টানা দ্বিতীয়বার কোপা চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা
সিভয়েস২৪ ডেস্ক

আবারও কোপা আমেরিকার শিরোপা ঘরে তুলেছে আর্জেন্টিনা। টুর্নামেন্টটির ৪৮তম আসরের ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে লাউতারো মার্টিনেজের একমাত্র গোলে কলম্বিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মেসিরা।
এটি আকাশী-নীলদের টানা দ্বিতীয় ও নিজেদের ইতিহাসের ১৫তম কোপা আমেরিকার শিরোপা জয়। একই সঙ্গে ত্রিমুকুট জয়ের ইতিহাসও গড়েছে দেশটি। ২০২১ সালের কোপা আমেরিকা, ২০২২ সালের বিশ্বকাপ আর ২০২৪ সালের কোপা আমেরিকা—স্পেনের পর এই ত্রিমুকুট জেতা দ্বিতীয় দল এখন শুধুই আর্জেন্টিনাই।
সোমবার (১৫ জুলাই) সকালে ফাইনাল মহারণ শুরুর আগেই ছড়ায় উত্তাপ। তবে সেটা স্টেডিয়াম গেটের বাইরে। টিকিটবিহীন দর্শকদের বিশৃঙ্খলার কারণে ম্যাচ ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট দেরিতে শুরু হয়। বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দেরিতে ৭টা ২০ মিনিটে খেলা শুরু হয়।
মিয়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে ম্যাচে শুরু থেকে উভয় দল আক্রমন-পাল্টা আক্রমনে প্রতিপক্ষের গোলপোস্টে হানা দিলেও নির্ধারিত ৯০ মিনিটে বল জালে জড়াতে পারেনি। অতিরিক্ত সময়ে সেখানে দেশসহ পুরো বিশ্বের ভক্ত সমর্থকদের উল্লাসে মাতিয়ে তোলেন সেই লাউতারো মার্টিনেজ।
আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা ফাইনালে নেমেছিলেন বদলি হিসেবে। নেমেই দুর্দান্ত এক শটে ভাঙলেন ডেডলক। ম্যাচের ১১২ মিনিটে লিড পায় আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠ থেকে থ্রু বল পাঠিয়েছিলেন জিওভানি লো সেলসো। বদলি নামা এই মিডফিল্ডারের পাস খুঁজে নেয় লাউতারো মার্টিনেজকে। সেখান থেকে ঠান্ডা মাথার ফিনিশে বল জালে পাঠান লাউতারো মার্টিনেজ। চলতি আসরে এটি তার ৫ম গোল।
এর আগে ৬৬ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন আর্জেন্টাইন মহাতারকা ফুটবলার মেসি। কান্নাভেজা চোখে বিদায় জানালেন মাঠকে। এরপর সাইডবেঞ্চে বসেই তাকে কাঁদতে দেখা গেছে। বদলি হিসেবে নেমেছেন নিকোলাস গঞ্জালেস।
মেসি ম্যাচের ৩৭ মিনিটেই মূলত ইনজুরিতে পড়েন মেসি। ওই সময় আক্রমণে যাওয়ার পরেই তাকে কড়া ট্যাকেল করেন কলম্বিয়ার রাইটব্যাক সান্তিয়াগো আরিয়াস। কড়া ট্যাকেলের পর সেখানেই গোড়ালি মচকায় লা পুলগার। এরপরেই ব্যাথানাশক দিয়ে সাময়িক চিকিৎসা চলে মেসির। খেলায়ও ফিরে আসেন খানিক পরেই। প্রথমার্ধ শেষ করেন সতর্কভাবেই।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে আর নিজেকে মেলে ধরতে পারলেন না মেসি। খেললেন ৬৩ মিনিট পর্যন্ত। প্রেসিং করতে গিয়েই পড়ে যান মাঠে। সেখান থেকে আর ফেরা হয়নি মেসির। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে বদলি করা হয় তাকে। বদলি হিসেবে নামেন নিকোলাস গঞ্জালেস। মাঠের চিকিৎসার পর আর্মব্যান্ড তুলে দেন আনহেল ডি মারিয়ার কাছে।
ম্যাচে অবশ্য মেসিকে এমন কড়া ট্যাকেলের পরেও কোনো কার্ড দেখতে হয়নি আরিয়াসকে। ব্রাজিলিয়ান রেফারি রাফায়েল ক্লাউস বাজাননি ফাউলের বাঁশিও।
এই ম্যাচ দিয়েই নিজের বর্ণিল ক্যারিয়ার শেষ করেছেন আনহেল ডি মারিয়া। শেষটা তার জন্য হলো ছবির মতোই সুন্দর। ২০২১ সালে মারাকানায় তার গোল দিয়েই আর্জেন্টিনা শুরু করেছিল শিরোপা জয়ের এক যাত্রা। এরপর থেকে আরও দুই শিরোপা জয়ের সাক্ষী হয়েছেন। ২০২২ সালের ফিনালিসসিমা আর বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল করেছিলেন। আজ গোল না পেলেও লিওনেল মেসির অনুপস্থিতিতে দলের পাপেট মাস্টার হয়েছিলেন ডি মারিয়া।
অন্যদিকে এবারের আসরে মোটেও ভালো যায়নি লিওনেল মেসির। চোটের কারণে পুরো টুর্নামেন্টে তাকে সেরা ছন্দে দেখা যায়নি। অবসরের ঘোষণা না দিলেও অনুমেয় যে আগামী কোপায় আর দেখা নাও মিলতে পারে মেসির। এটিই তারও হয়তো শেষ কোপা আমেরিকা। তার আগেই সব চাওয়া পূরণ হয়ে গেছে দেশটি মহাতারকার, এমন ভাগ্য কয়জনেরই হয়।
খেলাধুলা সব খবর