Cvoice24.com

ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্প: ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের অর্ধেক কাজ শেষ

দেবাশীষ চক্রবর্তী

প্রকাশিত: ১৭:৩৭, ১৮ নভেম্বর ২০২৩
ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্প: ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের অর্ধেক কাজ শেষ

চট্টগ্রাম নগরের বাসা-বাড়িতে সৃষ্ট মানবর্জ্য পাইপ লাইনের মাধ্যমে যে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে জমা হবে সেই ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ কাজ ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে। পাইপ লাইন বসানোর কাজ এগিয়েছে ১৫ শতাংশ। 

চট্টগ্রাম ওয়াসার অধীনে বাস্তবায়িত হচ্ছে পয়োনিষ্কাশন ও স্যুয়ারেজ প্রকল্প। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুরুতে নানা জটিলতা থাকলেও বর্তমানে দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। পুরো প্রকল্পের ৩৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তবে আবাসিক ভবনে সংযোগ দিতে আরও বছর খানেক সময় লাগবে।

জানা গেছে, বর্তমানে নগরের দুই এলাকায় সুয়্যারেজ প্রকল্পের পাইপ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। হালিশহর আবাসিক এলাকায় ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত ইতোমধ্যে বসানো হয়েছে তুর্কি থেকে আনা পাইপ। ওই এলাকায় ১ হাজার সংযোগের কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া শিগগিরই আগ্রাবাদ আবাসিক এলাকা ও কমার্স কলেজ এলাকায় শুরু হচ্ছে পাইপ বসানোর কাজ। হালিশহর এলাকায় কাজ করছে দক্ষিণ কোরিয়ার টাইওং প্রতিষ্ঠান। আগ্রাবাদ এলাকায় কাজের দায়িত্বে আছে চাইনা প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো।

স্যুয়ারেজ প্রকল্পের পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম সিভয়েসকে বলেন, ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের প্রায় অর্ধেক কাজ শেষ। এর মধ্য ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের এরিয়ার মধ্যে রাস্তার কাজ প্রায় শেষ। ট্রিটমেন্ট ফ্যাসিলিটিজ (বিটিএফ) নামের প্ল্যান্টের দেয়াল তৈরি সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি পাইপ লাইন বসানোর কাজও চলছে।

তবে আবাসিক ভবনগুলোতে অপরিকল্পিত পাইপ লাইন বসানোর কারণে কাজে কিছুটা ব্গে পেতে হচ্ছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, আবাসিকে গ্রাহক পর্যায়ে লাইন করতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে সংযোগের কাজ করতে হচ্ছে। ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের মোট ব্যয় কত দাঁড়াচ্ছে এখনো বলা যাচ্ছে না। ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের কাজ শেষ হলে বুঝা যাবে কতটুকু ব্যয় বাড়ছে। 

প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম আরও বলেন, সুয়্যরেজ পাইপ লাইন সব থেকে জটিল একটি কাজ। নগরের বিভিন্ন আবাসিক ভবনের পয়ঃনিষ্কাশন বর্জ্য নিষ্কাশনের পাইপ লাইন করতে গ্রাহক ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা শুরুতে জনবহুল ও যানবাহন চাপ বেশি এমন এলাকায় কাজ শুরু করিনি। তবে সম্পূর্ণ চট্টগ্রাম নগরে পাইপ লাইন বসাতে হবে বিধায় সাধারণ মানুষের কিছুটা বেগ পেতে হবে। আমরা চেষ্টা করবো অল্প সময়ের মধ্যে নিধারিত স্থানে পাইপ স্থাপনের কাজ শুরু শেষ করা হবে।

করোনা মহামারী ও জমি অধিগ্রহণ সম্পর্কিত জটিলতার কারণে কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে উল্লেখ করে আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে সুয়্যারেজ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ১৯৬৩ সালে নগরের পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার লক্ষ্যে নগরের চৌচালা এলাকায় ১৬৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। পরে ২০১৫ সালে সংস্থাটি পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ শুরু করলেও অনুমোদন পায় ২০১৮ সালে। ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভা (একনেক) ‘চট্টগ্রাম মহানগরের পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা স্থাপন’ নামে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) এবং ওয়াসার ৫০ কোটি টাকার অর্থায়নে শুরু হয় প্রকল্পের কাজ।  

প্রকল্প বাস্তবায়নে ছয়টি জোনে হয় বা ক্যাচমেন্টে ভাগ হয়েছে নগরের বিভিন্ন এলাকা। এর ক্যাচমেন্ট-১ নগরের হালিশহর এরিয়া, ক্যাচমেন্ট-২ কালুরঘাট, ক্যাচমেন্ট-৩ ফতেয়াবাদ এরিয়া, ক্যাচমেন্ট-৪ পূর্ব বাকলিয়া, ক্যাচমেন্ট-৫ উত্তর কাট্টলি, ক্যাচমেন্ট-৬ পতেঙ্গা এরিয়া। পরে চলতি বছরের ১ এপ্রিল পাইপ লাইনের কাজ শুরু হয়। পাইপ লাইন বসাতে প্রথম ধাপে হালিশহরের বি-ব্লকের ১৬ নম্বর রোডে রাস্তা কাটা শুরু করে ওয়াসা।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়

: