Cvoice24.com

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে গতি দিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:৫৪, ১৬ জুন ২০২১
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে গতি দিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

কথায় আছে বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা। টইটুম্বুর বর্ষায় চট্টগ্রাম নগরের যেন ঠিক এই দশা! বর্ষার শুরুর আগেই ডুবে যায় নগরের নীচু এলাকাগুলো। সাথে ভাগাড় ও খালের ময়লা সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার চিত্র তো আছেই। জলাবদ্ধতার হাত থেকে বন্দর নগর চট্টগ্রামকে বাঁচাতে ১০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রায় তিন বছর ধরে কাজও চলমান। কিন্তু বর্ষা এলেই বোঝা যায়, এতটুকুও প্রাণ ফিরেনি বন্দরনগর চট্টগ্রামের। কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পানিতে ডুবে যায় নগরের বিভিন্ন স্থান।

প্রায় ৩ বছর ধরে এসব প্রকল্পের কাজ কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে তা জানতে চেয়ে বুধবার (১৬ জুন) প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সব সংস্থাকে ডেকে পাঠায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস’র সভাপতিত্বে এ ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো। ছিলেন চট্টগ্রামের মেয়র, সিডিএ চেয়ারম্যান ও ওয়াসার এমডিসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষই এতে সংযুক্ত ছিলেন। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে গতি আনতে এখন যুক্ত করা হয়েছে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে। 

জবাবদিহিতার এ বৈঠকে অভিযোগ নানা অভিযোগ উঠলেও তা শেষে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প ঘিরে যে জটিলতা আষ্টেপৃষ্টে লেগে ছিল তা কেটে যাবে। 

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকের শুরু থেকেই জোরালো আলোচনা হয়েছে চলমান প্রকল্প সমূহের ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়টি নিয়ে। চলমান প্রকল্পগুলো নির্বিঘ্নে এগিয়ে নিতে আর্থিক জটিলতা নিরসন, ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা নিরসন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সেবা সংস্থাগুলোর দ্বন্দ্ব নিরসনের এই ৩টি বিষয়ে জোর দিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

এ বৈঠকে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণকে গতিশীল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসান, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষ’র (সিডিএ) পিডি (জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের) আহম্মেদ মইনউদ্দিনকে। এখন থেকে ৩ জনের একটি একটি টিম গঠন করে ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা নিরসনে কাজ করবেন।

বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা সিভয়েসকে বলেন, ‘আসলে প্রকল্পের মেয়াদ তিন বছর শেষ হলেও ভূমি অধিগ্রহণ সেভাবে হয়নি। অনেক জায়গায় ভূমি অধিগ্রহণের আটকে থাকার কারণে কাজ এগুচ্ছে না। এ বিষয়টি আজকে জোরালো আলোচনা করা হয়েছে ‘

তাছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের প্রাণ কর্ণফুলী নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে প্লাস্টিক বর্জ্যে। তাছাড়া পলিথিন বর্জ্যেও ভরাট হয়ে গেছে নগরের খালগুলো। বর্ষায় খালের ময়লা সড়কে জোয়ারের পানির সাথে প্রবেশ করে বেহাল দশা সৃষ্টি হয় নগরীতে। এ বৈঠকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধরীকে অনুরোধ করা হয়েছে— বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও গতিশীল করতে। পাশাপাশি পলিথিন বিরোধী ক্যাম্পেইনও চালু করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে।

অবশ্য এর আগে গত ১৪ জুন চসিক, সিডিএ, ওয়াসা, ও পানি উন্নয়নের বোর্ডের এক সমন্বয় সভায় মেয়র রেজাউল বলেছেন, পলিথিন উৎপাদন বন্ধে অভিযান শুরু করবে চসিক। 

করোনাকালে প্রকল্পের বরাদ্দে ও অর্থ ছাড় নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। সেই বিষয়টি নিয়েও জোরালো আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈঠকে উপস্থিত চট্টগ্রাম সংশ্লিষ্টরা।

অন্যদিকে নানা জটিলতায় মুখ থুবড়ে পড়ার অবস্থা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবি) ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকার প্রকল্পের। মূলতো কর্ণফুলী নদীর তীরে পাউবিকে ফ্লাড ওয়াল তৈরীর অনুমতি দিচ্ছে না চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষ। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে- পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণায়ল এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। যা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে আগামী ৩০ জুন। বন্দর চেয়ারম্যান ও পাউবি’র কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

সিডিএ ,পাউবি, চসিকের প্রকৌশলীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রকল্পের বিভিন্ন সমস্যা খোলাসাভাবে উঠে এসেছে ভার্চুয়াল এ বৈঠকে। এখন জলাবদ্ধতা নিরসন মেগা প্রকল্পে বিভিন্ন সমস্যা দ্রুত সমাধান বলে আশা প্রকাশ করেছে প্রকৌশলীরা।

-সিভয়েস/এপি

 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়