Cvoice24.com

অনলাইন নিলামে ব্যর্থতা ঘোচাতে চায় কাস্টমস

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:৩২, ৩ জুন ২০২৩
অনলাইন নিলামে ব্যর্থতা ঘোচাতে চায় কাস্টমস

ভোগান্তি ও জালিয়াতি রোধে আড়াই বছর আগে ই-অকশন সিস্টেম চালু করেছিল চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষ। ঢাকঢোল পিটিয়ে জমকালো অনুষ্ঠানে নানা স্বপ্ন দেখালেও সে স্বপ্ন এখনও অধরা। টুকটাক অনলাইন নিলামের আয়োজন করলেও এখনো নিলাম প্রক্রিয়া চলছে পুরনো রীতিতেই। তবে চলতি বছরেই নিলাম প্রক্রিয়াকে শতভাগ অনলাইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। 

২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর উদ্বোধন হয় ই-অকশন সিস্টেম। সে সময় সিস্টেমটি উদ্বোধন করতে এসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মাসুদ সাদিক বলেছিলেন, ‘এখন থেকে পণ্য নিলামের যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনেই সম্পন্ন হবে। এর ফলে যে কোনো স্থান থেকেই আগ্রহীরা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট উপস্থাপন করে নিলামে অংশ নিতে পারবেন। এতে একদিকে সময় বাঁচবে, অন্যদিকে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বন্ধ হবে জাল-জালিয়াতিও।‘ 

পুরনো রীতিতে নিলাম প্রক্রিয়ার ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বিডারদের (ক্রেতা)। নিলামে অংশ নিতে গেলেই একজন ক্রেতাকে বেধে দেয়া সময়সীমার মধ্যেই চট্টগ্রামের মাঝিরঘাট অথবা কাস্টমস হাউসের অকশন শেডে গিয়ে দরপত্র ও ক্যাটালগ সংগ্রহ করতে হয়।

অপরদিকে অনলাইন থেকে দরপত্র ফরম ডাউনলোড করার সুযোগ রয়েছে। সেখানেও ভোগান্তি। একজন বিডার (ক্রেতা) যতগুলো বিডে অংশ নিবেন ততগুলো দরপত্র ডাউনলোড করতে হবে। সে ফরমে হাতে-কলমে ক্যাটালগ ক্রমিক নম্বর, লট নম্বর লিখতে হয়। দরপত্রের সাথে নিলামে অংশগ্রহণকারীর ট্রেড লাইসেন্স, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন সনদ, টিআইএন সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও সংযুক্ত অন্যান্য দলিলাদির প্রতিটি পৃষ্ঠায় দরদাতার সীল, স্বাক্ষর থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে দরপত্র জমা দিতে বিডারকে যেতে হচ্ছে কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তার (প্রশাসন) কার্যালয়ে অথবা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে। 

সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর অনলাইন নিলাম চালু করে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। দুই বছর সাত মাসে মাত্র সাতবার অনলাইন নিলামের আয়োজন করা হয়। প্রথম অনলাইন নিলামটি হয় ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর। ওই বছর নীট ও কটন ফেব্রিক্স, প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার, স্ক্র্যাপ, খেঁজুর, আদা ও আইরন পাইপ দিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল অনলাইন নিলাম। ২০২১ সালে চারটি অনলাইন নিলামের আয়োজন করা হয়। ওই সময় বিপুল পরিমাণে পেঁয়াজ ও বিলাসবহুল গাড়ি ছাড়াও দুটি চেয়ার বিক্রি হয়। সবশেষ গতবছরের জুন মাসে ১০৮টি ও সেপ্টেম্বরে ৭৮টি গাড়ি অনলাইন নিলামে বিক্রির আয়োজন করে কাস্টমস। 

এদিকে চলতি বছরের পাঁচ মাসে মোট ছয়টি নিলামের আয়োজন করে কাস্টমস। এসব নিলামে কেমিক্যাল, ফুড স্টাফ, মটর পার্টস, আয়রন, টেক্সটাইল পণ্য, ফেব্রিক্স, গ্লাসওয়্যার, পেপার ও প্লাস্টিক পণ্য তোলা হয়। তবে সবগুলোই নিলামের আয়োজন করা হয়েছে প্রথাগত নিয়ম মেনে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিলামে অংশগ্রহণকারী এক ব্যবসায়ী বলেন, শতভাগ অনলাইন নিলামের ব্যবস্থা হলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ঝামেলা পোহাতে হবে না। পাশাপাশি বাসায় বসে পণ্য ও মূল্য দেখার সুযোগ তৈরি হবে। এতে করে একজন ক্রেতার ভোগান্তিও কমে যাবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার ব্যারিস্টার মো. বদরুজ্জামান মুন্সী সিভয়েসকে বলেন, আমরা ই-অকশন সিস্টেম বন্ধ করিনি। সেটা চালু আছে। তবে আমরা এ সিস্টেমটিকে আরো ডেভেলপ (উন্নতি) করতে চাই। সে লক্ষ্য নিয়ে আমাদের কাজ চলছে। পাশাপাশি আমাদের কর্মীদের দক্ষ করতে এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে। সবমিলিয়ে চলতি বছরের মধ্যে কাস্টমসের নিলাম পদ্ধতি শতভাগ অনলাইনের আওতায় চলে আসবে।
 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়