Cvoice24.com

নষ্ট মেশিন, ওষুধ নেই— তবুও মশা মারতে মাঠে নামবে চসিক

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৫১, ২৬ জুলাই ২০২১
নষ্ট মেশিন, ওষুধ নেই— তবুও মশা মারতে মাঠে নামবে চসিক

চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনার পাশাপাশি বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ। যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ঘুম হারাম চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক)। করোনা প্রতিরোধের পাশাপাশি এবার এডিস মশা নিধনে জরুরি বার্তা দিয়েছেন চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। 

এই লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছে ৬ সদস্যর একটি বিশেষ দল। আগামীকাল মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) থেকে মশক নিধন, সচেতনতা সৃষ্টিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে এ দলটি। চট্টগ্রাম নগরের বাড়িতে বাড়িতে অভিযানে যাবে চসিকের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখানে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলেই জরিমানা গুণতে হবে বাড়ির মালিককে। 

সোমবার (২৬ জুলাই) নগরে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার বিষয়টি মেয়র রেজাউল পরিষদের ৬ষ্ঠ সাধারণ সভায় জোরালো আলোচনায় আসে। 

তবে মশা নিধন নিয়ে যত জোরালো আলোচনায় হোক। উড়ন্ত মশা নিধনে যে ওষুধ (এডাল্ট্রিসাইড) প্রয়োজন তার মজুদ নেই চসিকের কাছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক টিম এখনও পর্যন্ত কার্যকর মশার ওষুধের নাম না পাঠানোর কারণে এ বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছেন চসিকের কর্মকর্তারা। এর আগে মার্চে চট্টগ্রামে ছিটানো ওষুধের মান যাচাইয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মেয়র রেজাউল।

তাছাড়া ৬ষ্ঠ পরিষদের বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নষ্ট পড়ে আছে প্রায় ৩৫টি ফগার মেশিন। মশার ওষুধ ছিটানোর এ মেশিনগুলো নষ্ট থাকার কারণে মশক নিধন কার্যক্রমে ভাটা পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। 

চসিক সূত্রে জানা গেছে, নষ্ট ৩৫টি ফগার মেশিনের মধ্যে ১৮টি সম্প্রতি মেরামত করা হয়। কিন্তু মেরামতের দু’দিন না যেতেই সেগুলো ফের ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ৫ মিনিটের বেশি চালানো যাচ্ছে না এসব মেশিন। 

চসিকের একজন অভিজ্ঞ কাউন্সিলর বলেন, ‘মশা মারার মেশিনের এ ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। ৫ মিনিট থেকে সর্বোচ্চ ৭ মিনিট ব্যবহার করা যায় ফগার মেশিন। এরপর বন্ধ হয়ে যায়।’  এছাড়া আরও প্রায় ৫০টি ফগার মেশিন ভালো আছে বলে জানা গেছে নির্ভরশীল সূত্রে। তবে দায়িত্বশীলরা বলছেন, ৪১টি ওয়ার্ডে একযোগে মশক নিধন কার্যক্রম চালানোর জন্য এসব মেশিন মোটেও পর্যাপ্ত নয়। 

এদিকে চসিকের সদ্য গঠিত ৬ সদস্যর বিশেষ টিমে নেতৃত্ব দেবেন চসিকের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী। চসিক সচিব খালেদ মাহমুদকে রাখা হয়েছে এ টিমে। ওষুধ ও মেশিন স্বল্পতার ব্যাপারে জানতে চাইলে সিভয়েসকে তিনি বলেন, ‘চবি প্রতিনিধি দলের রিপোর্ট পাওয়ার পরে আমরা ওষুধ (এডাল্ট্রিসাইড) কিনবো। আর মেশিনগুলো যদি ঠিক করা না যায় তাহলে নতুন মেশিন কেনা হবে।’ সিভয়েসের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এ মাসের শেষে বা নতুন মাসের শুরুতেই এ রিপোর্ট আমরা হাতে পাবো।’ 

চসিকের শীর্ষ পর্যায় থেকে জানানো হয়েছে, মশক নিধনে মঙ্গলবার থেকেই প্রচারণা শুরু করবে চসিক। এজন্য ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গঠন করা হয়েছে সেচ্ছাসেবী টিম। প্রতি ওয়ার্ডে মাইকিংয়ের পাশাপাশি বাসাবাড়িতে অভিযান চালাবে মোবাইল টিম (ভ্রাম্যমাণ আদালত)। বাড়ির ছাদ, ফুলের টবে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে জরিমানা করা হবে বাড়ির মালিককে। 

তাছাড়া ৬ষ্ঠ পরিষদের বৈঠকে মেয়র রেজাউল বলেন, ‘চট্টগ্রামে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব বিস্তার এখন পর্যন্ত ঢাকার মত প্রকট নয় এবং এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ডেঙ্গু রোগ বিস্তার প্রতিরোধে যে সকল অতীব জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার। তা প্রয়োগ করতে চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের জনবলকে সক্রিয় রাখতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এডিস মশা প্রজননের উৎসে প্রতিষেধক ওষুধ ছিটানো এবং নালা-নর্দমা-খাল ও জলাশয় আবর্জনা মুক্ত রাখতে কাজ চলমান রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে কাউন্সিলরদের নিজ নিজ ওয়ার্ডে তদারকী ও নজরদারীর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’

-সিভয়েস/এপি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়