Cvoice24.com

গণরোষ-আইনি জটিলতায় বন্ধ হচ্ছে রেলওয়ের হাসপাতাল নির্মাণ?

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:০৭, ১৫ জুলাই ২০২১
গণরোষ-আইনি জটিলতায় বন্ধ হচ্ছে রেলওয়ের হাসপাতাল নির্মাণ?

হাসপাতালের নকশা।

চিকিৎসা সেবার বেহাল দশা চট্টগ্রামে। ভালো চিকিৎসা সেবা পেতে চট্টগ্রামের বাসিন্দারা ছুটে যান রাজধানী ঢাকা কিংবা দেশের বাইরে। সম্প্রতি চট্টগ্রামে হাতে গোনা দুয়েকটি আধুনিক হাসপাতাল গড়ে উঠলেও নগরবাসীর অভিযোগ— চিকিৎসা সেবার নামে একচেটিয়া ব্যবসা করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। 

এমন বাস্তবতায় বড় লোকদের জন্য চট্টগ্রামের সিআরবির গোয়ালপাড়া এলাকায় ‘সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব চুক্তির আওতায় ৫০০ শয্যার আধুনিক হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে সিআরবির ঐতিহ্য রক্ষা ও পরিবেশের ক্ষতি সাধনের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ও রাজনীতিবিদরা।  

সরকারি দলের দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদরা স্পষ্ট করে বলছেন না, প্রস্তাবিত স্থানে হাসপাতাল হবে নাকি হবে না। তারা সকলেই ভিন্ন সুরে অভিন্ন কথাই বলে যাচ্ছেন। তা হলো— ‘প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ বান্ধব। হাসপাতাল হবে কিনা সে বিষয়ে তিনিই সিদ্ধান্ত দেবেন।’ রেলমন্ত্রী নির্মাণের পক্ষে অনঢ় থাকলেও দিন যতই যাচ্ছে ততই হাসপাতাল বিরোধী আন্দোলন তীব্র হচ্ছে। 

একদিকে গণরোষ অন্যদিকে প্রস্তাবিত স্থানে হাসপাতাল নির্মাণ নিয়ে সরকারের আরেক সংস্থা সিডিএ’র আইনের ফাঁকফোক। এই দুই কারণেই কি আটকে যাচ্ছে প্রস্তাবিত রেলওয়ে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল?

কেননা, ১৯৯৫ সালে জাতিসংঘের সহযোগিতায় প্রণিত মহাপরিকল্পনায় (মাস্টারপ্ল্যান) সিআরবিকে (শিরিষতলা, রেলওয়ের লাল দালান, গোয়ালপাড়া ও বাটালি হিল) স্পেশাল কন্ট্রোল জোনে রাখা হয়েছে। এ জোনকে তিন ভাবে উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এর প্রথমটি হচ্ছে স্ট্র্যাটেজিক ওপেন স্পেস। সিআরবিকে এই প্রথম ক্যাটাগরিতে সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ এই খোলা জায়গাকে সুপরিকল্পিতভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। কিভাবে কোন গাইডলাইন অনুযায়ী সংরক্ষণ করতে হবে তা মাস্টারপ্ল্যানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে।

একইভাবে মাস্টারপ্ল্যানের বিস্তারিত রূপ ড্যাপে সিআরবিকে সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে।

এটি সাংস্কৃতিক এবং পরিবেশগত সংরক্ষিত এলাকা। এই এলাকাকে সংরক্ষণ করতে ড্যাপে আটটি সুপারিশ করা হয়েছে। এরমধ্যে স্পষ্ট বলা আছে, এই এলাকায় কোন বাণিজ্যিক ব্যবহার ও অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের জন্য অনুমোদন দেওয়া যাবে না।

এ এলাকায় ভূমি ইজারা, ব্যবহার করতে হলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) গঠিত নগর উন্নয়ন কমিটির স্পেশাল এনওসি (বিশেষ ছাড়পত্র) নিতে হবে।   

