Cvoice24.com

চসিকের পলিথিনমুক্ত তিন মার্কেটের দোকানে দোকানে পলিথিন

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:০৮, ১৫ জানুয়ারি ২০২২
চসিকের পলিথিনমুক্ত তিন মার্কেটের দোকানে দোকানে পলিথিন

শুটকি আর ফলের দোকানে বস্তায় বস্তায় পলিথিন।

গেল বছরের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউরি, চকবাজার কাঁচাবাজার ও আগ্রাবাদ কর্ণফুলী মার্কেটসহ তিনটি কাঁচাবাজারকে পলিথিনমুক্ত ঘোষণা করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। কিন্তু ঘোষণার প্রায় দেড় মাস পার হয়ে গেলেও তিনটি মার্কেটকেই এখনো সম্পূর্ণ পলিথিনমুক্ত করতে পারেনি সংস্থাটি। নির্দেশনা থাকার পরও প্রশাসনের চোখের সামনেই দোকানিরা ব্যবহার করে চলেছে নিষিদ্ধ পলিথিন। যদিও সংস্থাটির দাবি, নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও জরিমানা চলমান রয়েছে।

এদিকে গত মাসে এই তিন মার্কেটে চসিকের চালানো অভিযানগুলো নামে মাত্র বলেই মন্তব্য করছেন নগরবাসী। এ অবস্থায় পলিথিনের উৎপাদন বন্ধ করতে না পারলে কখনোই পলিথিনমুক্ত করা যাবে না বলে মন্তব্য নগরবাসীর।

সরেজমেন গিয়ে দেখা যায়, চসিকের পলিথিনমুক্ত ঘোষিত এসব মার্কেটের ভিতরের কাঁচাবাজারগুলোতে কেবল পলিথিনের সরবরাহ কিংবা ব্যবহার নেই। কিন্তু বাজারে থাকা শুটকি এবং ফল ব্যবসায়ীরা নির্দ্বিধায় ব্যবহার করছে পলিথিন। এছাড়াও মার্কেটের মুখে ও আশপাশের দোকানগুলোতে পলিথিন ব্যাগের ছড়াছড়ি।

তবে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কয়েকটি কাঁচাবাজারে পলিথিন নিষিদ্ধ ঘোষণা দিয়েই নগরকে পলিথিনমুক্ত করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশেজ্ঞরা। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের দাবি— চট্টগ্রামের সকল দোকান, পলিথিনের উৎপাদন, গুদামজাতকরণ ও বিক্রি, সর্বোপরি কারখানা বন্ধ করতে পারলেই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে। একইসঙ্গে নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব হবে বলেও মত তাদের। তবে ক্রেতারা বলছেন, শুধুমাত্র মাছ ও মাংস বিক্রিতে পলিথিন সরবরাহ বন্ধ করেছে ব্যবসায়ীরা। অন্য সবক্ষেত্রে আগের মতো পলিথিন ব্যাগের ছড়াছড়ি রয়েছে।

চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের কর্ণফুলী মার্কেটে বাজার করতে আসা শিউলি বেগম সিভয়েসকে বলেন, ‘শুধু তিনটি মার্কেটে পলিথিন সরবরাহ বন্ধ করলে নগরকে পলিথিন মুক্ত করা সম্ভব নয়। আশপাশের সকল দোকানে পলিথিন ব্যবহার চলছে। আমরা শুধু মাছ-শাকসবজিগুলো কাপড়ের ব্যাগে বহন করছি, অন্য পণ্যগুলোর জন্য পলিথিন ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রত্যেক পণ্যে পলিথিন সরবরাহ বন্ধ করতে পারলেই নগরকে পলিথিনমুক্ত করা সম্ভব।’ 

এদিকে চসিকের দাবি— নগরকে পরিবেশবান্ধব করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সংস্থাটির পরিবেশ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। নগরকে দ্রুত পলিথিনমুক্ত করতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মধ্যে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করে সচেতনতা বাড়িয়েছেন। তবে এতো কিছুর পরেও এর সুফল দেখছে না নগরবাসী।

চসিকের পরিবেশ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি শৈবাল দাশ সুমন সিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা প্রথমে নগরের তিনটি মার্কেটে পলিথিন নিষিদ্ধ করে কাজের সূচনা করেছি। পলিথিন ব্যবহার করলে পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন সচেতনমূলক লিফলেট প্রচার করেছি এবং দোকানদারদের সরাসরি বুঝিয়েছি। আগামী ৩০ জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম মহানগরের কোথাও পণ্য সরবরাহে পলিথিন ব্যবহার যাবে না। নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারসহ সকল পলিথিন গুদামে অভিযান পরিচালনা করে পলিথিনমুক্ত নগর গড়া হবে।’

চট্টগ্রাম মহানগরের পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক সিভয়েসকে বলেন, ‘পলিথিন উৎপাদন মূলত নগরের বাইরে হয়ে থাকে। তবে নগরের কিছু নাম-ঠিকানাবিহীন গুদাম থেকে পুরো মহানগরের দোকানগুলোতে পলিথিনের সরবরাহ করা হয়। বিশেষ করে কোতোয়ালী এলাকার রিয়াজউদ্দিন বাজারে নাম-ঠিকানাবিহীন দোকানের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পলিথিন গুদামজাত করে বিক্রি করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে গত বছর আমরা প্রায় ১৫/২০টি অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করি। পরিবেশ অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সমন্বয়ে আমরা নগরকে পলিথিনমুক্ত করতে নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখবো।’

-সিভয়েস/একে

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়