Cvoice24.com

রমজানে যানজট নিরসনের ওপরই মূল ফোকাস ট্রাফিকের

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৫৩, ২২ মার্চ ২০২৩
রমজানে যানজট নিরসনের ওপরই মূল ফোকাস ট্রাফিকের

ফাইল ছবি।

আর মাত্র দুই দিন পরেই শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। রমজান কেন্দ্রিক সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষা, নগরবাসীর যাতায়াত, ঈদের কেনাকাটা নির্বিঘ্ন এবং মার্কেটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। এতে প্রথম রমজান থেকে সুফলও মিলবে বলে দাবি সিএমপির। ট্রাফিক বিভাগ বলছে— রমজানকে ঘিরে সড়ক ও মার্কেটকেন্দ্রীক যানজটে বিশেষ করে অফিস শেষে ইফতারের আগে ঘরে ফেরা মানুষের দুর্ভোগ কমানোয় এখন তাদের মূল ফোকাস।

সংশ্লিষ্টরা জানান, স্বাভাবিক দিনে ট্রাফিক পুলিশের অন্যান্য কার্যক্রম থাকলেও তা রমজানের জন্য আপাতত বন্ধ থাকবে। রমজানে বিশেষ করে অফিস শেষে বেশিরভাগ মানুষই বিকেলে ইফতারের আগে ঘরে ফিরতে চান। সবার একসঙ্গে ঘরে ফেরার তাড়ায় সড়কে আরও বাড়তি চাপ সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। তাই অন্যান্য কার্যক্রমগুলো কমিয়ে যানজট নিরসনের উপরেই ফোকাস রাখতে চায় সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। 

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ বলছে, পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে নগরে যানবাহন নির্বিঘ্নে চলাচলের লক্ষ্যে সড়ক ও ফুটপাতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, ভাসমান হকার-ইফতার বিক্রির ঠেলা-ভ্যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, যত্রতত্র পার্কিং বন্ধসহ সড়কের সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হবে। সড়ক-ফুটপাত অবৈধ দখল ও হকারমূক্ত করতে প্রয়োজনে ক্রাইম ডিভিশনের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তা নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যেসব মার্কেট-শপিং মলের নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা নেই, সেসকল মার্কেট-শপিং মল সংশ্লিষ্ট মালিক পক্ষের সাথে আলোচনা করে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। মার্কেটে আগত মানুষের দুর্ভোগ লাঘবসহ যানজট নিয়ন্ত্রণ রাখার লক্ষ্যে মার্কেট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভলান্টিয়ার নিয়োগ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

এছাড়াও রমজান উপলক্ষ্যে সড়কে যত্রতত্র খোঁড়াখুড়ি ও সড়কের সংস্কার কাজ সাময়িক বন্ধ রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পবিত্র রমজান মাসে সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার স্বার্থে নগরীতে জরুরি খাদ্য এবং রপ্তানী পণ্য ব্যতীত অন্যান্য মালামালবাহী যানবাহন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলাচল বিরত রাখা হবে। রমজান উপলক্ষে চট্টগ্রাম বন্দর কেন্দ্রিক যানজট নিরসন ও নগরবাসীর নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য বন্দর এলাকায় বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কন্টেইনার-লং ভেহিক্যাল-ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-ট্যাংক লরী চলাচলে নিয়ন্ত্ৰণ আরোপ করা হবে।

