সচিবের বিরুদ্ধে তদন্তে নামছে মন্ত্রণালয়

সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:১২, ১ এপ্রিল ২০২৪
সচিবের বিরুদ্ধে তদন্তে নামছে মন্ত্রণালয়

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের বর্তমান সচিব ও সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে পরীক্ষার ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সোমবার (১ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের শৃঙ্খলা বিষয়ক শাখার উপ-সচিব মো. শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদকে এ চিঠি পাঠানো হয়। 

ওই চিঠিতে বলা হয়, 'চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের বর্তমান সচিব ও সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে উপযুক্ত কর্মকর্তা দ্বারা আগামী ১৫ (পনেরো) কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তপূর্বক সু-স্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।'

এদিকে, বোর্ডসচিব অধ্যাপক নারায়ণণ চন্দ্র নাথ বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকায় নিরপেক্ষ তদন্ত নিয়ে সন্দিহান বোর্ড সংশ্লিষ্টরা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘বারবার তার বিরুদ্ধে ফলাফল কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। কোনোবারেই তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় না। বরং উল্টো প্রমোশন দেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তদন্তে যেতে বাধ্য হলো। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে— যার বিরুদ্ধে তদন্ত তিনি প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পদে আছেন। তাকে পদে আসীন রেখে তদন্ত কতটুকু নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে তাই দেখার বিষয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এর আগেও তিনি নিজের সন্তানকে বিধিভঙ্গ করে কলেজে ভর্তি, ভুল সনদ ছাপিয়ে বোর্ডের ভাবমূর্তি এবং আর্থিক ক্ষতি, ফলাফল প্রকাশের পর জেএসসির ৩৪ শিক্ষার্থীর রোল নম্বর ক্রিয়েট করে প্রবেশ করার অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের প্রমাণ থাকা স্বত্বেও তিনি প্রত্যেকবারেই পার পেয়ে গেছেন। এটাই দুঃখজনক বিষয়।’

এ বিষয়ে জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ থেকে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও বোর্ড সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলে। প্রভাব খাটিয়ে ছেলেকে পাশ করিয়েছেন, এমন সন্দেহে উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন জানিয়েছেন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। সে সময় রহস্য উন্মোচনে তদন্ত এবং প্রভাবমুক্ত পুনঃনিরীক্ষণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষাবিদেরা। কিন্তু সেটিও একসময় ধামাচাপা পড়ে যায়। পুনঃনিরীক্ষণ থামাতে গত ৫ নভেম্বর নগরের পাঁচলাইশ থানায় জিডি করেন বোর্ড সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের স্ত্রী বনশ্রী নাথ। 

পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক আব্দুল আলীম ও অধ্যাপক ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে প্রতারণা, কম্পিউটারে বেআইনি প্রবেশসহ গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন নারায়ণ চন্দ্র দেবনাথের স্ত্রী বনশ্রী নাথ। ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়