Cvoice24.com

চট্টগ্রামে আজ, বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪

সময় ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড

জুনে ‘শাবল’ পড়ছে নগর ভবনে

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:১৫, ২২ মে ২০২৩
জুনে ‘শাবল’ পড়ছে নগর ভবনে

১৩ বছর পর আলোর মুখ দেখতে চলেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নগর ভবন প্রকল্প। সরকারি অর্থায়নের আশা ভুলে নিজস্ব অর্থায়নে নগর ভবনের কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সংস্থাটি। অর্থ বরাদ্দ সংকটসহ নানা কারণে নতুন নগর ভবন নির্মাণকাজ শুরু করতে না পারলেও এবার পুরাতন ভবন ভাঙার মধ্য দিয়ে সচল হচ্ছে থমকে থাকা নগর ভবন প্রকল্প। আগামী এক মাসের মধ্যে ভবন ভাঙার কাজ শুরু করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মঈনুদ্দিন জাবেদ ট্রেডিং।  দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে এ কাজ শেষ করতে হবে প্রতিষ্ঠানটিকে।

যদিও অর্থাভাবে ধুঁকতে থাকা চসিক নিজস্ব অর্থায়নে নগর ভবন নির্মাণ প্রকল্প কতদূর এগিয়ে নিতে পারবে তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে খোদ চসিকের কর্মকর্তারাই।  

চসিক সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১১ মার্চ নগর ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। সেসময় এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এরপরই আটকে যায় প্রকল্পের কাজ। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে নগর ভবন নির্মাণের প্রকল্প নতুন করে নেওয়া হয়। সেসময় ২৫ তলা ভবনের নকশা তৈরি করে স্থাপত্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘প্রণয়ন’। তখন প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২০২ কোটি টাকা। কিন্তু তাতে বাঁধসাধে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এমনকি থোক বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রেও সায় দেয় না মন্ত্রণালয়। ২০১৭ সালে আরেক দফা নগর ভবন নির্মাণ প্রকল্প প্রস্তাবনার অনুমোদন পাঠানো হয় মন্ত্রণালয়ে। পরবর্তীতে প্রকল্প ব্যয় পুনরায় সংশোধন করে ২২৯ কোটি টাকা করা হয়। কিন্তু তাতেও সায় দেয়নি মন্ত্রণালয়। যদিও করোনার আগে চসিকের নগর ভবন নির্মাণের ডিপিপি প্রি-একনেক পর্যন্ত গড়ালেও এখনো জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি বা একনেকে যেতে পারেনি। 

এদিকে, গত বছর গণপূর্ত বিভাগ থেকে ভেটিং করার পর এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২১২ কোটি টাকা। ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫৪ বর্গফুটের জায়গার ওপর তিনটি বেজমেন্ট ও ফাউন্ডেশনসহ ২১ তলা নগর ভবন নির্মাণ করা হবে। অর্থাৎ প্রকল্পে নানা সংযোজন-বিয়োজনের পর ২৫ তলা বিশিষ্ট ভবনের পরিবর্তে ২১ তলা এবং দুটি বেজমেন্টের পরিবর্তে এখন ভবনের বেজমেন্ট হবে তিনটি। নতুন ডিপিপিতে এখনকার প্রাক্কলিত ব্যয় আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, অনেক কাটছাট করে ২১২ কোটি টাকায়ে আনা হয়েছে। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এ প্রকল্পের ব্যয় আরও বাড়বে। কোভিডের পর থেকে আবাসন খাতে বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। তাহলে চসিক কি নিজস্ব অর্থায়নে করবে? এতোটাকা কই চসিকের? নিজেরাই চলতে পারে না, সারাক্ষণ শুধু টাকা নাই, টাকা নাই। দেখা যাবে আমরা কাজ শুরু করছি, এরপর টাকার অভাবে কাজ আটকে যাবে। তারপর যদি মন্ত্রণালয় টাকা দেয় তাহলে নগর ভবনের স্বপ্ন দেখা যাবে নয়তো না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারজানা মুক্তা সিভয়েসকে বলেন, ‘এখনো এটার প্রকল্প পরিচালক ঠিক হয়নি। যেহেতু ডিভিশন-১ এর আওতাধীন ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব আমার, তাই আমি দেখছি। এর আগে প্রকল্পের জন্য ডিপিপি আকারে প্রি একনেকে পাঠানো হয়েছিল। পরবর্তীতে কোভিডের কারণে সরকার আবাসন খাতে বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত প্রকল্প আকারে হয়ে উঠেনি। এখন মেয়র মহোদয়ের ইচ্ছা নিজস্ব অর্থায়নে নগর ভবন করার।’

এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘যেহেতু সরকারের কোনো বরাদ্দ নেই। তাই আমাদের সিটি করপোরেশনের টাকা দিয়েই নগর ভবন করতে হবে। আগে যেসকল প্রতিবন্ধকতা ছিল সেসব সমাধানের পথে। আগামী এক মাসের মধ্যে ভাঙার কাজ শুরু করতে পারবো। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুই থেকে আড়াই মাস সময় পাবে নগর ভবন ভাঙার।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্পে সংযোজন বিয়োজন শেষে ২১২ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ব্যয় আরও বাড়তে পারে। কারণ প্রথমে যখন ডিপিপি পাঠানো হয় তখন সেখানে স্ট্রাকচারাল ডিজাইন দেওয়া হয়নি। শুধু আর্কিটেকচার থ্রিডি প্ল্যান করে মডেল দেওয়া হয়। এখন ডিপিপি করার আগে পিডব্লিউডির কাছ থেকে ভেটিং করিয়ে নেওয়া হয়েছে। আগে দুইটি বেজমেন্ট করার প্ল্যান ছিল। এখন তিনটি বেজমেন্ট করা হবে। আশা করছি নগর ভবন নিয়ে আমরা এ বছর আশার আলো দেখতে পাবো।’

সিভয়েস/এসআর

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়