Cvoice24.com

সিভয়েসে সংবাদ : বন্ধ হলো পার্সেল ট্রেনে যাত্রী উঠানো

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:০৫, ৪ মে ২০২১
সিভয়েসে সংবাদ : বন্ধ হলো পার্সেল ট্রেনে যাত্রী উঠানো

রবিবার সিভয়েসে প্রকাশিত সংবাদ

অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিভয়েসটুয়েন্টটিফোরডটকমে সংবাদ প্রকাশের জেরে চট্টগ্রাম টু জামালপুর রুটে চলাচলরত পার্সেল ট্রেনে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করেছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (৪ মে) থেকে ঈদ পর্যন্ত চট্টগ্রামের পাহাড়তলী, চিনকি আস্তানা ও সীতাকুণ্ড স্টেশনে পার্সেল ট্রেনটি না থামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া গত রবিবার (সংবাদ প্রকাশের দিন) ট্রেনের পরিচালনার দায়িত্বে থাকা পরিচালক ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) সদস্যদের ডিউটি ‘আপাতত’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, লকডাউনে পণ্যবাহী ট্রেনে যাত্রী পরিবহনের ঘটনা তদন্তে গঠিত হয়েছে তিন সদস্যদের একটি কমিটি। আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনা তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই কমিটিকে। তাছাড়া পণ্যবাহী ট্রেনে যাত্রী না চড়াতে কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে সব স্টেশনে। আরএনবির পাশাপাশি নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে রেলওয়ে পুলিশকে (জিআরপি)।  

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা স্নেহাশীষ গুপ্ত সিভয়েসকে বলেন, ‘পণ্যবাহী ট্রেনে যাত্রী পরিবহনের ঘটনায় তিন সদস্যর একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি রিপোর্ট দেওয়ার পরে তাদের (ট্রেন পরিচালনায় নিযুক্ত যারা  ছিলেন) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া এখন থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে যেন কোন যাত্রী ট্রেনে না উঠতে পারে। যে সমস্ত গার্ডের (ট্রেন পরিচালক) বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে পার্সেল ট্রেনে তাদের ডিউটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির চূড়ান্ত রিপোর্ট আসলে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এর আগে গত রবিবার (২ মে) ‘পার্সেল ট্রেনে পণ্যের সঙ্গে উঠছে যাত্রীও’ –এ শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল চট্টগ্রামের অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিভয়েস টুয়েন্টিফোর.কম। 

এতে বলা হয়েছিল, ‘করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় পার্সেল ওয়ানে ঈদকে কেন্দ্র করে বাড়ছে যাত্রী পরিবহন। এই চট্টগ্রাম-জামালপুর রুটের প্রায় সব ক’টি স্টেশন থেকেই যাত্রী তুলছে স্টেশনভিত্তিক সিন্ডিকেটগুলো।’

পরদিন অর্থাৎ সোমবার (৩ মে) চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পার্সেল ১ ও ২ ট্রেনে যাত্রী পরিবহন প্রসঙ্গে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল। 

এতে বলা হয়েছে ‘বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রিন্ট মিডিয়ায় অভিযোগ করা হয় যে- উক্ত পার্সেল ট্রেনে যাত্রী পরিবহন হচ্ছে। অথচ পার্সেল ট্রেনে যাত্রী পরিবহনের কোন অবকাশ নেই। যাত্রীবাহী ট্রেন  এবং গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে রেলওয়েতে কর্মরত অপারেশনাল কাজের সাথে সম্পৃক্ত কর্মচারীদের শুধুমাত্র কর্মস্থলে গমন ও কর্মস্থল থেকে আগমনের জন্য বিশেষ বিবেচনায় সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার অজুহাতে কোন অবস্থাতেই যাত্রী পরিবহনের সুযোগ নেই।’

অন্যদিকে আরএনবির চীফ ইন্সপেক্টর (অস্ত্রশাখা) রেজুয়ানুর রহমান সিভয়েসকে বলেন, ‘সেদিন (রিপোর্ট প্রকাশের দিন) আরএনবির সদস্যদের মধ্যে যারা ট্রেনে ছিলেন। তাদের ডিউটি বন্ধ রেখে ইনকোয়ারি (জিজ্ঞাসা) করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ থেকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখানে অন্যায় করে এড়িয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।’

এদিকে প্রতিদিনের সোমবার ও মঙ্গলবার পার্সেল ওয়ান ট্রেনটি দুপুর ৩টায় চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে গেছে। স্টেশন ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী সিভয়েসকে জানান, মাঝ পথে (গুরুত্বপূর্ণ রেল ক্রসিংয়ে) যাত্রী উঠে যাওয়ার অভিযোগ শুনেছি। প্রতিদিন ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার সময় কদমতলীতে এলাকার রেল ক্রসিংয়ে আরএনবির একটি টিম রাখা হবে। 

পরিববহন কর্মকর্তা স্নেহাশীষ দাশ গুপ্ত সিভয়েসকে বলেন, ‘আমাদের যেহেতু ডিমান্ড নেই আজকে থেকে ঈদ পর্যন্ত পাহাড়তলী, চিনকি আস্তানা ও সীতাকুণ্ড এই তিন স্টেশনে স্টপেজ উইথড্র ( বিরতি তুলে দেওয়া) করে দিয়েছি।

প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের জেরে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় চালু করা পার্সেল এই ট্রেন। যা চট্টগ্রাম-জামালপুর রুটে চলছে ইঞ্জিনসহ মোট ৬টি গাড়ি (বগি) নিয়ে। এদের মধ্যে ৫টি (বগি/ লাগেজ ভ্যান) মালগাড়ি হিসেবে ব্যবহার হবে পণ্য পরিবহনের কাজে। তবে পণ্য সংকটে ট্রেনটির দু’টি বা তিনটি বগি পূর্ণ হচ্ছে।

সিভয়েস/এপি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়