Cvoice24.com

দুদকের জালে রেলের ফয়সাল

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:০৩, ৯ মে ২০২১
দুদকের জালে রেলের ফয়সাল

রেলওয়েতে আইভাস জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় গ্রেপ্তার পাহাড়তলী অর্থ হিসাব শাখার জুনিয়র কর্মকর্তা ফয়সাল মাহমুদের দুর্নীতির তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল শনিবার রাতে গ্রেপ্তারের পর তাকে রবিবার বিকেলে সিএমপির খুলশী থানায় জিডিমূলে হস্তান্তর করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। এখন তাকে আদালতের মাধ্যমে নিজেদের হেফাজতে নেবে দুদক। 

২০২০ সালে সেপ্টম্বর থেকে কর্মীদের বেতন সরানোর কাজ করে কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল ফয়সাল মাহমুদ। তবে বেপোয়ারা হয়ে উঠেছেন ডিসেম্বরে কিন্তু প্রায় ৮ মাস ধরে একাই কিভাবে এ কাজ চালিয়ে আসছে— সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রেল অঙ্গনে। এবার অর্থ আত্মসাতের এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

প্রশিক্ষণে গিয়ে হ্যাকিং শিখে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন ফয়সাল  

রবিবার (৯ মে) ফয়সালকে খুলশী থানায় স্থানান্তর করার পর এমনটাই জানিয়েছেন খুলশী থানার (ওসি) মো. শাহিনুজ্জামান। সিভয়েসকে তিনি বলেন, ‘এটা দুদকের শিডিউলভূক্ত মামলা তাই মামলাটির তদন্ত করবে দুদক। ফয়সালকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। কাল তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। সেখান থেকে দুদক তাদের হেফাজতে নিবে।’

এর আগে, শনিবার (৮ মে) রেলওয়ে কর্মকর্তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ফয়সালকে আটক করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। তারপর থেকে রবিবার বিকেল পর্যন্ত আরএনবির হাজতে আটক ছিল ফয়সাল।

দুদক জেলা কার্যালয় ২-এর উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন সিভয়েসকে বলেন, ‘পুলিশ আসামি বুঝিয়ে দিলে আমরা মামলাটি তদন্ত করবো।’

এদিকে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, ফয়সালের ব্যাংক একাউন্ট জব্দসহ লুট হওয়া টাকার পরিমাণ ও ওই টাকার অবস্থান দ্রুত জানার চেষ্টা করছে কর্মকর্তারা। সেই সঙ্গে সরিয়ে নেওয়া কোটি টাকার গড়মিলের হিসাব মেলানোর চেষ্টা চলছে। 

রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত আইভাস সিস্টেমের প্রশিক্ষণ নিতে তাকে সহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে সরকারীভাবে ট্রেনিংয়ে পাঠানো হয়। মূলত সেখানে গিয়েই হ্যাকিংয়ের ধারণা পান ফয়সাল। পরে সেটাকে কাজে লাগিয়ে নিজের নামে একাধিক একাউন্ট খোলেন তিনি। এরপর সেই অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে কর্মচারীদের বেতন ও উৎসব ভাতা হ্যাক করে নিজের অ্যাকাউন্টে সরাতেন। এভাবে গত সেপ্টেম্বর থেকে টাকা সরাতে শুরু করেন ফয়সাল। প্রায় ৮ মাসে কত টাকা সরিয়েছেন ফয়সাল তার নিখুঁত হিসাব এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। 

তবে রেল সূত্র জানায়, কর্মকর্তাদের প্রায় দেড় কোটি টাকার হিসাবে গড়মিল আছে। এখন পর্যন্ত ৫০ লাখ টাকা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ফয়সাল। অবশ্য অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে বিস্তারিত সবকিছু জানা যাবে বলে জানিয়েছেন পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন।

রেল কর্মকর্তারা জানান, আইভাস সিস্টেম হলো রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ডিজিটালে দেওয়ার পদ্ধতি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ‘আইভাস’ সিস্টেম চালু করা হয়। এ পদ্ধতির বিষয়ে ফয়সালসহ বেশ কয়েকজনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কর্মকর্তাদের এ পদ্ধতিতে বেতন দেওয়া হচ্ছিল সেই সেপ্টেম্বর থেকে। পর্যায়ক্রমে কর্মচারীদের যুক্ত করার কথা ছিল এ সিস্টেমের আওতায়।

-সিভয়েস/এপি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়