ফের ‘নাগিন পাহাড় কেটে স্থাপনা তৈরি, পরিবেশের জরিমানা

নগরের বায়েজিদ থানার পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকায় নাগিন পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণ, প্লট তৈরিসহ বিভিন্ন অপরাধে দ্বিতীয় বারের মতো ২৩ জনকে ৩২ লাখ ৪৮ হাজার ৫শ’ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। রোববার (৩ অক্টোবর) শুনানি শেষে এ জরিমানা করা হয় বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী।

পরিবেশ অধিদফতরের তথ্য অনুসারে, নাগিন পাহাড়ের পূর্ব-দক্ষিণ পাশে ১৪শ’ বর্গফুট পাহাড় কেটে ১৩টি ঘর নির্মাণ করায় মোতাহের হোসেনকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা, পূর্ব-দক্ষিণ পাশে ৮শ’ বর্গফুট পাহাড় কেটে একটি টিনশেড ঘর তৈরির দায়ে জহিরুল ইসলামকে ৮০ হাজার টাকা, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে ৩ হাজার ২শ’ বর্গফুট পাহাড় কাটার দায়ে নুরুল আবছার গংকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং দক্ষিণ পাশে ১ হাজার ৫শ’ বর্গফুট পাহাড় কেটে ১২টি টিনশেড ঘর স্থাপনা করার দায়ে নুরুল ইসলামকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। 

নাগিন পাহাড়ের দক্ষিণ পাশে ১ হাজার ৫শ’ বর্গফুট পাহাড় কেটে গ্যারেজ তৈরির দায়ে নুরুল আলম, মো. জাহাঙ্গীর আলম, বদিউল আলম, দিদারুল আলম ও জসিম উদ্দিনকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাহাড়ের পূর্ব-দক্ষিণ পাশে ১২ হাজার ৯৬০ বর্গফুট পাহাড় কেটে ১১ তলা বিল্ডিং করার দায়ে মো. হাবিবউল্লাহ বাহার ও নাসির উদ্দিন গংকে ১২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা, দক্ষিণ পাশে ৮৭৫ বর্গফুট পাহাড় কাটার দায়ে খোকন শিকদারকে ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা এবং পূর্ব-উত্তর পাশে ২ হাজার ৩৫০ বর্গফুট পাহাড় কেটে ৮ তলা ভবন করার দায়ে সাইফুল আলম সুমনকে ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।  

এছাড়া, নাগিন পাহাড়ের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে ১৬শ’ বর্গফুট পাহাড় কেটে ২টি স্থাপনা করার দায়ে মোহাম্মদ শফি উল্লাহসহ ছয়জনকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা, পূর্ব-দক্ষিন পাশে এক হাজার বর্গফুট পাহাড় কেটে ৪ তলা ভবন করায় শহিদ উল্লাহকে ১ লাখ টাকা, দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে ৮শ’ বর্গফুট পাহাড় কাটার দায়ে মোজাম্মেল হককে ৮০ হাজার টাকা, পূর্ব-দক্ষিণ ১৫শ’ বর্গফুট পাহাড় কেটে ৫ তলা ভবন নির্মাণ করায় নুরুল আলমকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ৩ হাজার বর্গফুট পাহাড় কেটে ৭ তলা ভবন নির্মাণ করায় মোহাম্মদ ইছা খান গংকে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর এ কার্যালয়ের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক, জুনিয়র কেমিস্ট মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ও পরিদর্শক মোঃ সাখাওয়াত হোসাইনের নেতৃত্বে নাগিন পাহাড়ে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করে এ ব্যক্তিগণকে শুনানীতে হাজির হবার জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়। আজ শুনানীতে এ ক্ষতিপূরণ আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা তাৎক্ষণিকভাবে আদায় করা হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী বলেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর পরিবেশ অধিদফতর মহানগর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক, জুনিয়র কেমিস্ট ছানোয়ার হোসেন ও পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসাইনের সমন্বয়ে একটি এনফোর্সমেন্ট টিম নাগিন পাহাড় পরিদর্শন করে। পরিদর্শনকালে তারা পাহাড় কাটার সত্যতা পান। তারা পাহাড় কেটে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি করে আসছিলেন। আজকে শুনানিতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। শুনানি শেষে আজ অভিযুক্তদের বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০)-এর ৭ ধারা মোতাবেক জরিমানা করা হয়েছে। 

উল্লেখ্য, নাগিন পাহাড় কেটে স্থাপনা তৈরি করায় ২৬ সেপ্টেম্বর ১৬ জনকে ৩২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

-সিভয়েস/ওয়াইআর/এমএম