Cvoice24.com

ব্যর্থতা ছাপিয়ে শান্তর সেঞ্চুরিতে স্বস্তি

ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৩৮, ২১ এপ্রিল ২০২১
ব্যর্থতা ছাপিয়ে শান্তর সেঞ্চুরিতে স্বস্তি

ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে চমৎকার কাভার ড্রাইভে বল পৌঁছে গেল বাউন্ডারিতে, নাজমুল হোসেন শান্ত পৌঁছে গেলেন নতুন ঠিকানায়। যে ঠিকানা পরম কাঙ্ক্ষিত, যেখানে তার পা পড়েনি আগে কখনোই, যেটি তার কাছে আজীবন হয়ে থাকবে বিশেষ কিছু। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি!

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলে টেস্টের প্রথম দিন তৃতীয় সেশনে বহু আকাঙ্ক্ষিত সেই স্বাদ পান শান্ত। ১২০ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান প্রায় একই তালে এগিয়ে সেঞ্চুরি করেন ২৩৫ বলে। তিন অঙ্ক স্পর্শ করার সময় ১২ চারের পাশে তার ইনিংসে ছক্কা একটি।   

প্রথম সেঞ্চুরি হলেও মাইলফলকে পৌঁছে উচ্ছ্বাসে ভেসে যাননি। এক হাতে ব্যাট, আরেক হাতে হেলমেট তুলে স্রেফ ছোট্ট একটু উদযাপন। শরীরি ভাষাতেই বোঝা যাচ্ছিল, খুশির চেয়ে সেখানে বেশি স্বস্তি। যেন বড় বোঝা নেমে গেল কাঁধ থেকে। চাপের আস্ত পাহাড়ই তো চেপে বসেছিল!

প্রেক্ষাপট বুঝতে যেতে হবে একটু পেছনে। পাঁচ বছর আগে রান সংগ্রাহকদের তালিকার শীর্ষে থেকে থেকে শেষ করেছিলেন যুব ওয়ানডে ক্রিকেট। পরের ধাপ ছিল সাজানো, গোছানো। বেড়ে ওঠেন সযত্ন তত্ত্বাবধানে।

নিয়মিত খেলতে থাকেন প্রথম শ্রেণির, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, বিপিএলে। হাই পারফরম্যান্স ইউনিটে শাণিত করেন নিজেকে। ‘এ’ দলে সঞ্চয় করেছন অভিজ্ঞতা। ঘরোয়া ক্রিকেটে সব জায়গায় পারফরম্যান্স করে জায়গা পান জাতীয় দলে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খুঁজে পাচ্ছিলেন না নিজেকে। তার কাছে যে বিপুল প্রত্যাশা, প্রাপ্তি ছিল না ধারে কাছেও।

বেশ কয়েকজনের চোটের কারণে টেস্ট অভিষেক অনেকটা হুট করেই হয়ে যায় ২০১৭ সালে, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে। এরপর ধাপে ধাপে খেলেছেন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। কোথাও রাখতে পারেননি নিজের প্রতিভা ও সামর্থ্যের ছাপ। তার ওপর যে আস্থা, দিতে পারেননি এর প্রতিদান।

চলতি বছর দেশের মাটিতে সবশেষ টেস্ট সিরিজে ছিলেন নিদারুণ ব্যর্থ। চার ইনিংস মিলিয়ে করেন কেবল ৪০ রান। সব মিলিয়ে সমালোচনা হচ্ছিল তুমুল। এই ম্যাচেও সঙ্গী ছিল প্রবল চাপ।

এর আগে ৬ টেস্টে ফিফটি ছিল কেবল একটি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৭১। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে দুই ইনিংসেই আউট হন থিতু হয়ে ( ৪৪, ৩৮)। এই ম্যাচেও ফিরতে বসেছিলেন থিতু হয়ে, ২৮ রানে তার কঠিন ক্যাচ গ্লাভসে জমাতে পারেননি নিরোশান ডিকভেলা। 

এরপর অবশ্য আর পেছনে তাকাতে হয়নি শান্তকে। খেলে গেছেন আস্থার সঙ্গে। দেওয়ালে যখন পিঠ ঠেকে গেছে তখনই বেরিয়ে এসেছে তার সেরাটা।

বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকেই তাকে মনে করা হয়, দেশের ব্যাটিংয়ের ভবিষ্যৎ। এক ইনিংসেই সেই ভবিষ্যৎকে বর্তমানে এনে ফেলেননি অবশ্যই। তবে সেই পথে বড় এক পদক্ষেপ নিলেন, এই আশা এখন করাই যায়!

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়