১১ পয়সা। 

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম টু জামালপুর রুটের চলাচলকারী ৫টি ল্যাগেজভ্যানে কমপক্ষে ২০ হাজার মেট্রিক টন মালামাল (ভারী মালামাল) বহনের সক্ষমতা আছে। কিন্তু গতবছরের মে মাসেও চলাচলের এক সাথে এতো বেশি পরিমাণে মালামাল বহনের অর্ডার আসেনি। কিন্তু এবার রেলওয়ে পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে ট্রেনে মালামাল পরিবহনের জন্য। সাথে কঠোর লকডাউনে বন্ধ থাকতে পারে সড়ক পথ। তাই ট্রেনে মালামাল পরিবনের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে রেলওয়ে। তাই ট্রেনে মালামাল বহনের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা করা হয়েছে এবারের লকডাউন ঘিরে।


সিভয়েস/এপি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়