Cvoice24.com

কঠোর রেলওয়ে: অর্ধেক যাত্রী নিয়েই ট্রেনের যাত্রা, টিকিট পায়নি অনেকে

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:৪৯, ১৫ জানুয়ারি ২০২২
কঠোর রেলওয়ে: অর্ধেক যাত্রী নিয়েই ট্রেনের যাত্রা, টিকিট পায়নি অনেকে

কাউন্টারে টিকিট প্রত্যাশীরা। -ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ অনুযায়ী আজ শনিবার থেকে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে শুরু হয়েছে ট্রেন চলাচল। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে ও সরকারি সিদ্ধান্ত মানাতে কঠোর অবস্থানে ছিল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আজ প্রথম দিনে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া সব ট্রেনই অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করায় টিকিট পায়নি অনেকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকেও অর্ধেক আসনের বিধিনিষেধ মানতে কঠোর ছিল সংশ্লিষ্টরা। তারা স্টেশনে ও ট্রেনের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যারা মাস্ক ছাড়া টিকিট নিতে লাইনে দাঁড়িয়েছে তাদের কাউকেই টিকিট দেয়া হয়নি। কাউন্টারে টিকিট প্রত্যাশীদের জন্য দূরত্ব বজায় রেখে দেওয়া হয়েছে গোল বৃত্ত। এছাড়া আসনের ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়েই প্রতিটি ট্রেন চট্টগ্রাম ছেড়ে গেছে। ট্রেনের ভেতরেও সব যাত্রীদের মুখে মাস্ক নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্যবিধির কারণে বাসে না গিয়ে ট্রেনে যেতে চেয়েছিলেন যাত্রীরা। কারণ, বাসে যত আসন তত যাত্রী নেওয়ার কথা হলেও ট্রেনে আসনের অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। তাই যাত্রীরা ট্রেনমুখী ছিলেন বেশি। তবে কাউন্টার ও অ্যাপসে মিলেই ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি করার নির্দেশনা রেলওয়ের। তাই একদিকে কাউন্টারে টিকিট পেতে যাত্রীদের প্রতিযোগিতা ও অন্যদিকে আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচলের কারণে অনেকে ফিরেছেন হতাশ হয়ে।

টিকিটের তুলনায় আগ্রহী মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে বিক্রি হয়ে যায় কয়েকটি ট্রেনের টিকিট। আর এতে অনেক যাত্রীরাই টিকিট পাননি। আর যারা টিকিট পেয়েছেন তারা ছিলেন খুশিতে উচ্ছ্বসিত।

এদিকে জরুরি প্রয়োজনে সিলেট যাবেন চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা হাসান কুতুব। তবে অর্ধেক আসনের টিকিট বিক্রি করায় তিনি অনলাইনে বা কাউন্টার কোনো দিক থেকেই টিকিট নিতে পারেননি। তাই টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে ছাড়েন চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন। 

তিনি সিভেয়েসকে বলেন, ‘অফিসের একটি জরুরি কাজে সিলেট যেতে হচ্ছিলো। তবে অনলাইনে এবং কাউন্টারে এসেও টিকিটের ব্যবস্থা করতে পারিনি। কি আর করার বাসে করেই যেতে হবে।’ তবে স্বাস্থ্যবিধির কথা চিন্তা করেই ট্রেনে করে যেতে চেয়েছিলেন বলে জানান তিনি। তবে শুধু হাসান কুতুব নন; ওনার মতো অনেকেই অনলাইন ও কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে স্টেশন ছেড়ে গেছেন।

চট্টগ্রাম রেলস্টেশন ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী সিভয়েসকে বলেন, ‘সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ অনুযায়ী আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়েই ট্রেন ছাড়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানাতে যাত্রীদেরকে মাইকিং করে জানানো হয়েছে। যাদের মুখে মাস্ক ছিল না তাদের কাউকে ভেতরে যেতে দেওয়া হয়নি। এছাড়া মাস্ক না থাকায় অনেককে টিকিট কাউন্টারের সামনে লাইনেও দাঁড়াতে দেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’

তিনি আরও বলেন, আজ প্রথমদিন হিসেবে অনেককে সর্তকও করা হয়েছে। যাদের মাস্ক ছিল না তারা আবার বাইরে গিয়ে মাস্ক কিনে তারপর ভেতরে প্রবেশ করেছে।’ 

এদিকে টিকিট বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) আনসার আলী সিভয়েসকে বলেন, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া প্রথমদিনে অনলাইনের ২৫ শতাংশ ও কাউন্টারের ২৫ শতাংশ টিকিট সম্পূর্ণ বিক্রি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ১০ জানুয়ারি করোনা মহামারি প্রতিরোধে ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এতে বলা হয়েছিল, ট্রেন, বাস এবং লঞ্চে অর্ধেক যাত্রী নিতে হবে। তবে পরে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে গত শনিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে গণপরিবহনে ‘যত আসন, তত যাত্রী’ নিয়ে চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হলেও বহাল থাকে ট্রেন ও লঞ্চের জন্য।

-সিভয়েস/এমএম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়