Cvoice24.com

সেতুমন্ত্রী বললেন মেট্রোরেল— চসিকের খাতায় মেট্রোরেলের সাথে মনোরেলও 

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১:৫০, ২১ জুন ২০২১
সেতুমন্ত্রী বললেন মেট্রোরেল— চসিকের খাতায় মেট্রোরেলের সাথে মনোরেলও 

যানজটে বেহাল দশা চট্টগ্রাম নগরের সড়কে। বিশেষ করে সন্ধ্যায় বন্দর হয়ে ইজিজেড,পতেঙ্গা কিংবা আগ্রাবাদে তীব্র যানজটে কেটে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। চট্টগ্রামের উত্তরাংশ কালুরঘাট, মোহরা তারও আগে চান্দগাঁওয়ের দিকেও আছে যানজটের মারাত্মক ভোগান্তি। চলাফেরায় স্বস্তি ফেরাতে সবশেষ ২০১৯ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রাম নগরের সাড়ে ৫৪ কিলোমিটার জুড়ে মেট্রোরেল স্থাপনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। 

এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ১৯ জুন চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ চট্টগ্রাম মহানগরের ভার্চুয়াল সম্মেলনে বিষয়টি আবার স্মরণ করে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এ আশ্বাস দেওয়া হলেও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশ ‘র (চসিক)কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নাকি মনোরেল করা হবে তা নিয়ে চুলছেড়া বিশ্লেষণ চলছে। নগরবাসীর স্বার্থে যা ভালো হবে সেটাই করা হবে।

মূলত ২০১৯ সালে নগরের কালুরঘাট সেতু থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কে মেট্রোরেল ট্রানজিট (এমআরটি) প্রকল্প বাস্তবায়নে সমীক্ষা তৈরী করে চসিক। এরই ধারাবাহিকতায় মেট্রোরেলের পথে হাটছিল সংস্থাটি। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে চীনা প্রতিষ্ঠান উইহায় ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিক এন্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেটিভ কোম্পানি লিমিটেড ও চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের একটি টিম চট্টগ্রাম নগরে মনোরেলের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। 

চায়না প্রতিষ্ঠাটি দাবি করছে, মেট্রোরেলের চেয়ে ৪০ শতাংশ সাশ্রয়ে মনোরেল করা যায়। দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে মনোরেল স্থাপন করে চালু করা সম্ভব। এছাড়া ব্যাপক জায়গার যেমন প্রয়োজন হয়না তেমনি স্থাপনার ভেতর দিয়েও লাইনটি স্থাপন করা যায়। মনোরেলে চায়না ব্যয় ও ব্যবস্থাপনার আগ্রহের কথাও জানায় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। পরে ৮ জুন আবারও এ ইস্যুতে চসিক মেয়র রেজাউলের দ্বারস্থ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

চসিকের প্রকৌশলীরা বলছেন, মেট্রোরেলের একটি সমীক্ষা প্রস্তুত থাকলেও জটিল এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে হাটার আগে মেট্রোরেল না’কি মনোরেল করা হবে তা নিয়ে বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা হচ্ছে। এরই মধ্যে চায়না প্রতিষ্ঠানটিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে মনোরেল ও মেট্রোরেলের জন্য পৃথক দু’টি সমীক্ষা রিপোর্টের জন্য। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর মার্চের দিকে পৃথক দু’টি সমীক্ষা রিপোর্ট দেবে সংস্থাটি। তাদের সমীক্ষা রিপোর্ট পেলে বিভিন্ন বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ করবে চসিক। তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে চট্টগ্রামে মনোরেল না’কি মেট্রোরেলই হচ্ছে।

চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম সিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা চায়না প্রতিষ্ঠানটিকে মনোরেল এবং মেট্রোরেল দুটোরই ফিজিবিলিটি স্টাডি দিতে বলেছি। তার ভিত্তিতে সবার সাথে কথা বলে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। চট্টগ্রামের জন্য যেটা উপযোগী সেটাই করা হবে। এটা মেট্রোরেল কিংবা মনোরেলও হতে পারে।’

মনোরেল এবং মেট্রোরেলের মধ্যে পার্থক্য

মনোরেল এবং মেট্রোরেল বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে দ্রুত ও যানজটমুক্ত মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ দু’টি ট্রেনই একটি রেলপথে একসাথে বিপুল সংখ্যক লোককে পরিবহণে সক্ষম। ধারণ ক্ষমতার দিক থেকে, মেট্রোরেল হাজার হাজার লোককে বহন করতে পারে যেখানে প্রায় ৭০০ কিংবা সামান্য বেশি ধারণক্ষমতাসহ মনোরেল অনেক ছোট। মেট্রোরেল মনোরেলের চেয়ে অনেক দ্রুতগামী তবে মেট্রোরেল চলতে দুটি রেল ব্যবহার করে। মনোরেল কেবল একটি রেল ব্যবহার করে। মনোরেলগুলি সংক্ষিপ্ত, যানজটে রাস্তায়ও ভ্রমণ করতে পারে যেখানে মেট্রোরেল উপচে পড়া ভিড়, ব্যস্ত রাস্তায় ভ্রমণ করতে সক্ষম হয় না।
মনোরেল তার ছোট আকারের হওয়ার কারণে চলাচলে অল্প জায়গা প্রয়োজন।

-সিভয়েস/এপি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়

: