চট্টগ্রামে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সাংবাদিকতা কর্মশালা

সিভয়েস২৪ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৫১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
চট্টগ্রামে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সাংবাদিকতা কর্মশালা

ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটির (বিআইজিআরএস) সহযোগিতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এবং জনস্বাস্থ্য বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক সংস্থা ভাইটাল স্ট্রাটেজিস-এর যৌথ উদ্যোগে দিনব্যাপী সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সাংবাদিকতা কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) নগরের একটি অভিজাত রেসন্টুরেন্টে আয়োজিত এ কর্মশালায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের ১৯ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। এ কর্মশালায় সড়ক নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ হিসাবে গতি এবং দুর্ঘটনার তথ্য-উপাত্তের প্রয়োজনীয়তা ও সল্যুশন জার্নালিজমের উপর আলোকপাত করা হয়।

কর্মশালার শুরুতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার (অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ) ড. সৈয়দ মাহফুজুল হক বিশ্বব্যাপী সড়ক নিরাপত্তার পরিস্থিতি তুলে ধরেন। জন্স হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট-জেএইচআইআইআরইউয়ের গবেষণা সহযোগী শিরিন ওয়াধানিয়া ও সহকারী বিজ্ঞানী জাবির হোসেন রোড ক্র্যাশর যথাযথ তথ্য-উপাত্তের উৎস ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।

এছাড়াও ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউটের (ডব্লিউআরআই) কনসালটেন্ট স্থপতি ফারজানা ইসলাম তমা সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সঠিক সড়ক ডিজাইনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিআইজিআরএস-চট্টগ্রামের সার্ভিল্যান্স কো-অর্ডিনেটর কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ চট্টগ্রাম রোড সেফটি রিপোর্ট ২০২০ থেকে ২০২২ এর রোড ক্র্যাশর তথ্য তুলে ধরেন। একইসাথে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে নিয়োজিত বৈশ্বিক সংস্থা ভাইটাল স্ট্রাটেজিস-এর টেকনিক্যাল এডভাইজর আমিনুল ইসলাম সুজন ও কমিউনিকেশন অফিসার মো. মাহামুদুল হাসান সল্যুশন জার্নালিজম, গণমাধ্যমের দুর্ঘটনার সংবাদ প্রচারের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। এর বাইরে ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের সার্ভেইল্যান্স বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর ইজাকুয়েল দন্তেস ও সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার মিরিক পালা সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নীতিগত উদ্যোগ গ্রহণে তথ্যের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন।

কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চসিকের প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন। তিনি চট্টগ্রাম শহরে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রোড ক্র্যাশ হ্রাস ও প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি সড়ক নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জনসচেতনতামূলক প্রচারণা এবং ট্রাফিক আইন প্রয়োগের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। ভবিষ্যতে সড়ক নিরাপত্তাকে বিবেচনায় নিয়ে চট্টগ্রামে সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন।

সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ আহমেদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান এবং ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস-সিঙ্গাপুর অফিসের প্রোগ্রাম অফিসার সুগান্থি সারাভানান। এতে সভাপতিত্ব করেন চসিকের প্রধান প্রকৌশলী শাহিন উল ইসলাম চৌধুরী, এবং সঞ্চালনা করেন বিআইজিআরএস-চট্টগ্রামের ইনিশিয়েটিভ কোঅর্ডিনেটর জনাব লাবিব তাজওয়ান উৎসব। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি সাংবাদিকদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন।

প্রসঙ্গত, রোড ট্রাফিক ইনজুরি (আরটিআই) বিশ্বে মৃত্যু এবং অক্ষমতার একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ১২ লাখ মানুষ রোড ক্র্যাশের কারণে প্রাণ হারায়। অন্যদিকে, চসিক ও সিএমপি থেকে যৌথভাবে প্রকাশিত চট্টগ্রাম রোড সেফটি রিপোর্ট ২০২০-২২ এ দেখা গেছে, চট্টগ্রামে ২০২০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ২৬৩ জন রোড ক্র্যাশে প্রাণ হারিয়েছেন। একই সাথে প্রতিবেদনটিতে শহরের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ১০টি সড়ক করিডোর এবং স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়