চবিতে হলুদ দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির সভা বয়কট
চবি প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আওয়ামী-বামপন্থী শিক্ষকদের নীতিনির্ধারণী সংগঠন হলুদ দলের ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি’র ডাকা সাধারণ সভা বয়কট করেছেন ৩০ অধ্যাপক। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি, গঠনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন না করাসহ আটটি অভিযোগ উল্লেখ করে তাঁরা এ সভাকে ‘অবৈধ’ বলে অভিহিত করেছেন।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে হলুদ দলের সমর্থক বিশ্ববিদ্যালয়ের চব্বিশটি বিভাগের শিক্ষকের দেয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী সংগঠন হলুদ দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বর্তমান পরিচালনা কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এবং কতিপয় সদস্যের দলের গঠনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন না করে দীর্ঘদিন যাবত পরিচালনা কমিটির দায়িত্বকে ধরে রেখে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করা এবং ব্যক্তি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য দল পরিচালনা করে আসায় হলুদ দলের অস্তিত্ব আজ সংকটের মুখে এবং দলের গণতান্ত্রিক এবং উদারনৈতিক ঐতিহ্য আজ ভূলুণ্ঠিত।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, স্ট্যান্ডিং কমিটির কতিপয় সদস্য দলীয় গঠনতন্ত্রের কোন ধরনের তোয়াক্কা না করে ০৬/০৪/২০১৯ তারিখ থেকে দলকে জবরদখল করে কাজ করছে। স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৫ জন হওয়ার কথা থাকলেও অবসর ও ছুটি জনিত কারণে বর্তমানে ৫ জন সদস্য নেই। তাছাড়াও সম্প্রতি আরও দুইজন শিক্ষক স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছে। এছাড়াও কমিটিতে প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক ক্যাটেগরীতে কোন প্রতিনিধি নেই। ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ, ব্যবসা প্রশাসন ও বিজ্ঞান অনুষদের কোন প্রতিনিধি নেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন নেই। কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার, দেশের সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থা ও সমাজ সংস্কারে দিকনির্দেশনা সম্পর্কে উপেক্ষা করে যাচ্ছেন। হলুদ দলের বর্তমানে কোন আহ্বায়ক নাই। যিনি নিজেকে আহ্বায়ক বলে দাবি করছেন, তিনি দ্রুততম সময়ে দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠান করার জন্য সাময়িকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। এছাড়া দলকে এরকম অবৈধ জবরদখল থেকে মুক্ত করার জন্য এবং অনৈতিক অনুশীলন থেকে বের করে আনার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এবং হলুদ দলের আদর্শে বিশ্বাসী দুই শতাধিক শিক্ষক লিখিতভাবে স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্বাচন দেয়ার অনুরোধ করলেও এ তথাকথিত স্ট্যান্ডিং কমিটির অবৈধ সদস্য ও অবৈধ স্বঘোষিত আহবায়ক তাতে কোন ধরনের কণপাত করেননি।
তবে আটটি অভিযোগই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন হলুদ দলের আহ্বায়ক মো. সেকান্দর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘হলুদ দলের নির্বাচনের দাবি ওনারা জানিয়েছেন। নির্বাচনের প্রসেসিং চলছে। দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির মতামতের ভিত্তিতেই নির্বাচন হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী কিংবা বিভিন্ন জাতীয় দিবসে হলুদ দল সক্রিয় ছিল না, এটাও ভিত্তিহীন অভিযোগ। প্রত্যেক জাতীয় প্রোগ্রামে দলের ব্যানারে না হলেও আমাদের সরব উপস্থিতি ছিল।’
এর আগে, গত বছরের ১২ নভেম্বর পাঁচ বছর আগে নির্বাচিত হওয়া ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি’র নতুন নির্বাচন চেয়ে আহ্বায়ক বরাবর চিঠি দিয়েছেন হলুদ দল সমর্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১ জন শিক্ষক।