বাংলাদেশ সংবিধানের ২য় ভাগের ২৪ ধারা অনুযায়ী ঐতিহ্যবাহী সিআরবি সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষিত। সেখানে স্পষ্ট করেই বলা রয়েছে— ‘খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার হিসাবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন করা যাইবে না বা উক্তরূপ জায়গা অন্য কোনভাবে ব্যবহার করা যাইবে না বা অনুরূপ ব্যবহারের জন্য ভাড়া, ইজারা বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তর করা যাইবে না। ব্যাখ্যা- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোন উদ্যানের মৌলিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট হয় এইরূপে উহার বৃক্ষরাজি নিধনকে উদ্যানটির শ্রেণি পরিবর্তনরূপে গণ্য করা হইবে৷’

পাশাপাশি ‘জাতীয় পরিবেশ নীতি ২০১৮’ এর ৩.১৭ ধারায় আবাসন, গৃহায়ণ ও নগরায়নে স্পষ্টভাবে বলা আছে, ‘সারা দেশে খেলার মাঠ, পার্ক, বাগান, নার্সারি, উন্মুক্তস্থান ও ঐতিহ্যবাহী প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাসমূহ সংরক্ষণে গ্রহণযোগ্য মানদণ্ড অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।’ 

গত কদিন ধরে তুমুল গণ আন্দোলনের পাশাপাশি সরকারি এসব আইনের ফাঁকফোকরে পড়ে এ হাসপাতাল নির্মাণ বন্ধ হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন খোদ রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা।

ইতোমেধ্যে গতকাল বুধবার (১৪ জুলাই) ৭ দিনের সময় দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রেল সচিব, রেলওয়ের ডিজি, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল জোনের জিএম, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটির সিইও, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যন ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়। বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসানের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম এ নোটিশ দেন।

জানা গেছে, চট্টগ্রামে হাসপাতাল নির্মাণে এ বাধা বিপত্তির কথা শুনে অসন্তুষ্ট হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেননা এই প্রকল্পটি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনেই পরিচালিত হয়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও স্পষ্ট করে সরকারিভাবে কোনও বক্তব্য বা বিবৃতি আসেনি সরকারের পক্ষ থেকে। গত বুধবার রেলমন্ত্রী সিভয়েসকে জানিয়েছিলেন, ‘প্রস্তাবিত স্থানেই হাসপাতাল হবে। এতে কোনও সমস্যা নেই। কারো কোনও দাবি থাকলে তা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকেই জানাতে পারেন।’ 

চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের মনোভাব জানার চেষ্টা করা হয়েছে সিভয়েসের পক্ষ থেকে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘনিষ্ট সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আন্দোলনের ধরন দেখে অসন্তুষ্ট সরকারের শীর্ষ পর্যায়। তবে কোনও অভিযোগ থাকলে তা সুন্দর উপায়ে তিনি জানতে চান ও আন্দোলনকারীরাও জানতে পারতেন। এরপরও যদি চট্টগ্রামের মানুষ আন্দোলন অব্যাহত রাখে মানে হাসপাতাল না চান, তাহলে চট্টগ্রামে হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা নেই বলে মত এসেছে শীর্ষ পর্যায় থেকে। এই আন্দোলনে নানা শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে বিএনপির আন্দোলনের বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে আরও কদিন পর্যবেক্ষণের পর সরকারিভাবে সুষ্পষ্ট ঘোষণা আসবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। 

সিআরবি ইস্যুতে চট্টগ্রামের কোনও নেতাকে এখনও দায়িত্ব দেয়নি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। বিষয়টি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সেখানে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতাদের অবস্থানও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সবাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে যখন তাকিয়ে তখন রেলওয়েও বলছে একই কথা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক এক রেল কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের কোন গরজ পড়েনি ঝামেলা করে হাসপাতাল করতে। এখানে আমরা সরকারের আদেশ বাস্তবায়ন করছি মাত্র। সরকারি সিদ্ধান্ত হচ্ছে, প্রস্তাবিত স্থানেই হাসপাতাল হবে। সেভাবেই আমরা কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। যদি সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে মানা করা হয় তাহলে হবে না।’ 

