Cvoice24.com

চসিকের পিডিকে ঠিকাদারদের মারধর/
মামলার অগ্রগতি জানতে চায় মন্ত্রণালয়

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:২৩, ২১ মার্চ ২০২৩
মামলার অগ্রগতি জানতে চায় মন্ত্রণালয়

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আড়াই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালককে ঠিকাদারদের মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এজহারনামীয় ১১ জনকে আসামি করা মামলা করা হয়। এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন পাঁচ জন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ ঠিকাদারের ১২ প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্তও করে চসিক। কিন্তু মারধরের শিকার প্রকল্প পরিচালক ফিরতে চান না সিটি করপোরেশনে। এবার এ ঘটনার দেড় মাসেরও বেশি সময় পর মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। 

চসিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মার্চ মামলার সর্বশেষ অগ্রগতি জানতে চেয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে চিঠি দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম। চিঠিতে মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়কে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে, এ মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারমধ্যে ঘটনার পরদিন (৩০ জানুয়ারি) চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন মামলার এজহারের বাইরে। ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যে মামলার প্রধান আসামি ঠিকাদার সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বাকি আসামিরা গ্রেপ্তার না হলেও উচ্চ আদালত থেকে কেউ কেউ নিয়েছেন আগাম জামিনও। 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচ আসামির মধ্যে জামিনে আছেন এজাহার বহির্ভূত আসামি মাহমুদুল হক। বাকিরা কারাগারে। এছাড়াও উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন আরও চারজন। তারমধ্যে ঠিকাদার মামলার ১০ নম্বর আসামি আশীষ বাবু এবং মামলার ২ নম্বর আসামি মোহাম্মদ ফেরদৌসের নাম জানা গেছে। তবে জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন আসামি আশীষ বাবু। কিন্তু জামিন নামঞ্জুর করে আদালত তাকে কারগারে পাঠিয়েছেন। 

মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম সিভয়েসকে বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা মামলা করেছি। পাঁচজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এরমধ্যে একজনকে অসুস্থতাজনিত কারণে জামিন দেওয়া হয়েছে। আজকেও একজন আত্মসমপর্ণ করে। কিন্তু আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এরমধ্যে ২৮ তারিখে আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করবেন।’                                                                                                                                                                               
একই বিষয়ে নগর গোয়েন্দা বিভাগের (উত্তর-দক্ষিণ) উপ-পুলিশ কমিশনার নিহাদ আদনান তাইয়ান সিভয়েসকে বলেন, ‘আমরা সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করেছি। স্বাক্ষ্য প্রমাণও যোগাড় হচ্ছে আশা করছি কিছু দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এ মামলার এজাহারনামীয় আসামি ১১ জনের মধ্যে ৫জন গ্রেপ্তার হয়েছে। তারমধ্যে একজন এজাহার বহির্ভূত। উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন তিন জন।’

প্রসঙ্গত, আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প গত বছরের ৪ জানুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে গত বছরের ১৪ আগস্ট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম ইয়াজদানীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত ২৯ জানুয়ারি বিকেলে প্রকল্প পরিচালকের কক্ষে ঢুকে তাঁকে মারধর করেন ঠিকাদাররা। এ সময় তাঁর টেবিলের কাচ ও নামফলক ভেঙে ফেলা হয়। উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না পেয়ে ঠিকাদার সাহাব উদ্দিনের নেতৃত্বে হামলা চালান বলে অভিযোগ করে প্রকল্প পরিচালক। 

এ ঘটনায় ওইদিন রাতে সিটি করপোরেশনের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ১১ ঠিকাদারকে আসামি করে খুলশী থানায় মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় এস জে ট্রেডার্সের মালিক সাহাব উদ্দিনকে। একইসঙ্গে চসিকের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দরপত্রের তথ্য আগে ফাঁস হওয়ার কারণকেই দায়ী করা হয়। একইসঙ্গে এ ঘটনার দায় প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাদের বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সিভয়েস/এসআর

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়