বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় টেস্ট
১৬৪ রানে অলআউট বাংলাদেশ
সিভয়েস২৪ ডেস্ক
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৬৪ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। দুই উইকেটে দিন শুরু করা দলটি দ্বিতীয় দিন ৯৫ রান যোগ করতেই শেষ আট উইকেট হারায়। জবাবে প্রথম ইনিংসে এক উইকেটে ৭০ রান তুলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সে হিসেবে দ্বিতীয় দিন শেষে ৯৪ রানে পিছিয়ে আছে স্বাগতিকরা।
জ্যামাইকায়ও শুরু থেকে উত্তাপ ছড়ায় বাংলাদেশের পেসাররা। কিন্তু সাবধানতার সঙ্গেই খেলতে থাকেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও মিকাইল লুইস। বিনা উইকেটে ১৬ রান তুলে এই দুজন চা-বিরতিতে যান।বিরতির পর নাহিদের তোপ সামলাতে পারেননি লুইস। প্রথম টেস্টে অসাধারণ এক ইনিংস খেলা এই ওপেনার নাহিদের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে বল ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন। লুফে নিতে ভুল করেননি লিটন। ৪৭ বলে ১২ রানে ফিরে যান তিনি।
লুইসকে ফেরানোর পর উইকেটে বেশ দেখেশুনে খেলেন তিনে নামা কার্টি। আলগা বল ছেড়ে দিচ্ছিলেন দুজনই। এরমধ্যে একটি রিভিউও নষ্ট করে বাংলাদেশ। তাইজুলের দারুণ ডেলিভারির লাইনে খেলতে পারেননি ব্র্যাথওয়েট। তার ব্যাটের বাইরের কানা ঘেঁষে বেরিয়ে যায় বল। টিভি স্ক্রিনে দেখে মনে হচ্ছিল বল অবশ্যই ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষক লিটনের গ্লাভসে গেছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে রিভিউ নিয়ে মিরাজ বুঝলেন বল ব্যাট স্পর্শই করেনি।
রিভিউ নষ্টের পর ২৬ রানে ব্র্যাথওয়েটকে 'জীবন' দেন মিরাজ। তাইজুলের বলে ক্যারিবিয়ান অধিনায়কের ক্যাচ ছাড়েন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত নেতা। তাইজুলের বলে লেগে ঘুরানোর চেষ্টায় শর্ট এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ তুলে দেন ব্র্যাথওয়েট। মিরাজ লাফ মেরে বলে হাত ছোঁয়ালেও তা মুঠোয় নিতে পারেননি। ক্যাচটি কঠিন হলেও মিরাজের হাত ছোঁয়ায় বাংলাদেশের আফসোস বাড়িয়ে দেয়।
৩৩তম ওভারে প্রথমবার বল হাতে নেন মিরাজ। সেই ওভারে তার বলে সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করেন ক্যারিবিয়ান দলপতি। বলটি তার পায়ে লাগলে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা আবেদন করে, আউট দিয়ে দেন আম্পায়ার। যদিও রিভিউ নিয়ে দেখা যায় ইম্প্যাক্ট ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। আম্পায়ারও নিজের ভুল বুঝতে পারেন। ৩২ রানে থাকা অবস্থায় রিভিউ নিয়ে বাঁচেন ক্যারিবিয়ান দলপতি। এর একটু পরই খেলা শেষ হয়। ১১৫ বলে ৩৩ রান নিয়ে উইকেটে আছেন ব্র্যাথওয়েট। তার সঙ্গে তৃতীয় দিন শুরু করবেন ৬০ বলে ১৯ রান করা কার্টি।
এর আগে সকালের শুরুতে খেলতে নেমেই বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিটে ছোবল দেন শামার জোসেফ। মিডল অ্যান্ড অফ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন শাহাদাত হোসেন দিপু। ১২ রান নিয়ে দিন শুরু করা ডানহাতি ব্যাটার ফিরেছেন ২২ রানে। পাঁচে নেমে টিকতে পারলেন না লিটন দাসও। জেইডেন সিলসের অফ স্টাম্পের বাইরের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে প্রথম স্লিপে থাকা কাভেম হজের কাছে জমা হয়ে ফিরতে হয় মাত্র ১ রানে।
ব্যর্থ জাকের আলী অনিকও। বাংলাদেশের তরুণ ব্যাটারকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি শামার জোসেফ। ডানহাতি পেসারের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে উইকেটের পেছনে থাকা জশুয়া ডি সিলভাকে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।
পানি পান বিরতির পর প্রথম বলেই সাদমান ইসলামের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শামার জোসেফের বলে কট বিহাইন্ড হন আগের দিন দুবার ক্যাচ দেয়া এই ওপেনার। ১৩৭ বলে পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় সাদমান করেন ৬৪ রান।
বাকি সময়টা অবশ্য প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। কেটে যায় প্রথম সেশন। তবে দ্বিতীয় সেশনে আলজারি জোসেফর বাউন্সারে ক্যাচ তুলে দেন তাইজুল। জাস্টিন গ্রেভসের তা লুফে নেন অনায়সে। ফেরার আগে মিরাজের সঙ্গে ১১৬ বলে ৪১ রানের জুটি গড়েন তাইজুল। ৬৬ বলে একটি চারে ১৬ রান করেন তিনি। তাইজুল ফেরার পরই দেড়শ ছাড়ায় বাংলাদেশ।
এর পর মাত্র ৫ রানে শেষ ৩ উইকেট হারায় টাইগাররা দলীয় ১৫৯ রানে বিদায় নেন তাসকিন আহমেদ। সেই ওভারেই অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে পুল করেন মিরাজ। দৌড়ে এসে ক্যাচ লুফে নেন শামার। ৭৫ বলে ৩৬ রান করে বিদায় নেন মিরাজ। তারপর নাহিদ রানাকে বোল্ড করে বাংলাদেশের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন সিলস।
১০ মেডেনে ৫ রানে চার উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা বোলার সিলস। শামার নেন তিন উইকেট। দুটি উইকেট নেন রোচ, একটি উইকেট নেন জোসেফ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ১৬৪/১০ (৭১.৫ ওভার) (সাদমান ৬৪, মিরাজ ৩৬, শাহাদাত ২২, তাইজুল ১৬; সিলস ৪/৫, শামার ৩/৪৯ )
ওয়েস্ট ইন্ডিজ (প্রথম ইনিংস)- ৭০/১ (৩৭ ওভার) (ব্র্যাথওয়েট ৩৩*, কার্টি ১৯*, নাহিদ ১/২৮)