Cvoice24.com

‘বালা-মুসিবত’ থেকে রেহাই চান ড. ইউনূস

সিভয়েস২৪ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:০৮, ২ এপ্রিল ২০২৪
‘বালা-মুসিবত’ থেকে রেহাই চান ড. ইউনূস

‘এখন রমজানের দিন। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন, বালা-মুসিবত থেকে আমরা বাঁচি। আমাদের ওপর অনেক বালা-মুসিবত। আমার ওপর ব্যক্তিগত বালা-মুসিবত, সহকর্মীদের ওপর এবং দেশের ওপরেও। এর থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা দোয়া করি।’

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে হাজিরা দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সামনে ঈদ আসছে, খুশির দিন। আমরা যেন সত্যি সত্যি খুশির ঈদ উদযাপন করতে পারি। তার সঙ্গে পহেলা বৈশাখ। আরও খুশি, সবকিছু এক সঙ্গে। এর মধ্যে বালা-মুসিবত থেকে কিভাবে উদ্ধার পাবো— সবাই মিলে চিন্তা-ভাবনা করি। এককভাবে আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত, তেমনই বালা-মুসিবতে সমষ্টিগতভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত। কাজেই এগুলো থেকে অতিক্রম করতে না পারলে আমাদের মুক্তি নেই, রেহাই নেই। মানুষের রেহাই পাওয়ার রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে।’

বালা-মুসিবতের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনূস বলেন, ‘বালা-মুসিবত হচ্ছে মানুষ যেভাবে বাঁচতে চায়, থাকতে চায় সেভাবে থাকতে পারছে না। আইনের শাসন বলে যে জিনিস, সেটা আমরা পাচ্ছি না কোথাও। আমরা এদেশের অংশীদার, আমরা সবাই মিলেই এদেশ। আমার অনুরোধ, মাহে রমজানের মাসে নিজেদের দিকে তাকাই, নিজ নিজ ভূমিকা পালন করি। আমরা যেটা করতে চাচ্ছিলাম, সেটা করতে পারছি কিনা। না করতে পারলে কিভাবে আমরা প্রতিবাদ জানাবো, কিভাবে কথাগুলো শোনাতে পারবো, শোনাবার পথ আমরা বের করবো। পথ আমাদের বের করতেই হবে। তাছাড়া কোনও উপায় নেই। দেশে আইনের শাসন নেই। সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। দেশ বালামুসিবতের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির পথ খুজে বের করতে হবে।’

ড. ইউনূস আরো বলেন, ‘আমরা নিজের মনে কাজ করে যাই, করে যাচ্ছিলাম। কোনও বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নিয়ে কাজ করি না। কতগুলো অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করি, সত্য নিয়ে কাজ করি। দেশ-বিদেশের মানুষ বিশ্বাস করছে, যে কারণে তারা উৎসাহিত। মনে হয়েছে এটা মানুষের মঙ্গলের জন্য। সেজন্য দেশ-বিদেশের নেতারা এটা জানতে চায়, বুঝতে চায়। নিজ দেশে প্রয়োগ করতে চায়। এজন্য নানা দেশে যাই, যেতে হয়। নিজের ফূর্তির জন্য যাওয়া তো না, এটা তাদের নেহায়েত আগ্রহে। আমার মাঝে মাঝে দুঃখ হয়, সারা দুনিয়া বাংলাদেশের কাছ থেকে শিখতে চায়। আমাদের গৌরববোধ করতে হয়। তা না করে আমরা এমন কাজ করছি— আমরা যেন পাপের কাজ করে ফেলেছি। এমন অনুভূতি হওয়ার তো কোনও কারণ ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, দেশের মানুষ আনন্দ পাক। জাতি হিসেবে গর্ব করতে পারি, সারা দুনিয়ার সামনে। এমন সব জিনিস নিয়ে আসছি, তারা (বাইরের দেশ) আমাদের কাছ থেকে জানার জন্য, বুঝার জন্য, তাদের দেশে করার জন্য সেটা উন্নত দেশ হোক বা অনুন্নত দেশ হোক, কোনও পার্থক্য নেই। সবাই চায় আমাদের কাছ থেকে শিখতে। যে শিখতে চায়, আমরা তো তাদের বাধ্য করছি না। উৎসাহ নিয়ে তারা আসছে। সে সুযোগটা আমরা দেবো না কেন। দুনিয়ার এই মাথা থেকে ওই মাথা পর্যন্ত আমাদের কাছ থেকে শিখতে চায়।’

এই নোবেলজয়ী বলেন, ‘বর্তমানে আমরা যেভাবে অগ্রসর হচ্ছি, সারা দুনিয়া অগ্রসর হচ্ছে— তাতে দুনিয়া সর্বশ্বান্ত হয়ে যাবে, শেষ হয়ে যাবে, বিনষ্ট হয়ে যাবে। সেটা থেকে উদ্ধারের একটা রাস্তা সৃষ্টি করেছি। সেটা নিয়ে মানুষের আগ্রহ। তারা বিশ্বাস করছে, এ রাস্তায় করলে সারা দুনিয়া উদ্ধার পাবে। তবে আমরা পদে পদে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছি।’

এর আগে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ করেন আদালত। একই সঙ্গে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত নম্বর-৪ এ বিচারের জন্য বদলির আদেশ দেন। দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালত এই আদেশ দেন। আগামী ২ মে মামলাটির পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য তারিখ ধার্য করেছেন।  

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়