Cvoice24.com

টাইগারপাস : এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’র নতুন ‘আপদ’ চসিক 

আসিফ পিনন

প্রকাশিত: ০০:০৮, ২২ জুন ২০২১
টাইগারপাস : এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’র নতুন ‘আপদ’ চসিক 

চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ চলছে। যা পাহাড় না কেটেই লালখান বাজার এলাকায় শুরু হওয়া আখতারুজামান ফ্লাইওভারকে যুক্ত করবে এয়ারপোর্ট সড়কে। তবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষের (সিডিএ) কতৃক বাস্তবায়নধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের লালখানবাজার অংশে ফ্লাইওভার নির্মাণ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)।

সোমবার (২১ জুন) আপত্তি জানিয়ে সিডিএ চেয়্যারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে চসিকের প্রকৌশল বিভাগ। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজ্জামেল হক স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে— ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসেওয়ে প্রকল্পের অধীনে লালখান বাজার ফ্লাইওভার নির্মাণ হলে লালখান বাজারের সড়কের দৃষ্টিনন্দন পাহাড় দু’টির সৌন্দার্য মলিন হবে। সেখানে ফ্লাইওভার নির্মাণ না করে সমতলে সড়কটি সংযুক্ত করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।’ 

কিন্তু সিডিএ’র সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওই অংশে পাহাড় না কেটে ফ্লাইওভার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ওই অংশে ফ্লাইওভারের উচ্চতা ধরা হয়েছৈ প্রায় ৩০ ফুট। যার জন্য করা হয়েছে নতুন ডিজাইন। নতুন ডিজাইনে বারিক বিল্ডিং থেকে আসা চার লেনের ফ্লাইওভার দেওয়ানহাটে ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রাংক রোডে নির্মিত ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে দেওয়ানহাট ওভারব্রিজের পশ্চিম পাশ দিয়ে এসে টাইগারপাস পার হয়ে বর্তমানে সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়ের রাস্তার সামনে পৌঁছাবে। চার লেনের এই ফ্লাইওভার পাহাড়ের দিকে না গিয়ে রাস্তার মাঝখানে থাকবে। পিলারও রাস্তার মাঝখানে হবে। 

সিটি কর্পোরেশনের কার্যালয়ের রাস্তা পর্যন্ত পৌঁছার পর চার লেনের ফ্লাইওভারের দুই লেন ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির আগে রাস্তায় নেমে যাবে। বাকি দুই লেন রাস্তার মাঝখান দিয়ে গিয়ে ওয়াসা মোড়ে বিদ্যমান আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের সাথে যুক্ত হবে। এতে বিমানবন্দর রোড ধরে আসা গাড়িগুলো সড়ক পথে অল্প পথ গিয়ে প্রয়োজনে আবারো ফ্লাইওভারে উঠবে কিংবা নিচ দিয়ে চলে যাবে। এই পয়েন্টে ফ্লাইওভারে ওঠা গাড়িগুলোর জন্য রাস্তা ডেডিকেটেড করে দেওয়া হবে।

চসিক ও সিডিএ’র প্রকৌশলীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৮ জুন সিডিএ ও চসিকের সমন্বয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পাহাড়ের সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রেখে এবং পাহাড় না কেটে কিভাবে লালখানবাজার থেকে টাইগারপাস অংশে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সিএমপির (ট্রাফিক) অতিরিক্ত কমিশনার শ্যামল কুমার নাথ, সিডিএ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সিএটিএস-এমআইএসটি’র বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান।

প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান সিভয়েসকে বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ প্যানেলের পরামর্শ মতে কোন ধরণের পাহাড় না কেটে এবং পাহাড়ের সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রেখে সেই অংশে ফ্লাইওভার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন চসিকের যদি এ বিষয়ে আপত্তি থাকে তাহলে সেটা উধর্ধতন কতৃপক্ষ দেখবে।’ 

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মো. মোজাম্মেল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ করেন নি তিনি। এমনকি নাম্বারে ম্যাসেজ পাঠিয়ে মোজ্জামেল হকের বক্তব্য জানা  যায়নি।

এদিকে সিডিএ সূত্রে জানা গেছে, এলাকাভেদে ৩০ থেকে ৪০ ফুট উচ্চতায় নির্মাণ হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। সিডিএ’র বিশেষজ্ঞ টিমের পরামর্শে লালখান বাজার অংশে এ  ফ্লাইওভারের উচ্চতা হবে ৩০ ফুট।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম শহরের শিল্পাঞ্চল (ফৌজদারহাট শিল্পাঞ্চল, নাসিরাবাদ শিল্পাঞ্চল ও কালুরঘাট শিল্পাঞ্চল) ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার হতে শাহ্ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৫০  কি. মি. দৈর্ঘ্য ও ১৬ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থ বিশিষ্ট এ ফ্লাইওভারটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়