যদিও চট্টগ্রাম ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেডের জিএম (কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স) কায়েস খলিল খান সিভয়েসকে বলেন, ‘আন্দোলন নিয়ে আমাদের কোনও মাথা ব্যাথা নেই। আমরা আমাদের কাজ এগিয়ে নিচ্ছি। বর্তমানে ডিজাইন তৈরিসহ নানা কাজ করছি। যথা সময়ে আমরা নির্মাণ কাজ শুরু করব।’ 

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কোন বার্তা দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নাহ। আমাদের সাথে এসব নিয়ে কোন কথা হয়নি। এই হাসপাতালের উদ্যোক্তা কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশীপ (পিপিপি) প্রকল্পটি কিন্তু সরাসরি পিএম অফিস থেকেই পরিচালিত হয়। তাই বিষয়টি নিশ্চিই তারা অবগত আছে। আমরা যথাযথ নিয়ম মেনে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এটির নির্মাণ কাজ পেয়েছি। ইতোমধ্যে সাত কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছি।’

পরিবেশের ক্ষতির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরিবেশের ক্ষতি না হয় মতই ডিজাইন করা হচ্ছে। গাছ যেভাবে আছে সেভাবে থাকবে। নতুন করে কিছু গাছ রোপণ করা হবে। অহেতুক অপ্রচার করে লাভ নেই। এরপরও আমরা এখানে সেকেন্ডপার্টি, প্রথম পার্টি সরকার। এখনকার পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারই সিদ্ধান্ত নিবে ফাইনালি। তবে আমরা আমাদের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’

চট্টগ্রাম নগরের বুকে এক টুকরো সুবজে ঘেরা সিআরবি এলাকায় আধুনিক হাসপাতালের নির্মাণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচী চলছে সমানতালে। সেখানে সুর মিলিয়েছেন চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতারাও। 

তারা বলছেন, ‘সিআরবিতে হাসপাতাল হলে হুমকিতে পড়বে জীববৈচিত্র্য। তাছাড়া হাসপাতাল বর্জ্য দূষিত হবে পুরো সবুজ এলাকা। শতবর্ষী গাছ কাটার কড়া সমালোচনা, সিআরবিতে পহেলা বৈশাখ উৎযাপন বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ চট্টগ্রামে ঐতিহ্য বাঁচাতে হাসপাতালের বিরুদ্ধে নানা যুক্তি তুলে ধরছেন তারা। পাশাপাশি নগরের ‘হেরিটেজ জোন’ হিসেবে পরিচিত এলাকায় হাসপাতালের অনুমতি দেওয়া নিয়ে আপত্তি আছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ)।

চট্টগ্রামের অন্যতম দুটি সেবা সংস্থা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করেছেন সংস্থা দুটি। এরই মধ্যে হাসপাতাল নির্মাণ বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর, সিডিএকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করার ঘোষণা দিয়েছে চসিক। বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) পরিবেশ উন্নয়ন ও সুরক্ষা স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্বান্ত নেয় চসিক। সিটি মেয়র রেজাউল করিমও বলেছেন, প্রয়োজনে সিটি করপোরেশন থেকে জায়গা দিবেন তবুও প্রস্তাবিত স্থানে হাসপাতাল চান না তিনি। 

অন্যদিকে সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, `আমাদের মাস্টারপ্ল্যানে সিডিএ হেরিটেজ জোন হিসেবে আছে। সংরক্ষিত এলাকা। আমরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোনো বাণিজ্যিক স্থাপনার অনুমোদন দেব না। হেরিটেজ জোনে কর্মাশিয়াল কিছু করার সুযোগ নেই।‘

তবে রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, কেউ উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে এখানে হাসপাতাল গড়ে তোলার বিরুদ্ধে সবাইকে ক্ষেপিয়ে তুলেছে। কেউ বুঝে, কেউ না বুঝে হাসপাতাল গড়ে তোলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এখানে একেক পক্ষের একেক স্বার্থ জড়িত থাকতে পারে। 

প্রকল্প পরিচালক ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান ইঞ্জিনিয়ার (সেতু) আহসান জাবির সিভয়েসকে বলেন, ‘আমাদের তালিকা অনুযায়ী সেখানে ঘর বরাদ্দ ছিল কেবল ৮টি পরিবারের জন্য। কিন্তু তাদের বাইরেও অবৈধভাবে বসবাস করছিল ৫০টির বেশি পরিবার। অনেকের দোকানসহ ব্যবসা বাণিজ্য ছিল। এদের সব উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রথম দফায় বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানকে ২ দশমিক ৪২ একর জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। দ্বিতীয় দফায় ৩ দশমিক ৫৮ একর জমি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। যারা অবৈধ দখলদার তারা হাসপাতালের বিরুদ্ধে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। যেখানে হাসপাতাল হচ্ছে সেখানে এখনও বসতিই আছে। তাহলে আপত্তি উঠছে কেন।?’

পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায়  (পিপিপি) এ হাসপাতালে থাকবে ৫০০ শয্যা ও ১০০ আসনের মেডিকেল কলেজ। তবে প্রকল্পের শুরু প্রথম ৩ বছরে চালু হবে ২৫০ শয্যা। বাকি ২৫০ শয্যা চালু হবে আরও ২ বছর পরে। অর্থাৎ মোট ৫ বছরে চালু হবে বিশেষায়িত  ৫০০ শয্যা। এরপর মেডিকেল কলেজ, মসজিদ, হোস্টেল, স্টাফ কোয়াটারসহ বিভিন্ন সুবিধা চালু করতে সময় লেগে যাবে আরও পরবর্তী ৬ বছর। সবমিলিয়ে আধুনিক হাসপাতালের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে সময় লাগবে ১১ বছর।

হাসপাতালটির ডিজাইনে রয়েছে— প্রায় ২ দশমিক ৪২ একর জমিতে গড়ে তোলা হবে ৫০০ শয্যা, ইউনটিলিটি বিল্ডিং ও হাসপাতাল বিল্ডিং। পরের ফেজে ৩ দশমিক ৫৮ একর জমিতে গড়ে তোলা হবে মসজিদ, মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজ, চিকিৎসক, নার্সদের জন্য পৃথক হোস্টেল। এর বাইরে আরও থাকছে স্টাফ কোয়াটার ও পুরুষ হোস্টেল।

প্রকল্প পরিচালক ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান ইঞ্জিনিয়ার (সেতু) আহসান জাবির সিভয়েসকে বলেন, ‘বাস্তবায়নকারী সংস্থাটি আমাদের কাছে প্রথম দফায় ৩ একর জমি চেয়েছিল। তারা বলেছিলেন ৩ একর জমি দেওয়া গেলে একসাথে ৫০০ বিশেষায়িত  করা যাবে। কিন্তু আমরা তা দিতে পারেনি। প্রথম দফা উচ্ছেদের পর নানা বিভ্রান্তমূলক তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। দায়িত্বশীল অনেকেই বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।’

তিনি জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় ফেজের জন্য প্রয়োজন হবে প্রায় ২ দশমিক ৪২ একর জমি। ভবিষতে প্রয়োজন হবে বাকি ৩ দশমিক ৫৮ একর। সবমিলিয়ে আধুনিক এ হাসপাতালের জন্য প্রয়োজন হবে প্রায় ৬ একর জমি।

সমালোচনার মুখে রেলওয়ে বলছে, শতবর্ষী গাছ শিরিষ তলা ও সাত রাস্তার মোড়ে অবস্থিত দাবি করে এতে বলা হয়েছে, ‘কিন্তু শিরিষ তলা বা সাত রাস্তার মোড় প্রকল্পের নির্ধারিত স্থান নয়। গোয়ালপাড়ায় হাসপাতাল নির্মাণ করা হলে সিআরবি এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বাংলা বর্ষবরণসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কোনরূপ বিঘ্নতা ঘটবে না।’

প্রকল্প পরিচালক আহসান জাবির সিভয়েসকে বলেন,‘এখানে হাসপাতাল বর্জ্যের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এ হাসপাতাল বর্জ্য অপসারণে ইটিপি-এসটিপি প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা রয়েছে। যার পরিচালনা করবে প্রিজম নামের একটি প্রাইভেট কোম্পানি। এ প্রতিষ্ঠানটি ঢাকায় এ পদ্ধতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করছে। তাছাড়া হাসপাতাল নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সুরবানা জুরং। পরিবেশে যেন কোন ক্ষতি না হয় সেভাবেই এটার প্ল্যান করা হয়েছে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়