নেইমারের নৈপুণ্যে ব্রাজিলের ছয়ে ছয়

ইকুয়েডরের বিপক্ষে আগের ম্যাচে গোল করেছিলেন নেইমার, ব্রাজিলও জিতেছিল ২-০ গোলে। আসুনসিওনে আজ ভোরে প্যারাগুয়ের বিপক্ষেও গোলের দেখা পেলেন তিনি। ব্রাজিলও জিতেছে, স্কোরলাইনও সেই একই ; ২-০ গোলের জয়ে ‘ছয়ে ছয়’ করল তিতের দল। দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নেইমারের গোল মানেই ব্রাজিলের জয় —কথাটা এখন বলাই যায়। 

বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এ নিয়ে ছয় ম্যাচ খেলে সবগুলোতেই জিতল ব্রাজিল। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান ধরে রাখল তারা। ব্রাজিলের এ জয়যাত্রায় দলের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ গোল করে নেতৃত্বও দিচ্ছেন নেইমার। সমর্থকদের জন্য এ যেন সোনায় সোহাগা! ১৯৮৫ সালের পর দেশের বাইরে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে এই প্রথম জয়ের মুখ দেখল ব্রাজিল।

প্যারাগুয়ের মাঠে ম্যাচের শুরুর দিকে এবং শেষ দিকে গোল দু’টি আদায় করে নেয় ব্রাজিল। ৪ মিনিটে গ্যাব্রিয়েল জেসুসের ক্রস পেয়ে ৮ মিটার দূর থেকে গোল করেন নেইমার। ব্রাজিলের জার্সিতে এ নিয়ে ১০৫ ম্যাচে ৬৬ গোল করার পাশাপাশি ও ৪৬টি গোলও বানিয়ে দিয়েছেন পিএসজি তারকা। 

যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে বাঁ পায়ের দারুণ শটে গোল করে ব্রাজিলের ৩ পয়েন্ট অর্জন নিশ্চিত করেন লিওঁ মিডফিল্ডার লুকাস পাকেতা।

জেসুসকে একাদশে ফিরিয়ে এনেছিলেন তিতে। ডান প্রান্ত থেকে তাঁর ক্রস রিচার্লিসন ভলি করতে না পারলেও অরক্ষিত থাকার সুযোগটা নেন নেইমার। দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নেইমার গোল করলে ব্রাজিলের জেতাটা যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। নেইমার গোল করেছেন এমন ৯ ম্যাচে জিতল ব্রাজিল। 

তবে এ ম্যাচে প্যারাগুয়েও হাল ছাড়েনি। তাদের সেন্টারব্যাক ওমর আলদেরেতের ৩০ গজ দূর থেকে নেওয়া শট অবিশ্বাস্য দক্ষতায় রুখে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক এদেরসন। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মিগুয়েল আলমিরনের চেষ্টাও ব্রাজিল ডিফেন্ডার এদের মিলতাওয়ের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়।

তবে ম্যাচের ৩০ মিনিটের মাথায় আরও একটি গোল পেতে পারত ব্রাজিল। ভলিতে করা রিচার্লিসনের গোলটি অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। বিরতির পর প্যারাগুয়ের শুরুটা ছিল দারুণ। গুস্তাভো গোমেজের হেড এদেরসন নসাৎ করে না দিলে গোল হতে পারত। মার্কুইনহোসও ব্রাজিলের হয়ে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন। 

লাতিন অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এর আগে ৫ ম্যাচে অপরাজিত ছিল প্যারাগুয়ে। ৬ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ছয়ে রইল দলটি। শীর্ষ চার দল সরাসরি জায়গা করে নেবে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে। পঞ্চম দলটিকে খেলতে হবে প্লে-অফ।

প্যারাগুয়ের রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে অতীতের এক নজিরও ফিরিয়ে আনল ব্রাজিল। গত ৫২ বছরের মধ্যে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে এটাই সেরা শুরু পাঁচবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের। সর্বশেষ ১৯৬৯ সালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নিজের প্রথম ছয় ম্যাচেই জয়ের মুখ দেখেছিল ব্রাজিল। 

পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় আর্জেন্টিনার সঙ্গে ৬ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে ব্রাজিল। এই ব্যবধানে সন্তুষ্ট ব্রাজিলের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার মার্কুইনহোস, ‘এখানে (আসুনসিওন) খেলা কতটা কঠিন তা আমরা জানতাম। তবে টেবিলে দ্বিতীয় দলের সঙ্গে ব্যবধান গড়তে পেরে আমরা খুশি।’

অন্য ম্যাচে ইকুয়েডরকে ২-১ গোলে হারিয়ে বাছাইপর্বে প্রথম জয়ের মুখ দেখেছে পেরু। উরুগুয়ের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে ভেনেজুয়েলা। ৬ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে উরুগুয়ে। তাদের চেয়ে ১ পয়েন্ট বেশি পেয়ে তিনে ইকুয়েডর।