Cvoice24.com

ফটিকছড়িতে চা-উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১২ মিলিয়ন কেজি

প্রকাশিত: ১৭:০০, ২৯ মে ২০১৮
ফটিকছড়িতে চা-উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১২ মিলিয়ন কেজি

ছবি: প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের ২২টি চা বাগানের মধ্যে ফটিকছড়ি উপজেলায় রয়েছে ১৭টি চা বাগান। বহুমুখী পরিকল্পনার মাধ্যমে এসব চা বাগানের উৎপাদন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।  চট্টগ্রামের বাগানগুলোতে গত ২০১৭ সালে ১ কোটি কেজি চা উৎপাদন করা হয়েছে, তন্মধ্যে ফটিকছড়ির চা বাগানগুলো উৎপাদন করেছে প্রায় ৮০ লক্ষ কেজি চা। ২০১৮ সালে ১২ মিলিয়ন বা ১ কোটি ২০ লক্ষ কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ কারা হয়েছে। 

চা বাগান গুলোতে নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং গ্যাস সংযোগ পেলে উৎপাদন খরচ কমে চায়ের গুনগত মানে আরো উন্নীত হতো বলে দাবী করেছেন চা বাগান মালিক ও ব্যবস্থাপকগণ। গত মৌসুমে হেক্টর প্রতি হালাদাভ্যালী চা বাগান বাংলাদেশের বাগানগুলোর মধ্যে চা উৎপাদনে প্রথম স্থান অর্জন করেন।

চা উৎপাদন নিয়ে বিভিন্ন বাগানের ব্যস্থাপকের সঙ্গে আলাপ করলে নেপচুন চা বাগানের ব্যবস্থাপক কাজী এরফান উল্লাহ সিভয়েসকে জানান, এবারের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১১ লক্ষ ৫০ হাজার কেজি। ২০১৭ সালে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই বাগানের উৎপাদন ছিল ১০ লক্ষ ৩৬ হাজার কেজি। চলতি বছরে গত ১৫ মে পর্যন্ত উৎপাদন দাড়িয়েছে ১ লক্ষ ৪৬ হাজার কেজি। এ বছর আমরা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার একর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষ ৫০ হাজার কেজির চা উৎপাদনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

টি.কে গ্রুপের মালিকানাধীন বারমাসিয়া, এলাহী নূর ও রাঙ্গাপানি চা বাগানের পরিচালক বাবুল বিশ্বাস জানান, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের তিনটি বাগানে উৎপাদিত চায়ের পরিমান ছিল প্রায় ১৯ লক্ষ কেজি। ২০১৮ বছর শেষে প্রায় ২৩ লক্ষ কেজি চা-উৎপাদনে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে লক্ষে আমরা কাজ করছি। আশা রাখি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আমাদের টার্গেট পূরণ হবে। 

এশিয়ার বৃহত্তম ব্র্যাক কর্ণফুলী চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পযর্ন্ত এই বাগানের চা উৎপাদন ছিল প্রায় ১৮ লক্ষ ৫০ হাজার ৯ শত ১৭ কেজি। চলতি ২০১৮ বছরে  ডিসেম্বর পর্যন্ত ২০ লক্ষ কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। তিনি তাদের প্রায় ৩ হাজার একর জমির চা বাগান থেকে এই চা উৎপাদন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

হালদা ভ্যালী ও রামগড় চা বাগানের উর্ধ্বতন ব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বছরের ডিসেম্বর-১৭ পর্যন্ত হালদা ভ্যালী বাগানে ৮ লাখ ৮১ হাজার ও রামগড় চা বাগানে ৮ লক্ষ ১৩ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। ২০১৮ বছরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে হালদাভ্যালীতে ৯ লক্ষ ৫০ হাজার কেজি ও রামগড় চা বাগানে সাড়ে ৮ হাজার কেজি। অতি ও অনা বৃষ্টি চা উৎপাদনে কিছু ক্ষতি করলেও আমরা নিজস্ব সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে মৌসুমের শুরু এবং শেষ সময়ে সেচ দেওয়ার কারণে দুই বাগানে বছর শেষে প্রায় ১৮ লক্ষ ৫০ হাজার কেজি উৎপাদন করার সম্ভাবনা রয়েছে।

রামগড় ও হালদা ভ্যালীর মালিক লায়ন্স নাদের খান বলেন, চট্টগ্রামের বাগানগুলোতে উচ্চ ফলনশীল বিটি-২ জাতের চারা থেকে ভাল ফলন পাওয়া যাচ্ছে। তাই গত বছরের তুলনায় এবছর ৩০% চা বেশি উৎপাদন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। গত মৌসুমে আমরা বাংলাদেশের মধ্যে হেক্টর প্রতি চা উৎপাদনে প্রথম স্থান অর্জন করেছি।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম চা সংসদের সভাপতি ও আছিয়া চা বাগানের প্রবীন ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ উদ্দিন মন্টু বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামের ২২টি বাগানে ২০১৭ সালে আমরা এক কোটি কেজি চা উৎপাদন করা হয়েছে। ২০১৮ বছরে ১ কোটি ২০ লক্ষ কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। পর্যাপ্ত বৃষ্টি চা উৎপাদনের জন্য উপযোগী হলেও এবছর সময়মত বৃষ্টি না হওয়ায় একটু ক্ষতি করেছে। আর পল্লী বিদ্যুতের সর্বোচ্চ বিল এবং নিয়মিত বিল পরিশোধকারী হচ্ছে চা বাগান গুলো। কিন্তু সে তুলনায় ফটিকছড়ির বিদ্যুৎ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। সিলেট অঞ্চলে চা বাগানে গ্যাস সংযোগ পেয়েছে। তাদের প্রতি কেজি উৎপাদন খরচ পড়ে ২ টাকা ৫০ পয়সা। আর আমাদের ডিজেল মেশিনে উৎপাদন খরচ পড়ে ৩৫ টাকার বেশী। তাই চা বাগানে গ্যাস সংযোগ পেলে আমরা চট্টগ্রাম অঞ্চলে এ শিল্পের ব্যাপক চমক দেখাতে পারবো।
 
সিভয়েস/আরআই/এমআইএম

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ফটিকছড়ি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়