Cvoice24.com

চট্টগ্রাম থেকে ৭৮ মণ মাছ নিয়ে সরিষাবাড়ি গেল স্পেশাল ট্রেন 

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:৩১, ১৫ এপ্রিল ২০২১
চট্টগ্রাম থেকে ৭৮ মণ মাছ নিয়ে সরিষাবাড়ি গেল স্পেশাল ট্রেন 

সারাদেশে খাদ্যের ঘাটতি মেটাতে বুধবার থেকে চলাচল করছে পণ্যবাহী বিশেষ পার্সেল ট্রেন। চট্টগ্রাম থেকে প্রতিদিন একটি ট্রেন জামালপুরের সরিষাবাড়ির উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটায় ছেড়ে যাওয়া ওই ট্রেনে করে প্রথমবারের মতো ৭৮ মণ মাছ ছাড়াও শুঁটকি মাছ, রাবারের জুতা ও ফার্নিচার নিয়ে ছেড়ে গেছে ট্রেনটি। 

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) আনসার আলী জানান, প্রথমদিন কম পণ্য পেলেও দ্বিতীয় দিন পণ্য ভর্তি ছিলো ট্রেন। প্রথমবারের মতো ৭৮ মণ কাঁচা মাছ ছাড়াও শুঁটকি মাছ, রাবারের জুতা ও ফার্নিচার নিয়ে ছেড়ে গেছে ট্রেনটি। আজকে আয় হয়েছে ৩১ হাজার ১৭৫ টাকা। গতকাল আয় ছিলো ২৩ হাজার টাকা।
 
বিশেষ পার্সেল ট্রেনগুলোতে কৃষিজাত পণ্য যেমন- শাক-সবজি, দেশীয় ফলমূলসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে মূল ভাড়ার ওপর ২৫ শতাংশ রেয়াতি ও অন্যান্য সব ধরনের চার্জ মওকুফ করা হয়েছে। 

ঢাকা-সিলেট, সিলেট-ঢাকা; চট্টগ্রাম-সরিষাবাড়ী, সরিষাবাড়ী-চট্টগ্রাম; খুলনা-চিলহাটি, চিলহাটি-খুলনা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম (পঞ্চগড়)-ঢাকা, ঢাকা-বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম (পঞ্চগড়) উদ্দেশ্যে প্রতিদিন চারটি ট্রেন চলাচল করছে।

জানা যায়, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে পার্সেল-১ ও ২ নামে একটি মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করবে। চট্টগ্রাম থেকে প্রতিদিন শুধুমাত্র খাদ্য পণ্য নিয়ে ট্রেনটি ছুটছে জামালপুরের পথে। পার্সেল-১ নামের প্রথম ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ছাড়বে বিকেল ৩টায়। যা সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে আখাউড়া পৌঁছাবে। আখাউড়া থেকে ৮টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি রওনা দিবে সরিষাবাড়ীর (জামালপুর) উদ্দেশ্যে। যা সরিষাবাড়ী পৌঁছানোর কথা রয়েছে ভোর সাড়ে ৪টায়।

ফিরতি যাত্রায় পার্সেল-২ হয়ে ট্রেনটি সরিষাবাড়ী থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে ভোর ৫টায়। আখাউড়া পৌঁছানোর কথা রয়েছে দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে। আখাউড়া স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের দিকে ট্রেনটি রওনা দিবে দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে এবং চট্টগ্রামে পৌঁছানোর কথা রয়েছে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, লকডাউনে প্রান্তিক কৃষকের উৎপাদিত সবজি, কৃষি মালামাল ও অন্যান্য জরুরি পার্সেল পরিবহনের জন্য চালু করা হয়েছে চট্টগ্রাম-আখাউড়া-ভৈরববাজার-সরিষাবাড়ী রুটের পার্শ্বেল ট্রেনটি। যা চট্টগ্রাম থেকে ছুটবে ইঞ্জিনসহ মোট ৬টি গাড়ি নিয়ে। এদের মধ্যে ৫টি (বগি/লাগেজ ভ্যান) মালগাড়ি ব্যবহার হবে পণ্য পরিবহনের কাজে। অন্য একটি গার্ডব্রেক।

রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা এবং সিলেটের মালামাল নিয়ে জামালপুরের উদ্দেশ্যে ছুটলো পার্সেল-১ ও ২। যাওয়ার-আসার পথে সিলেট ও ঢাকার মালগাড়িগুলো আখাউড়ায় ট্রানজিট করা হবে। সেখানে পার্সেল ৩ ও ৪ ট্রেনের সাথে সংযোজন বিয়োজন হবে ‘পার্সেল ১ ও  ২ এর বহন করা লাগেজ ভ্যান। রেলওয়ে পরিবহন বিভাগের প্রকাশিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে- ‘ঢাকা-ময়মনসিংহ-সরিষাবাড়ী-ঢাকা, চট্টগ্রাম-সিলেট-চট্টগ্রাম, ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে পরিবাহিত লাগেজ ভ্যান ভৈরববাজার ও আখাউড়া স্টেশনে সংযোজন বিয়োজন করে গন্তব্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। 

কেমন খরচ পড়বে

রেলওয়ের পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন পথের ভাড়ার তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামের দূরত্ব ৩৪৬ কিলোমিটার। এইপথে প্রতি কেজির ভাড়া পড়বে ১ টাকা ১৭ পয়সা। চট্টগ্রাম থেকে সরিষাবাড়ীর দূরত্ব ৪৬৯ কিলোমিটার। প্রতি কেজি মালামালের ভাড়া হবে ১ টাকা ৩৫ পয়সা। চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের দূরত্ব ৩৯০ কিলোমিটার। প্রতি কেজি মাল পরিবহন করতে লাগবে ১ টাকা ৩০ পয়সা। তাছাড়া ঢাকা থেকে রেলপথে সিলেটের দূরত্ব ৩১৯ কিলোমিটার। এই পথে প্রতি কেজি মালামাল পরিবহনে ভাড়া গুনতে হবে ১ টাকা ১১ পয়সা। 

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম টু জামালপুর রুটের চলাচলকারী ৫টি ল্যাগেজভ্যানে কমপক্ষে ২০ হাজার মেট্রিক টন মালামাল (ভারী মালামাল) বহনের সক্ষমতা আছে। কিন্তু গতবছরের মে মাসেও চলাচলের এক সাথে এতো বেশি পরিমাণে মালামাল বহনের অর্ডার আসেনি। কিন্তু এবার রেলওয়ে পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে ট্রেনে মালামাল পরিবহনের জন্য। সাথে কঠোর লকডাউনে বন্ধ থাকতে পারে সড়ক পথ। তাই ট্রেনে মালামাল পরিবনের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে রেলওয়ে। তাই ট্রেনে মালামাল বহনের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা করা হয়েছে এবারের লকডাউন ঘিরে।

ডিসিও আনসার আলী আরও বলেন, ‘প্রথমদিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিন পণ্য পরিবহন বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের আহ্বান করবো তারা কম খরচে ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন জায়গায় পণ্য পাঠাতে পারবে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়