Cvoice24.com


মিতু হত্যা মামলার পোস্টমর্টেম: ২০১৬-২০১৮

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ৫ জুন ২০১৮
মিতু হত্যা মামলার পোস্টমর্টেম: ২০১৬-২০১৮

ফাইল ছবি

আলোচিত গৃহবধূ সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার দুই পূর্ণ হচ্ছে আজ মঙ্গলবার।  ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে নৃশংসভাবে খুন হন তিনি। এই ঘটনার দুই বছর পার হলেও এখনো দেওয়া হয়নি চার্জশীট।

এক নজরে মিতু হত্যার আদ্যোপান্ত- 

১. ৬ জুন ২০১৬: পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভোরে চকবাজার বড় গ্যারেজ এলাকা থেকে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি উদ্ধার করে। একই দিন বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২. ৮ জুন ২০১৬: গোয়েন্দা পুলিশ হাটহাজারি উপজেলা থেকে আবু নসুর গুন্নুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে পুলিশ জানায় মিতু হত্যায় তার সম্পৃক্ততা নেই।

৩. ১১ জুন ২০১৬: নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার শীতল ঝর্ণা থেকে শাহ জামান ওরফে রবিন নামে আরো একজনকে গ্রেপ্তারের খবর জানায় পুলিশ। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মিতু হত্যায় তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।

৪. ১১ জুন ২০১৬: রাতে এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব থেকে নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক কাজী রকিবউদ্দিনকে সরিয়ে নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামানকে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়।

৫. ২৪ জুন ২০১৬:  রাতে ঢাকার বনশ্রীর শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুল আক্তারকে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

৬. ২৬ জুন ২০১৬: মো. আনোয়ার ও মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম নামে দুইজনকে গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশ করে পুলিশ। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

৭. ২৮ জুন ২০১৬: বাবুল আক্তারের অন্যতম সোর্স এহেতাশামুল হক ভোলা ও তার সহযোগী মো. মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে পয়েন্ট ৩২ বোরের একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়, যেটি মিতু হত্যায় ব্যবহৃত হয়েছে বলে পুলিশের ভাষ্য। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ভোলা ও মনিরকে আসামি করে একটি অস্ত্র মামলা করা হয়। এই ঘটনায় আদালতে অভিযোগপত্র  দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মহিম উদ্দিন। অভিযোগপত্রেও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহকারী উল্লেখ করে ভোলা ও মনিরকে আসামি করা হয়।

৮. ১ জুলাই ২০১৬: মোটর সাইকেল সরবরাহ করার অভিযোগে মুছার ভাই সাইদুল আলম শিকদার ওরফে সাক্কু ও শাহজাহান নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

৯. ৪ জুলাই ২০১৬: মুছার স্ত্রী পান্না আক্তার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে মুছাকে আদালতে হাজির করার দাবি জানান । ২২ জুন বন্দর থানা এলাকায় তাদের এক পরিচিত জনের বাসা থেকে মুছাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

১০. ৫ জুলাই ২০১৬: ভোরে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ঠান্ডাছড়িতে নুরুল ইসলাম রাশেদ ও নুরুন্নবী নামে দুইজন পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

১১. ১৩ অগাস্ট ২০১৬: দীর্ঘদিন নীরব থাকার পর স্ত্রীকে নিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজের নিরবতা ভাঙ্গেন বাবুল আক্তার।

১২. ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬:  বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

১৩. ১ নভেম্বর ২০১৬:  বেসরকারি আদ-দ্বীন হাসপাতালে সহযোগী পরিচালক হিসেবে যোগ দেন বাবুল আক্তার।

১৪. ২২ নভেম্বর ২০১৬: ভোলা ও মনিরকে অভিযুক্ত করে তাদের বিচার শুরু করে আদালত।

১৫. ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬:  মামলার বাদী বাবুল আক্তার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করতে চট্টগ্রাম আসেন।

১৬. ২ জানুয়ারি ২০১৭:  বাবুলের বাবা-মা ও ২৬ জানুয়ারি শ্বশুর মোশারফ হোসেন ও শ্বাশুড়ি সাহেদা মোশারফ নীলা চট্টগ্রাম এসে দেখা করেন তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ও মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান রুদ্ধদ্বার কক্ষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে তার কাছ থেকে কি তথ্য পাওয়া গেছে তা নিয়ে কোন  মন্তব্য করেনি পুলিশ। এ সময় মিতুর মা , কার নির্দেশে মিতুকে হত্যা করা হয়েছে ও এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারাই জড়িত থাক না কেনো তা তদন্ত করে  খুঁজে বের করার অনুরোধ জানান।  

১৭. ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭:  ভোলা জেলার লাল মোহন এলাকা থেকে মিতুর হারানো সিম উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

১৮. ২৭ মার্চ ২০১৭: চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. শাহেনূরের আদালতে বাদী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) মো. কামরুজ্জামান সাক্ষ্য দেন। এর আগে  একই বছরের ১৮ জানুয়ারি বাদী এডিসি কামরুজ্জামানের আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ করেছিল মহানগর দায়রা জজ আদালত।

৯. ৬ মে ২০১৮: উচ্চ আদালত থেকে জামিন পায় মামলার অন্যতম আসামি ভোলা।

-সিভয়েস/এইচআর/এমইউ

মুহাম্মদ নাজমুল হাসান

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়