Cvoice24.com

চার মাসেও ধূমপানমুক্ত হয়নি চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন 

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৫৭, ৩১ মে ২০২২
চার মাসেও ধূমপানমুক্ত হয়নি চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন 

ধূমপানে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না সাধারণ যাত্রীরা।

রেল‌ওয়ে স্টেশন, প্লাটফর্ম এবং ট্রেনের কামরা- কোথায় ধূমপান করা যাবে না—এমন নির্দেশনা দিয়েছিলেন রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির ৯ তারিখে রেলপথ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত ‘ইনিশিয়েটিভ টু মেক বাংলাদেশ রেলওয়ে টোবাকো ফ্রি’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি এ নির্দেশনা দেন। এসময় তিনি কেউ আইন অমান্য করে ধূমপান বা তামাক গ্রহণ করলে শাস্তির আওতায় আনার হুঁশিয়ারিও দেন। তবে মন্ত্রীর এ নির্দেশনা-হুঁশিয়ারি এখনো ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ। এখনো পর্যন্ত চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে তামাকজাত পণ্য। ব্যবহারও হচ্ছে পুরো স্টেশনজুড়ে।

মঙ্গলবার (৩১ মে) চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, পান, বিড়ি, সিগারেট দেদারসে বিক্রি হচ্ছে প্ল্যাটফর্মের ভ্যান্ডার দোকানগুলোতে। কেউ প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন, কেউবা লুকিয়ে। স্টেশনের ৪-৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে স্থায়ী দোকান ৪টি আর ৯টি ভ্যান্ডারি দোকান। ১৩টি দোকানেই বিক্রি হচ্ছে তামাকজাতীয় পণ্য।

পরিচয় গোপন রেখে সিগারেট কিনতে চাইলে এক দোকানি অকপটে লুকানো বাক্স থেকে বের করে দেয়। পরে দোকান থেকে সরে গিয়ে সিগারেট পানের অনুরোধ করে ওই দোকানি।

বিক্রির পাশাপাশি ধূমপানে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না সাধারণ যাত্রীরা। কেউবা প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে, আবার কাউকে রেল লাইনে বসে ধূমপান করছে।

স্টেশনজুড়ে ধূমপান এবং তামাকজাত পণ্য বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ব্যবস্থা নেওয়ার কোন নির্দেশনা নেই স্টেশনের নিরাপত্তায় থাকা রেলওয়ে পুলিশের কাছে। 

চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের ওসি নাজিম উদ্দিন বলেন,  ‘নিষেধাজ্ঞার পরেও অনেকটা খোলামেলা অবস্থায় বিক্রি ও যাত্রীদের ধূমপান করতে দেখা যায়।‘ ধূমপান নিয়ন্ত্রণে রেলওয়ে পুলিশের ভূমিকা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কাছে কোন নির্দেশনা নেই। যদি রেলওয়ে ম্যাজিস্ট্রেট অভিযানে আসে আমরা সহযোগিতা করি।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার রতন কুমার সি‌ভয়েস‌কে বলে, ‘তাদের অনেকবার নিষেধ করেছি। তার পরেও এরা মানছে না। আজকে গিয়ে শেষবারের মতো সাবধান করে আসবো। পরে না মানলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করে দিব। তাছাড়া , সাধারণ যাত্রীদের সচেতনতা জরুরি। সাধারণ যাত্রীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করছি।’

রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ইতি ধর সিভয়েসকে বলেন,  আমরা গত দুই মাসের দফায় দফায় প্ল্যাটফর্মে থাকা দোকানে অভিযান চালিয়েছি। কোন দোকানে সিগারেট পাওয়া গেল সাথে সাথে জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। এরপরেও তাদের তামকজাতীয় পণ্য বিক্রি থেকে বিরত করা যাচ্ছে না। আবার অনেক যাত্রী সঙ্গে করে নিয়ে আসছে। 

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা দি ইউনিয়নের অর্থায়নে সম্পূর্ণ অনুদানের ভিত্তিতে রেলপথ মন্ত্রণালয় এ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে শিশু, নারী, অসুস্থ ব্যক্তি, গর্ভবতী নারীসহ অধূমপায়ী যাত্রীদের পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি হতে সুরক্ষা দেওয়া। পানের পিক মুক্ত স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রেল স্টেশন ও ট্রেনের অভ্যন্তরে পান- জর্দা/ সাদাপাতার ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ। তামাক ও ধূমপানমুক্ত রেলওয়ে গড়ে তোলা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এ প্রকল্প সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

-সিভয়েস/ডিসি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়