Cvoice24.com

খালের বুকে লোহার বাঁধ, ঘরে বাইরে হাঁটু পানি

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:৪১, ১৯ জুন ২০২১
খালের বুকে লোহার বাঁধ, ঘরে বাইরে হাঁটু পানি

অতিভারী বৃষ্টিতে ডুবে গেছে চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ, বাকলিয়া, দুই নম্বর গেট, কাপাসগোলা, চকবাজারসহ নীচু এলাকাগুলো। প্রায় দেড়’শ দিন ধরে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেও এসব এলাকায় জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। 

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুনঃ https://www.youtube.com/watch?v=XmMjzFYiZd8

শনিবার (১৯ জুন) নগরের জলাবদ্ধতার চিত্র দেখতে বেরিয়ে দুই নম্বর গেট এলাকায় কোমর সমান পানিতে আটকে ছিল খোদ চসিকের একটি টিম। এমন বাস্তবতায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে চসিকের কর্মকর্তারা বলছেন— নগরের খালের বুক থেকে বাঁধ সরানোর কাজে গড়িমসির কারণে দেখতে হচ্ছে এমন চিত্র। অন্যদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, চট্টগ্রামে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কা রয়েছে।

তাছাড়া গত কয়েকদিনের দফায় দফায় বৃষ্টিতে চরম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে নগরজুড়ে। কিন্তু জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে নগের বিভিন্ন খালের বুক থেকে বাঁধ সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। পুরোপুরিভাবে এই বাঁধ সরানো হলে বর্ষায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতার ভোগান্তি কমে যাবে। কিন্তু এমন আশ্বাসকে শুধুমাত্র ‘কথার কথা’ বলে অভিযোগ তুলছেন চসিক সংশ্লিষ্টরা।

চসিকের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নগরের ফরেস্ট গেট এলাকায় শিক্ষা বোর্ড অফিসের সড়কে রিটার্নিং ওয়ালের কাজ করছে। একইভাবে বহদ্দারহাট এলাকার চাক্তাই খাল অংশে এখনও বাঁধ রয়ে গেছে। এসব অংশসহ নগরের বেশ কিছু জায়গায় ড্রেনে-খালের মাটি তুলে রাখা হয়েছে সড়কে। সড়কে ফেলে রাখা মাটির স্তুপের কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি  হচ্ছে। তাছাড়া চাক্তাই খালের বিভিন্ন অংশে লোহার পাতের বাঁধ তো আছেই। যার কারণে বৃষ্টির পানি দ্রুত নামতে না পেরে ঢুকে যাচ্ছে লোকালয়ে। সড়ক থেকে শুরু করে গলি, বাসা, বাড়ি ডুবে যাচ্ছে কোমর থেকে হাঁটু পানিতে।

শনিবার দুপুরে নগরের বাদুরতলা, কাপাসগোলা, চকবাজার এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে কোথাও হাঁটু থেকে কোমর সমান পানিতে ভাসছে এলাকাগুলো।

চসিকের এক কর্মকর্তা সিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা সকাল ৭টায় জামালখান এলাকায় একটি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছি। সেটা শেষে জিইসি হয়ে দুই নম্বর গেট এলাকায় জলাবদ্ধতার চিত্র দেখতে গিয়ে আমাদের গাড়ি আটকে গিয়েছিল। বহদ্দারহাট পুলিশ বক্স, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ এলাকায় নালার ময়লা খালের সড়কে তুলে রেখেছে জলাবদ্ধতা নিরসন কমিটি।’

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক ও সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী জানান, নগরের যেসব এলাকায় জলজট সৃষ্টি হয়েছে সেগুলোতে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনীর কুইক রেসপন্স টিম। একইভাবে পাল্লা দিয়ে পরিচ্ছন্নকর্মী নামানো হয়েছে বলে দাবি করেছে চসিক।

চসিকের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরী সিভয়েসকে বলেন, ‘চকবাজার পুরান চারতলা পানিতে ডুবে গেছে। সেই এলাকায় প্রায় ৩০ জনের একটি টিম কাজ করেছে।’

শনিবার দুপুরে বহদ্দারহাট এলাকার চাক্তাই খালের অংশে দেখা গেছে, শিট ফাইলের পাশে গড়া মাটির বাঁধ সরানো কাজ করছে শ্রমিকরা। সিডিএ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খালের দু’পাশের রিটার্নিং ওয়াল করার জন্য বিভিন্ন খালের অংশে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। খালের দু’পাশে বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষায় দেওয়া হয়েছে এসব শিট ফাইল। প্রয়োজন অনুসারে ৬ থেকে ১২ মিটার পর্যন্ত শিট ফাইলে গাঁথুনি দেওয়া হয়েছে। বহদ্দারহাট এলাকার চাক্তাই খালের অংশে কর্তব্যরত শ্রমিকরা জানান, বর্ষা মৌসুমকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন আগ থেকে শিট ফাইলগুলোর পাশে গড়া এসব মাটির বাঁধ সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম প্রধান আবহাওয়া কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ ফরিদ আহমেদ সিভয়েসকে বলেন, ‘শনিবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এটা অতিভারী বৃষ্টি। আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও চট্টগ্রামে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।’

-সিভয়েস/এপি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়