Cvoice24.com

চট্টগ্রামে আজ, বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪

সময় ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড

মজুরি কাঠামো নির্ধারণের আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহার নৌযান শ্রমিকদের

সিভয়েস প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:১৩, ২৮ নভেম্বর ২০২২
মজুরি কাঠামো নির্ধারণের আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহার নৌযান শ্রমিকদের

আগামী এক মাসের মধ্যে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করার আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে নৌযান শ্রমিকরা।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ লাইটার ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মো. নবী আলম সিভয়েসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, আমরা ১০ দফা দাবি দিয়েছিলাম। কোন দাবিই এখনো মেনে নেওয়া হয়নি। তবে আগামী এক মাসের মধ্যে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ হবে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। যতদিন মজুরি নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করা হবে না ততোদিন এক হাজার টনের জাহাজের শ্রমিকরা ১২শ টাকা এবং এক হাজার টনের বেশি জাহাজের শ্রমিকরা জনপ্রতি ১৫শ টাকা করে পাবে।

এর আগে আজ বিকালে ঢাকার বিজয়নগরে শ্রম ভবনে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে নৌযান মালিক ও শ্রমিকদের সংগঠনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মালিক শ্রমিকরা তাদের দাবি জানিয়েছেন। এসময় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান একমাসের মধ্যে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। এই একমাস শ্রমিকদের অন্তর্বতীকালীন ভাতা প্রদানের জন্য মালিকপক্ষকে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

গত শনিবার (২৬ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ন্যুনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণসহ ১০ দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করে নৌযান শ্রমিকরা। গত ১৫ নভেম্বর ১০ দফা দাবি নিয়ে এই অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়া হয়। ফলে বন্দরের বহির্নোঙরে রাখা বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। একইসঙ্গে মাঝিরঘাট ও সদরঘাট এলাকার ১৮টি বেসরকারি ঘাটেও লাইটার জাহাজে করে পণ্য খালাসের কাজ বন্ধ থাকে। তাছাড়া খুলনা, মোংলা, নোয়াপাড়া, পায়রা বন্দর এবং শীতলক্ষ্যা নদীতে প্রায় ১শ’ ঘাটে লোড-আনলোডের কাজে স্থবিরতা নেমে আসে।

শ্রমিকদের ১০ দফা দাবির মধ্যে ছিল- নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদানসহ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী অপরিণামদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের উপরে ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের লান্ডিং পাস প্রদানসহ ভারতীয় সীমানায় সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করে সকল লাইটারিং জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ-পরিবহন অধিদফতরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।

এর আগে, লাইটার জাহাজের শ্রমিকদের ওঠা–নামায় ব্যবহৃত চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল, সাঙ্গু নদের মুখ খনন করে লাইটার জাহাজের নিরাপদ পোতাশ্রয় করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত ১০ নভেম্বর ভোর ৬টা থেকে চট্টগ্রামে লাইটার জাহাজে পণ্য পরিবহনের কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল লাইটার জাহাজ শ্রমিকেরা। পরে পতেঙ্গায় লাইটার জাহাজের শ্রমিকদের ওঠা–নামায় ব্যবহৃত চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু ও শ্রমিকদের কাছ থেকে ঘাটে টাকা না নেয়ার সিদ্ধান্ত আসায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফিরে লাইটার জাহাজ শ্রমিকরা।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়