ট্রাফিক বিভাগ আরও জানায়, নগরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে নির্ধারিত স্টপেজে গণপরিবহন থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করাসহ রাস্তার মোড় পরিস্কার রাখতে হবে, যাতে পিছনের গাড়িগুলো চলাচলে বাঁধাগ্রস্ত না হয়। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রাস্তায় বিকল হওয়া যানবাহন দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপসারণ করার জন্য ট্রাফিক পুলিশের নিজস্ব ও অন্যান্য বেসরকারীসহ পর্যাপ্ত রেকার গরুত্বপূর্ণ মার্কেট কেন্দ্রিক নিয়োজিত করা হবে। রমজান মাসে যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু থাকবে সেকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্মুখস্থ সড়কে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময়ে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন রাখা হবে, যাতে যানজটের সৃষ্টি হয়ে স্বাভাবিক যান চলাচলে ব্যাঘাত না ঘটে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত, ফিটনেস বিহীন, মেয়াদ উত্তীর্ণ ও লক্কর-ঝক্কর যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নগরের ব্যস্ততম মোড় ও সড়কে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ ব্যতীত সড়কে যানবাহন থামানো বা গতিরোধ করা থেকে বিরত থাকবে। একজন সার্জেন্ট ও একজন কনস্টেবলের সমন্বয়ে প্রত্যেকে ডিভিশনে ১ম পর্যায়ে ২টি ও ২য় পর্যায়ে ৩টি করে QRT(Quick Response Team) গঠন করা হবে। ওই QRT দ্রুততার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ডিভিশনের অভ্যন্তরে ট্রাফিক সংক্রান্ত যেকোন উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে।

এ বিষয়ে সিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) স্পিনা রানী প্রামাণিক সিভয়েসকে বলেন, ‘রমজান কেন্দ্রিক যানজট নিরসনের জন্য যা যা করণীয় তা ঊর্ধ্বতনেরা বৈঠক করে নির্দেশনা দিয়েছেন। সড়কে অবৈধ পার্কিং করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করা এবং হকারদের ফুটপাত দখলের বিরুদ্ধে নজরদারি বাড়ানো হবে।’ 

একই প্রসঙ্গে সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সল মাহমুদ সিভয়েসকে বলেন, ‘রমজান কেন্দ্রিক আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। চারটি বিভাগের আলাদা আলাদাভাবে সমস্ত টেক হোল্ডারদের সঙ্গে মিটিং করেছি। আমরা অনেকগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরমধ্যে মার্কেটের সামনে কোনো গাড়ি দাঁড়াতে পারবে না। যত্রতত্র হকার বসতে পারবে না। এছাড়া গরীবুল্লাহ শাহ থেকে দূরপাল্লার বাসগুলোর পার্কিং বন্ধ করে দিয়েছি। অন্য সময়ে যে অন্যান্য কার্যক্রমগুলো থাকতো সেগুলো আমরা একটু কমিয়ে আনবো। যানজট নিরসনের উপরেই আমাদের মূল ফোকাস থাকবে। এবং মোড়ের মধ্যে গাড়ি চেক করা সেটা আমরা কমাবো। যাতে মোড়ে যানজট তৈরি না হয়। এছাড়া রাস্তার মাঝখানে কোনো গাড়ি ঘুরাতে পারবে না। এবং অবৈধ যে যানবাহনগুলো আছে সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিব।’

নগরের বিভিন্ন মোড়ে ডাইভারশন বসানোর ফলে সুফল মিলছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লেফটলেন ট্রাফিকের পরীক্ষিত একটা পদ্ধতি। লেফটলেনটা থাকলে বামদিকে যে গাড়িগুলো যাবে, সে গাড়িগুলো নির্বিঘ্নে যেতে পারবে। যদি লেফটলেন না থাকে তাহলে বামের গাড়িগুলো আটকে যাবে। তাই ডাইভারশনের কারণে অবশ্যই নগরবাসী সুফল পাবে বলে আমি আশাবাদী।’ 

রমজানে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের জনবল মোতায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সিএমপি’র ট্রাফিক উত্তর, দক্ষিণ, বন্দর ও পশ্চিম বিভাগের অধীনে ৩০ জন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) এবং ১৫০ জন সার্জেন্ট দায়িত্ব পালন করছেন। তবে চারটি জোনের মধ্যে যানজটপূর্ণ এলাকায় কোনো জনবলের প্রয়োজন হলে তা পাঠানো হবে।’

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়