Cvoice24.com

চবিতে অনুষ্ঠিত হলো গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকাশনা মেলা

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:২৯, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
চবিতে অনুষ্ঠিত হলো গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকাশনা মেলা

চট্টগ্রাম বিভাগের গবেষকদের বিভিন্ন গবেষণা কার্যকর্মকে সবার সামনে উপস্থাপন ও গবেষণার সংস্কৃতিকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আয়োজিত হয়েছে ‘চট্টগ্রাম রিসার্চ ফেস্টিভ্যাল’ শীর্ষক গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রকাশনা মেলা।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র এবং চিটাগাং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ এন্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটির (সিইউআরএইচএস) উদ্যোগে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

দিনব্যাপী এ মেলায় অংশ নেয় চবির ৩১টি বিভাগ, ২৪টি ল্যাবরেটরি এবং চট্টগ্রাম বিভাগের আরও ২০টি প্রতিষ্ঠান। চবি ছাড়াও এতে অংশ নেয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বিসিএসআইআর, এটমিক এনার্জি কমিশন, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফি রিসার্চ ইন্সটিটিউট, বন গবেষণা ইন্সটিটিউট, চিটাগাং রিসার্চ ইন্সটিটিউট ফর চিল্ড্রেন সার্জারি, গাসটো রিসার্চ গ্রুপ।

চবি শিক্ষার্থী নুসরাত আফরিন ও সিলভিয়া নাজনীনের সঞ্চালনা এবং অধ্যাপক ড. তাজন কুমার চৌধুরীর সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, জামাল নজরুল ইসলামের সুযোগ্য কন্যা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি সাদাফ সাজ সিদ্দিকী, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নাসিম হাসান এবং গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর চৌধুরী। মূল আলোচক হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক, গবেষক ও বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ও গবেষণা মেলার সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. অঞ্জন কুমার চৌধুরী, ভূগোল বিভাগের শিক্ষক ও গবেষণা মেলার সদস্য সচিব অধ্যাপকড. অলক পাল, চিটাগং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডি সোসাইটির (সিইউআরএইচএস) মডারেটর ও গবেষণা মেলার পরিচালক অধ্যাপক ড. আদনান মান্নান, মেরিন সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ চৌধুরী, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সুমন গাঙ্গুলী এবং সিইউআরএইচএস’র সভাপতি মাহমুদ শরীফ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা না হলে, কোন দেশই এগিয়ে যেতে পারে না। আমরা স্বপ্ন দেখি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘায়িত হবে, আমাদের গবেষকরা যে গবেষণা করছে এসব ভালো জার্নালে প্রকাশিত হবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলে যাবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাল নজরুল ইসলাম স্যারের মতো মানুষ আলো ছড়িয়ে গেছেন। জামাল নজরুল স্যার যে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, তারই হাত ধরে আমরা স্বপ্নের পথে যেতে পারবো।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেনু কুমার দে বলেন, গবেষণা কার্যক্রম ছাড়া আমরা নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারবো না। জ্ঞানভিত্তিক চর্চা ও বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার পাশাপাশি বিভিন্ন গবেষণাভিত্তিক কার্যক্রম করতে হবে।

জামাল নজরুল ইসলাম কন্যা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি সাদাফ সাজ সিদ্দিকী বলেন, উনি (অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম) ৪০ বছর আগে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে, মৌলিক গবেষণায় চট্টগ্রাম থেকেই কিন্তু একটা বিপ্লব ঘটতে পারে। উনি বলতেন যে, বাংলাদেশে শুধু উন্নতিই হবে, যদি আমরা নিজেরা গবেষণা করি এবং সেই সুযোগ গড়ে তুলি।

মূল আলোচক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, জামাল নজরুল ইসলামের গৌরব ও গর্ব সব এই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় তাকে চিনতে পেরেছিল। গবেষণায় উন্নতির জন্য আমাদের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা প্রয়োজন। গবেষণার জন্য প্রচার প্রকাশনার চেয়ে দরকার বেশি বেশি গবেষণা কাজ। জ্ঞানবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের অগ্রগতি সম্ভব। গবেষণায় সৃষ্টিশীল মানুষের প্রয়োজন। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের সুযোগ দিলে তারা অনেক দূর যেতে পারে।

জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ও গবেষণা মেলার সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. অঞ্জন কুমার চৌধুরী বলেন, অধ্যাপক ইসলামকে স্মরণ করে তার যে ত্যাগ, সেই ত্যাগকে সম্মান দিতে চাই। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা জামাল নজরুল ইসলামের জন্মদিন উপলক্ষে ‘গবেষণা উৎসব দিন’ হিসেবে উদযাপন করতে চাই।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি শো— মেলায় বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ছিল শিশু কিশোরদের রোবট ও অন্যান্য উদ্ভাবন নিয়ে রোবটিক্স এ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন টিম দি টেক একাডেমীর ভার্চুয়াল রিয়েলিটি শো ও উদ্ভাবনা পরিবেশনা।

রিসার্চ এক্সিলেন্স এ্যাওয়ার্ড— গবেষণা মেলার শেষে সেরা গবেষক সম্মাননা, তরুণ গবেষক পুরস্কার, সেরা নারী গবেষক এওয়ার্ড, সেরা গবেষণা প্রজেক্ট, সর্বোচ্চ ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর গবেষণা, সেরা গবেষণা শিক্ষার্থী, সর্বোচ্চ বই প্রকাশক, সেরা উদ্ভাবকসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৪০ জনকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

হাইলাইটেড রিসার্চ টক— অধিবেশনে নিজেদের উদ্ভাবন ও গবেষণা উপস্থাপন করেন বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, প্রকৌশল, সমাজবিজ্ঞান, মানববিদ্যা, বাণিজ্য, পরিবেশ, সমুদ্রবিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট স্বনামধন্য আটজন গবেষক।

স্পটলাইট রিসার্চ সেশন— মঞ্চে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, বিসিএসআইআর, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফি রিসার্চ ইন্সটিটিউট এবং দি টেক একাডেমীর কার্যক্রম উপস্থাপন করা হয়।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়