Cvoice24.com

জুয়াকাণ্ডে সিজেকেএসে আজীবন বহিষ্কার হচ্ছেন রেফারি মিরন

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৪০, ৯ জুন ২০২১
জুয়াকাণ্ডে সিজেকেএসে আজীবন বহিষ্কার হচ্ছেন রেফারি মিরন

চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল রেফারীজ অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে জুয়া খেলার জন্য তিনশ টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তি করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান মিরন! সেই চুক্তির ভিত্তিতে বসেছিল রমরমা জুয়ার আসর। পুলিশি অভিযানে গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। চুক্তি করে জুয়ার আসর বসিয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্মান ক্ষুন্ন করায় সিজেকেএস সংশ্লিষ্ট সব সংগঠন থেকে তাকে আজীবন বহিষ্কার করতেও সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।  

গত ৭ জুন তদন্ত কমিটির সভায় অনুমোদনের পর বুধবার বেলা ১১ টায় প্রতিবেদনটি সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ. জ. ম. নাছির উদ্দীনের কাছে হস্তান্তর করে তদন্ত কমিটি।  

৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩'শ টাকার রেভিনিউ স্ট্যাম্পে চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান মিরনের সাথে সীমান্ত সেন অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে জুয়া খেলা আয়োজনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেন। সেই চুক্তিতে ২য় পক্ষ হিসেবে চুক্তি স্বাক্ষরকারীরা হলেন, সীমান্ত সেন,  তার বড় ভাই কৃষ্ণ কমল সেন ও সীমান্ত সেনের পক্ষে জুয়া খেলা পরিচালনাকারী বিপুল কান্তি বৈদ্য। রেফারীজ অ্যাসোসিয়শেনের মত একটি ক্রীড়া সংগঠনের কার্যালয়ে জুয়ার আসর বসিয়ে সিজেকেএসের সম্মান ক্ষুন্ন করা হয়। গত ১ জুন কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. মুজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এম. এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল রেফারীজ অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে ১৯ জুয়াড়ি, জুয়া খেলার সরঞ্জামসহ প্রায় ৭ লাখ নগদ অর্থ জব্দ করা হয়। 

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ২ জুন সিজেকেএস সহ-সভাপতি মো. হাফিজুর রহমানকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সিজেকেএস। একই দিন কার্যালয়টি সিলগালা করে এসংক্রান্ত নোটিশ টাঙ্গিয়ে দেয় তদন্ত কমিটি।

তদন্ত কমিটি গত ৫ জুন অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মো. মনজুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবদুল হান্নান মিরন, যুগ্ম সম্পাদক হেলাল উদ্দীন টিপু, কোষাধ্যক্ষ মো. ফরহাদ হোসেন চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক দিপাশ মুৎসুদ্দী, নির্বাহী সদস্য প্রনব দেব দাশ ও বিশ্বজিৎ সাহা এবং পিয়ন গোবিন্দ দাশকে বক্তব্য দেয়ার জন্য ডাকা হলে ওইদিন সন্ধ্যা ৭ টা তদন্ত কমিটির সভায় উপস্থিত হয়ে জুয়ার বিষয়ে অবগত নন বলে জানান।

তবে প্রতিবেদনে আব্দুল হান্নান মিরনকে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার আওতাধীন এম.এ আজিজ স্টেডিয়ামসহ এর আওতাধীন সকল স্থাপনায় প্রবেশাধিকার, সকল প্রকার  ক্রীড়া ও সামাজিক কর্মকান্ড হতে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার এবং নিষিদ্ধ করাসহ অবাঞ্চিত ঘোষণার সুপারিশ করা হয়। শুধু তাই নয়, সিজেকেএস এর আওতাধীন সকল স্থাপনায় প্রবেশাধিকার, সকল প্রকার  ক্রীড়া ও সামাজিক অনুষ্ঠানের সকল কর্মকান্ড হতে কোষাধ্যক্ষ মো. ফরহাদ হোসেন চৌধুরীকে ৩ বছর, নির্বাহী সদস্য বিশ্বজিত সাহাকে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার এবং নিষিদ্ধ করাসহ অবাঞ্চিত ঘোষণা করার সুপারিশ করা হয়।

চুক্তিপত্রে ২য় পক্ষ হিসেবে চুক্তি স্বাক্ষরকারী সীমান্ত সেন,  তার বড় ভাই কৃষ্ণ কমল সেন ও সীমান্ত সেনের পক্ষে জুয়া খেলা পরিচালনাকারী বিপুল কান্তি বৈদ্যকে সিজেকেএস এর আওতাধীন সকল স্থাপনায় ১০ (দশ) বছরের জন্য প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করাসহ অবাঞ্চিত ঘোষণার সুপারিশ করা হয়। তদন্ত কমিটি চট্টগ্রাম ফুটবল রেফারীজ অ্যাসোসিয়েশন থেকে প্রাপ্য বিদ্যুৎ বিল আনুমানিক ১০ লাখ টাকা প্রকৃত বিদ্যুৎ বিল আদায়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিজেকেএসের কাছে সুপারিশ করে।।

এছাড়া চট্টগ্রাম ফুটবল রেফারীজ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে সিলগালাকৃত কার্যালয় খুলে দেয়ার আবেদন প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল রেফারীজ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়টি খুলে দেয়ার সুপারিশ করা হয়।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও সিজেকেএস সহ-সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান সিভয়েসকে বলেন, ‘জুয়ার ঘটনার তদন্ত করার জন্য সিজেকেএস থেকে ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ৭ দিনের মধ্যে এবিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশনা আমাদের দেওয়া হয়েছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।’

তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—আমিনুল ইসলাম, মশিউর রহমান চৌধুরী, শাহাবুদ্দীন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, আ.ন.ম. ওয়াহিদ দুলাল, দিদারুল আলম, নাসির মিঞা, মহসীন কাজী মহসীন কাজী ও আলী হাসান রাজু। 
 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়