Cvoice24.com

দূষণ কমাতে চসিকের ইন্সিনেটর প্ল্যানে পুড়বে মেডিকেল বর্জ্য

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৫৪, ১১ জানুয়ারি ২০২২
দূষণ কমাতে চসিকের ইন্সিনেটর প্ল্যানে পুড়বে মেডিকেল বর্জ্য

চসিকের ‘ইন্সিনেটর প্ল্যান্ট’ উদ্বোধন করছেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী

মেডিকেল বর্জ্য নিষ্কাশন ও বিশোধন করতে ‘ইন্সিনেটর প্ল্যান্ট’ স্থাপন করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) সকালে আনন্দবাজার টিজিতে ইন্সিনেটর প্লান্টের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। 

জাইকার ৩ কোটি ও চসিকের ৬৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আধুনিক ও ধোঁয়াবিহীন এ ইন্সিনেটর প্লান্টটি স্থাপিত হয়েছে। পরিবেশ দূষণ কমাতে ধোঁয়াবিহীন ভাবে নগরের ১৬৩টি সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে সংগৃহীত দৈনিক ৫ টন মেডিকেল বর্জ্য এ প্ল্যান্টটিতে পোড়ানো হবে। 

উদ্বোধনকালে মেয়র বলেন, ‘ইন্সিনেটর প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। সংক্রামক মেডিকেল বর্জ্য নিষ্কাশনে গুরুত্ব দিয়ে ইন্সিনেটর প্লান্ট বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে দৈনিক ৫টন মেডিকেল বর্জ্য ধ্বংস করা যাবে। এটি একটি পরিবেশবান্ধব অত্যাধুনিক ব্যবস্থা। এধরণের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নতুন করে গবেষণার প্রয়োজন নেই। উন্নত শহরগুলোকে অনুসরণ করলেই আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব। 
সরকারি বেসরকারি মেডিকেল, ডায়গনষ্টিক সেন্টার গুলোকে তাদের ব্যবহার্য মেডিকেল বর্জ্য যত্রতত্র না ফেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গাইড লাইন অনুসরণ করে অটোক্লেভ মেশিনের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত করে তা বায়োসেফটিক্যাল ব্যাগে ভরে বর্জ্য সংগ্রহকারীদেরকে দেয়ার জন্য আহবান জানান মেয়র। 

মেয়র আরও বলেন, করোনার এই সময়ে যেভাবে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে তাতে এই ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এছাড়াও শিল্প বর্জ্যরে কিছু অংশ ভাগাড়ে এবং কিছু নালা-নর্দমার মাধ্যমে নদী-সমুদ্রে গিয়ে পড়ে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। প্লান্টটিতে মেডিকেল বর্জ্য পোড়ানো হবে পরিবেশ সম্মত উপায়ে। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ রোধ হবে অন্যদিকে সংগৃহিত মেডিকেল বর্জ্যরে কারণে সংক্রামক রোগ ছড়ায় তাও অনেকাংশে হ্রাস পাবে। চসিককে বর্জ্য বিশোধনের চার্জ দিয়ে চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা মেডিকেল বর্জ্য ধ্বংসে এই প্লান্টটি ব্যবহার করবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনয়নে এই প্লান্টটি যথেষ্ট অবদান রাখবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভিশন ২০৪১’ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করার যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ অচিরেই উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্বমাঝে আবির্ভূত হবে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী বলেন, নগরীর মেডিকেল বর্জ্য বিশোধনে চসিকই দেশে প্রথম ইন্সিনেটর প্লান্ট স্থাপন করল যা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাছে অভিনন্দনযোগ্য একটি প্রয়াস। 

জাইকার চীফ রিপ্রেজেন্টেটিভ হাইয়াকাওয়া ইয়োহো বলেন, জাইকার মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য স্থাপিত ইন্সিনেটর প্লান্ট পরিবেশ সম্মত উপায়ে ধোঁয়াবিহীন চুল্লীর মাধ্যমে বর্জ্য বিশোধন করবে। উচ্চ তাপমাত্রায় এই বর্জ্য বিশোধন করা হবে। 

এই প্লান্টটি পরিচালনা করতে জাইকার বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করবে এবং চসিক সেবকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে ও প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী, যুগ্ম সচিব সবুর হোসেন, জাইকার চীফ রিপ্রেজেন্টেটিভ হাইয়াকাওয়া ইয়োহো, সিনিয়র রিপ্রেজেন্টেটিভ সাইকি তাকাশি, প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর মো. আব্দুল মান্নান, অধ্যাপক মো. ইসমাইল, মো. ইলিয়াস, সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম প্রমুখ।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়